অস্ত্র মামলায় জি কে শামীমের বিচার শুরু

বাদী র‌্যাব কর্মকর্তার সাক্ষ্য গ্রহণের মধ্য দিয়ে অস্ত্র আইনের মামলায় বিতর্কিত ঠিকাদার গোলাম কিবরিয়া শামীমের বিচার শুরু হয়েছে।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Feb 2020, 05:52 PM
Updated : 26 Feb 2020, 05:52 PM

ঢাকার মহানগর চতুর্থ বিশেষ ট্রাইবুনালের বিচারক রবিউল আলমের আদালতে বুধবার সাক্ষ্য দেন র‌্যাবের ডিএডি মিজানুর রহমান।

এই মামলায় জি কে শামীমের সঙ্গে তার সাত দেহরক্ষীও আসামি। তারা হলেন- দেলোয়ার হোসেন, মুরাদ হোসেন, জাহিদুল ইসলাম, সহিদুল ইসলাম, কামাল হোসেন, সামসাদ হোসেন ও আমিনুল ইসলাম।

ক্যাসিনোকাণ্ডে যারা গ্রেপ্তার হয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে যেসব মামলা হয়েছে, তার মধ্যে এই প্রথম কোনো মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হল বলে জানিয়েছেন ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের অন্যতম কৌঁসুলি সালাউদ্দিন হাওলাদার।

মিজানুর সাক্ষ্য দেওয়ার পর তাকে জেরা করেন দেহরক্ষীদের আইনজীবী ফারুক আহাম্মাদ। জিকে শামীমের আইনজীবী জেরা শুরু করলেও তা বুধবার শেষ হয়নি। মামলাটিতে আগামী ৩০ মার্চ পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক করেছেন বিচারক।

জি কে শামীমসহ আটজনকে সকাল সোয়া ১১টায় আদালত ভবনের হাজত থেকে ওই ভবনের দোতলায় ঢাকার মহানগর চতুর্থ বিশেষ ট্রাইবুনালে হাজির করা হয়।

প্রায় পৌনে দুই ঘণ্টা সাক্ষ্যগ্রহণ চলার সময় কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা জি কে শামীমকে তার স্বজনদের সঙ্গে কথা বলতেও দেখা যায়।

ফারুক আহাম্মাদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আসামিদের জামিন চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বিচারক তা নাকচ করেন।

ক্যাসিনোবিরোধী অভিযোগের মধ্যে গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর গুলশানের নিকেতনে শামীমের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালায় র‌্যাব। ওই ভবন থেকে নগদ প্রায় দুই কোটি টাকা, পৌনে ২০০ কোটি টাকার এফডিআর, আটটি আগ্নেয়াস্ত্র ও মদ পাওয়ার কথা জানানো হয় অভিযান শেষে।

তখনই শামীম ও তার সাত দেহরক্ষীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন তাদের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় তিনটি মামলা করে র‌্যাব। এর মধ্যে অস্ত্র ও মুদ্রা পাচার মামলায় সবাইকে আসামি করা হলেও মাদক আইনের মামলায় শুধু শামীমকে আসামি দেখানো হয়। প্রত্যেক মামলাতেই তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

মামলা হওয়ার এক মাসের মাথায় ২৬ অক্টোবর অস্ত্র আইনের মামলায় শামীম ও তার দেহরক্ষীদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র‌্যাব-১ এর উপ-পরিদর্শক শেখর চন্দ্র মল্লিক।

সেখানে বলা হয়, জি কে শামীম একজন চিহ্নিত ‘চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ, অবৈধ মাদক এবং জুয়ার ব্যবসায়ী’ হিসেবে পরিচিত। তার অস্ত্রের লাইসেন্স থাকলেও তিনি শর্ত ভঙ্গ করে তা অবৈধ কাজে ব্যবহার করে আসছিলেন।

তার দেহরক্ষীদের উচ্চ বেতনভোগী ‘দুষ্কর্মের সহযোগী’ হিসেবে বর্ণনা করে অভিযোগপত্রে বলা হয়, “তারা অস্ত্রের লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করে প্রকাশ্যে অস্ত্রশস্ত্র বহন ও প্রদর্শন করেছেন। এর মাধ্যমে জনমনে ভীতি সৃষ্টি করে বিভিন্ন বড় বড় টেন্ডারবাজি, মাদক ব্যবসাসহ স্থানীয় বাস টার্মিনাল ও গরুর হাট-বাজারে চাঁদাবাজি করে আসছিলেন।”

যে আটটি অস্ত্র পাওয়া গিয়েছিল, তার মধ্যে একটি ছিল শামীমের নামে লাইসেন্স করা পিস্তল। বাকি সাতটি তার সাতজন দেহরক্ষীর ব্যবহারের শটগান, যেগুলো তাদের নামেই লাইসেন্স করা ছিল।