বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী নভেল করোনাভাইরাসে ‘আক্রান্ত নন’

হাসপাতালে ভর্তি বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হননি বলে জানিয়েছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান-আইইডিসিআর।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Feb 2020, 07:58 AM
Updated : 27 Feb 2020, 12:05 PM

মন্ত্রীর অসুস্থতা নিয়ে গুঞ্জনের প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার আইইডিসিআরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ বিষয়ে একটি ব্যাখ্যা দেন ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।

তিনি বলেন, “বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত নন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে আমরা জানতে পেরেছি, উনি অন্য অসুস্থতা নিয়ে সেখানে গেছেন।”

সেই অসুস্থতার ধরন  জানতে চাইলে অধ্যাপক ফ্লোরা বলেন, “২২৯-ই নামের যে ভাইরাসের কথা বলা হচ্ছে সেটা একটি সাধারণ সর্দি জ্বরের ভাইরাস, যেটা আমাদের দেশে সব সময় আছে। আমাদের দেশে যে সাধারণ সর্দি জ্বর হয়, যেটাকে আমরা কমন ফ্লু বা কমন কোল্ড বলি, এটা সেই জাতীয় ভাইরাস।

এর জন্য আলাদা করে কোনো চিকিৎসা বা আইসোলেশনের ব্যবস্থা করার প্রয়োজন নেই জানিয়ে তিনি বলেন, “এটা নিয়ে আতঙ্কিত বা বিভ্রান্ত হওয়ারও কিছু নেই।”

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রাণলয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা সৈকত হালদার জানান, বুধবার বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের কেবিন ব্লকে ভর্তি হয়েছেন মন্ত্রী। এর আগে দুদিন তিনি ঢাকার বিআরবি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।   

“উনি এখন সুস্থ। আজকেও হাসপাতাল থেকে আমার সঙ্গে কথা হয়েছে। বড় কোনো সমস্যা তো হয়নি।”

এর আগে জানুয়ারি মাসেও শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা নিয়ে সিঙ্গাপুরে গিয়ে চিকিৎসা করিয়ে আসেন গোলাম দস্তগীর গাজী। সে সময় তার দপ্তর থেকে বলা হয়েছিল, মন্ত্রী নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন।

আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এ এস এম আলমগীর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত নন। করোনাভাইরাসের সাতটি ধরণের একটিতে তিনি আক্রান্ত, যেটাকে বলে ২২৯-ই। এটা কমন কোল্ড, সবারই হয়।”

‘সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা খবর ছড়ায়’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও পরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রীর নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার গুঞ্জন নিয়ে কথা বলেন।

তিনি বলেন, “সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা খবর ছড়ায়, কোনটা সঠিক কোনটা বেঠিক এটি জানার অপেক্ষা করতে হবে। বিষয়টি পুরোপুরিভাবে জানার আগে মন্তব্য করা ঠিক হবে না।”

চীন থেকে ছড়িয়ে পড়া নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাগে গত দুই মাসে অন্তত ২ হাজার ৮০০ মানুষের প্রাণ গেছে। এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে অ্যান্টার্কটিকা ছাড়া সব মহাদেশে, আক্রান্তের সংখ্যা ৮১ হাজার ৭০০ ছাড়িয়ে গেছে।

আইইডিসিআর বলে আসছে, বাংলাদেশে এ পর্যন্ত কারও মধ্যে প্রাণঘাতী এ ভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়েনি। তবে সিঙ্গাপুরে প্রবাসী পাঁচ বাংলাদেশি এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে একজন এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।  

ওবায়দুল কাদের বলেন, “বাংলাদেশের এখন সর্বোচ্চ সতর্কতা প্রয়োজন। সরকার প্রধান খুব সিরিয়াসলি বিষয়টি দেখছেন এবং সতর্কতা পালনের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন। বিষয়টি আরো সতর্কভাবে মোকাবিলার জন্য বিভিন্নভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে প্রস্ততির কোনো ঘাটতি নেই।”