ডিজিটালাইজড হতে কেবল অপারেটরদের আরও সময়

বেঁধে দেওয়া সময়ের প্রায় তিন মাস পর কেবল টেলিভিশন নেটওয়ার্কের ডিজিটালাইজেশনে ব্যর্থ ঢাকা ও চট্টগ্রামের অপারেটরদের আবারও সময় দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Feb 2020, 10:27 AM
Updated : 23 Feb 2020, 10:27 AM

কেবল নেটওয়ার্কের ডিজিটালাইজেশন নিয়ে রোববার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তথ্যমন্ত্রী একথা বলেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, গত ডিসেম্বরের মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রামে কেবল অপারেটিং সিস্টেম ডিজিটালাইজড করার কথা থাকলেও অপারেটররা তা করেনি। আর সারা দেশের জন্য আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত সময় দেওয়া আছে।

এজন্য অপারেটরদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে আবার সময় দেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, সারা দেশের জন্য একবছরের বেশি সময় কোনোভাবেই দেওয়া উচিত নয়। এর মধ্যে ফেইজ বাই ফেইজ কেবল অপারেটিং সিস্টেম ডিজিটালাইজড করতে হবে।

“ঢাকা ও চট্টগ্রামে তার আগেই কয়েক মাসের মধ্যে করতে হবে। যারা ব্যর্থ হবে তাদের ব্যাপারে আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব। প্রয়োজনে নতুন লাইসেন্স দেব, যারা ডিজিটালাইজড হয়ে বাজারে আত্মপ্রকাশ করবে।”

কেবল অপারেটিং সিস্টেম ডিজিটালাইজড না হওয়ায় সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, কেবল অপারেটররা যথাযথভাবে ভ্যাট দিলে মাসে অন্তত এক হাজার ২০০ কোটি টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হত।

“যার দুই লাখ গ্রাহক আছে তিনি দুই হাজার বা আরও কম দেখান। পাঁচ লাখ গ্রাহক থাকলে এক হাজার দেখিয়ে সেটার উপর ভ্যাট দেন। ডিজিটালাইজড হলে এই ফাঁকি দেওয় সম্ভবপর হবে না।”

কেবল অপারেটিং সিস্টেম ডিজিটালাইজড হওয়ার পর কোনো বেসরকারি টিভি চ্যানেল পে-চ্যানেল হবে কি না, তা ওই টিভি কর্তৃপক্ষকে ঠিক করতে হবে বলেও মত দেন তিনি।

তথ্যমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশে ৪৫টি টেলিভিশনের সরকারি অনুমোদন আছে, এর মধ্যে ৩৪টি টিভি সম্প্রচারে আছে। আর ২২টি এফএম রেডিওর লাইসেন্স নিলেও সেগুলোর মধ্যে এক ডজন সম্প্রচারে আছে।

হাছান বলেন, “কেবল অপারেটরদের এলাকা নির্দিষ্ট করে দেওয়া আছে কিন্তু তারা তা মানেন না। যে এলাকা নির্দিষ্ট করে দেওয়া আছে সেটি না মেনে অন্য এলাকায় গিয়ে সম্প্রচার করেন। অনেক সময় এক কেবল অপারেটরের সাথে আরেক কেবল অপারেটরের নানা ধরনের জটিলতা দেখা দেয়, অনেক সময় সাংঘর্ষিক রূপও নেয়।

“সম্প্রচারের ক্ষেত্রে যে বিশৃঙ্খলা, এক ক্যাবল অপারেটরের সাথে আরেক ক্যাবল অপারেটরের যে দ্বন্দ্ব, রশি টানাটানি এবং একই সাথে ইচ্ছেমত ফি নেওয়া, নিজেরা অনেক সময় টিভি চ্যানেলের মত কাজ করা- এসব বিশৃঙ্খলা কোনোভাবেই সমীচীন নয়। দেশ ও জাতির স্বার্থে পুরোপুরি শৃঙ্খলা আনতে বদ্ধপরিকর এবং সরকারের ট্যাক্স-ভ্যাট যাতে সরকার সঠিকভাবে পায় সেজন্য আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আমরা বদ্ধ পরিকর।

“সম্প্রচারের ক্ষেত্রে যে শৃঙ্খলার দরকার ছিল তা হয়নি। ক্যাবল অপারেটররো তাদের ইচ্চামত টেলিভিশনের সিরিয়াল ঠিক করতেন। সেই সিরিয়াল করার জন্য অনেকে দেনদরবার করতে হত, আমারা সেখানে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। এখন সিরিয়াল ঠিক রাখার জন্য দেনদরবার করতে হয় না।”

তথ্যমন্ত্রী বলেন, “ডিজিটালাইজড সম্প্রচারের জন্য ক্যাবল অপারেটরদের সঙ্গে কয়েক দফা বসেছিলাম।… দেশ বেশিরভাগ কিছুতে ডিজিটালইডজ হয়ে গেলেও ক্যাবল অপারেটিং সিস্টেম ডিজিটালাইজড হয়নি। মনসিকতার অভাবই বড় প্রতিবন্ধকতা।”

“আইন অনুযায়ী বিদেশি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন ছাড়া সম্প্রচারের বিষয়টি বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। ডিজিটালাইজড না হওয়ায় এটা করা যাচ্ছে না। ডিজিটালাইজড হলে স্যাটেলাইট থেকে রিসিভ করে ক্লিন ফিড তৈরি করে তারা পাঠাতে পারত। ডিজিটালাইজড না হওয়ায় বিদেশি চ্যানেলগুলো সেই সুযোগ নিচ্ছে।”