ইস্কাটনে ভবনে আগুন, শিশুসহ নিহত ৩

রাজধানীর ইস্কাটনের একটি ভবনে অগ্নিকাণ্ডে এক শিশুসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে; দগ্ধ ও ধোঁয়ায় অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও পাঁচজন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Feb 2020, 02:25 AM
Updated : 27 Feb 2020, 07:19 AM

ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মকর্তা এরশাদ হোসাইন জানান, বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে দিলু রোডের একটি পাঁচতলা ভবনের গ্যারেজে আগুনের সূচনা হয়।

খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের নয়টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আধা ঘণ্টার চেষ্টায় ৫টা ৬ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

এরশাদ হোসাইন বলেন, আগুন নেভানোর পর উদ্ধারকর্মীরা ওই ভবন থেকে এক শিশুসহ তিনজনের মৃতদেহ উদ্ধার করেন।

একজন পুরুষের মৃতদেহ পাওয়া যায় গ্যারেজে। একটি শিশুসহ দুজনের মৃতদেহ ছিল তিনতলার সিঁড়িতে।”

নিচতলায় যার মৃতদেহ পাওয়া গেছে, তার নাম আব্দুল কাদের লিটন, বয়স ৪০ বছর।

তার শ্যালক জহির আলম ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে সাংবাদিকদের বলেন, ওই ভবনের দোতলায় 'ক্লাসিক ফ্যাশন ইন্টারন্যাশনাল' নামে একটা বায়িং হাউজে চাকরি করতেন লিটন। নিচতলায় গ্যারেজের পাশে একটি কক্ষে তিনি থাকতেন।

বাকি দুজনের মধ্যে শিশুটি ওই ভবনের তৃতীয় তলার বাসিন্দা শহিদুল কিরমানী রনি ও জান্নাতুল ফেরদৌস দম্পতির সন্তান এবিএম রুশদী বলে ধারণা করছেন স্বজনরা।

জান্নাতুল ফেরদৌসের ভাই শাহাদাত হোসেন বিপ্লব বলেন, “বাচ্চাটার শরীর এতটাই পুড়ে গেছে যে চেহারা বোঝা যাচ্ছে না। কিন্তু আমার ভাগ্নেকেও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।”

৩৯ বছর বয়সী রনি এবং ৩৪ বছর বয়সী জান্নাতও এ ঘটনায় দগ্ধ হয়েছেন। তাদের ভর্তি করা হয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে।

মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে জানান, রনির শরীরের ৪৩ শতাংশ এবং জান্নাতের ৯৫ শতাংশ আগুনে পুড়ে গেছে।

জান্নাতের ভাই বিপ্লব বলেন, “আমি আহত অন্য একজনের সঙ্গে কথা বলতে পেরেছি। উনি বলেছেন, আগুন লাগার পর রনিরা তিনতলা থেকে বের হওয়ার সময় রুশদী ওদের হাত থেকে ছিঁটকে পড়ে।”

অন্য আরেকটি মৃতদেহ শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি জানিয়ে হাতিরঝিল থানা পুলিশ বলছে, ওই মৃতদেহটি পুরুষের না নারীর, তাও বাহ্যিকভাবে দেখে বোঝা কঠিন।

ধোঁয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়া  সুমাইয়া আক্তার (৩০), মাহাদি (৯) ও মাহমুদুল হাসান (৯ মাস) নামে তিনজনকে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তারা ওই ভবনের পঞ্চম তলার বাসিন্দা। তারা শঙ্কামুক্ত বলে বাচ্চু মিয়া জানিয়েছেন।
দগ্ধ রনির বাবা একেএম শহিদুল্লাহ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তার ছেলে পুলিশ প্লাজায় ভিআইভিপি এস্টেট ম্যানেজমেন্ট নামে একটি কোম্পানির ফাইন্যান্স ম্যানেজার। আর পুত্রবধূ জান্নাত বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের অর্থ বিভাগে চাকরি করেন।
রনিদের গ্রামের বাড়ি নরসিংদীর শিবপুরের ইটনায়। তার বাবা দৈনিক কালেরকণ্ঠের সিনিয়র প্রোডাকশন ম্যানেজার। বাসায় আগুন লেগে ছেলে-ছেলে বউয়ের দগ্ধ হওয়ার খবর পেয়ে তিনি হাসপাতালে ছুঁটে আসেন।
ওই বাড়ির গ্যারেজে থাকা পাঁচটি গাড়ি আগুনে পুড়ে গেছে। তবে কীভাবে সেখানে আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেননি ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা।