মঙ্গলবার দুপুরে ধানমণ্ডিতে সংস্থার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তদন্তের সারসংক্ষেপ তুলে ধরা হয়।
তদন্ত সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান খান বলেন, মোট ছয় আসামির বিরুদ্ধে তদন্ত হয়েছে। এর মধ্যে তদন্তের সময় গ্রেপ্তার হয়ে মারা গেছেন এক আসামি। দুইজন পলাতক, একজন গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। আর বাকি দুইজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি না হওয়ায় তাদের নাম-ঠিকানা, পরিচিতি প্রকাশ করা হচ্ছে না।
তিনি বলেন, আসামিদের মধ্যে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী থানার বাসিন্দা মোতাহার উদ্দিন সিকদার (৬৫)। গ্রেপ্তারের পর গত বছরের ২৬ নভেম্বর মারা গেছেন এবিএম রফিকুল আলম ওরফে রফিক সিকদার।
আর ইনায়েত হোসেন মিয়া ওরফে ইনায়েত মোল্লা (৬৫) ও নিজামুল হক মিয়া ওরফে লুৎফর রহমান ওরফে লুথু মোল্লার (৬৮) বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পারোয়ানা থাকলেও তাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি, তারা পলাতক।
আসামিদের পরিচিতি তুলে ধরে হান্নান খান বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের সময় আসামি মোতাহার উদ্দিন সিকদার মুসলীম লীগের সমর্থক ছিলেন। তিনি রাজাকার বাহিনীর সদস্য ছিলেন। পরবর্তীতে কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে তার সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি।
“যে আসামি মারা গেছেন তিনিও মুসলীম লীগের সমর্থক এবং রাজাকার বাহিনীর সদস্য ছিলেন। তবে মো. ইনায়েত হোসেন মিয়া বর্তমানে কাশিয়ানী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। আর নিজামুল হক মিয়া লুথু মোল্লাও আওয়ামী লীগের সমর্থক। একাত্তরে এরা দুজনই মুসলীম লীগ করতেন এবং রাজাকার বাহিনীর সদস্য ছিলেন।”
সংবাদ সম্মেলনে তদন্ত সংস্থার জ্যেষ্ঠ সমন্বয়ক সানাউল হক বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, আটক, অপহরণ, নির্যাতন, হত্যা ও লাশ গুমের মত অপরাধের চারটি অভিযোগ আনা হয়েছে। চার খণ্ডের মূল প্রতিবেদনটি ৩৯৭ পৃষ্ঠার।
১৯৭১ সালে আসামিরা জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে কাশিয়ানী এলাকার বাহিরবাগ গ্রাম, রামদিয়া পোস্ট অফিস, সিতারামপুর গ্রাম ও রামদিয়া বাজার ও বাজার সংলগ্ন অধ্যক্ষ আয়ুবুর রহমানের বাড়িতে এসব অপরাধ করেন।
এ মামলায় দুইজন তদন্ত কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে বলে জানান সানাউল হক।
তদন্ত কর্মকর্তা মো. নূরুল ইসলাম জানান, শিগগিরই তদন্ত প্রতিবেদনটি প্রসিকিউশনে জমা দেওয়া হবে। এটি তদন্ত সংস্থার ৭৭তম তদন্ত প্রতিবেদন।