বিসমিল্লাহর চেয়ারম্যান-এমডিসহ সাতজনকে গ্রেপ্তারে এক সপ্তাহ

অর্থ পাচারের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিসমিল্লাহ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) খাজা সোলেমান আনোয়ার চৌধুরী ও তার স্ত্রী গ্রুপের চেয়ারম্যান নওরিন হাসিবসহ সাত পলাতক আসামিকে এক সপ্তাহের মধ্যে গ্রেপ্তার করে বিচারিক আদালতে সোপর্দের নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Feb 2020, 10:07 AM
Updated : 25 Feb 2020, 10:59 AM

আসামিরা পালিয়ে দেশ ছেড়ে গেলে তাদের ধরতে আন্তর্জাতিক অপরাধ পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড অ্যালার্ট জারিও করতে বলেছে আদালত।

পুলিশের মহাপরিদর্শক, র‌্যাবের মহাপরিচালক, ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনারকে এ নির্দেশ দিয়ে আগামী ৫ এপ্রিল এ বিষয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন জানাতে বলা হয়েছে।

অর্থ পাচার মামলায় দণ্ডিত জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তা এস এম শোয়েব-উল-কবীরের জামিন আবেদনের শুনানির পর বিচারপতি  মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের হাই কোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এ আদেশ দেয়।

আদালতে আসামি পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এসএম শাহজাহান। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী হাসান এসএম আজিম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।

২০১৮ সালের ১০ সেপ্টেম্বর অর্থ পাচারের এক মামলায় খাজা সোলেমান ও নওরিন হাসিবসহ নয়জনকে দশ বছর করে কারাদণ্ড দেন ঢাকার ১০ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. আতাবুল্লাহ।

সব আসামি মামলার শুরু থেকে পলাতক ছিলেন।

কারাদণ্ডের পাশাপাশি পাচার করা ১৫ কোটি ৩৩ লাখ ৬১ হাজার ৬৮৬ টাকার দ্বিগুণ পরিমাণ অর্থ আসামিদের জরিমানাও করে আদালত।

ওই অর্থ ৬০ দিনের মধ্যে তাদের রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিতে বলা হয়।

এ মামলায় দণ্ডিত অন্যরা হলেন- বিসমিল্লাহ গ্রুপের পরিচালক খাজা সোলেমানের বাবা সফিকুল আনোয়ার চৌধুরী, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক আকবর আজিজ মুতাক্কি, মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আবুল হোসেন চৌধুরী, ব্যবস্থাপক রিয়াজউদ্দিন আহম্মেদ, নেটওয়ার্ক ফ্রেইট সিস্টেম লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. আক্তার হোসেন এবং জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তা মোস্তাক আহমদ খান ও এস এম শোয়েব-উল-কবীর।

হাই কোর্টের আদেশের পর দুদক আইনজীবী হাসান এম এস আজিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এ মামলার বিচার শুরু হওয়ার আগে আসামি জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তা এস এম শোয়েব-উল-কবীর হাই কোর্ট থেকে আগাম জামিন নেন। জামিনের শর্ত অনুযায়ী পরবর্তীতে তিনি বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করেননি। রায়ের পর নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাকে জেলে পাঠায়। এরপর বিভিন্ন সময় তিনি জামিন আবেদন করলেও আদালত তাকে জামিন দেননি।

“এর মধ্যে রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের পাশাপাশি তিনি জামিন আবেদন করেন। সেই জামিন আবেদনটির শুনানির পরই আদালত বাকি পলাতক আসামিদের এক সপ্তাহের মধ্যে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন। আসামিরা পালিয়ে বিদেশ চলে গিয়ে থাকলে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড অ্যালার্ট জারি করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

জামিন আবেদনটি নথিভুক্ত করে আদালত এ আদেশ দিয়েছে বলে জানান দুদকের এ আইনজীবী।

এক হাজার ২০০ কোটি টাকা ঋণ জালিয়াতি, মুদ্রা পাচার ও দুর্নীতির অভিযোগে ২০১৩ সালের ৩ নভেম্বর বিসমিল্লাহ গ্রুপের চেয়ারম্যান নওরিন হাসিব, ব্যবস্থাপনা পরিচালক খাজা সোলায়মান চৌধুরীসহ ৫৪ জনের বিরুদ্ধে এক ডজন মামলা করে দুদক।

দুদক পরিচালক ইকবাল হোসেন রাজধানীর রমনা, মতিঝিল ও নিউ মার্কেট থানায় এসব মামলা করেছিলেন। তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের বিভিন্ন সময়ে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।

তবে বিসমিল্লাহ গ্রুপের বিরুদ্ধে করা অনেক মামলার মধ্যে অর্থ পাচারের মামলার এ রায়টিই প্রথম।

২০১৩ সালের ৩ নভেম্বর নিউ মার্কেট থানায় দায়ের করা এ মামলায় ১৫ কোটি ৩৩ লাখ টাকা পাচারের অভিযোগ আনা হয় আসামিদের বিরুদ্ধে।