অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি: আরও দুই বিশ্ববিদ্যালয়কে জরিমানা

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) নির্দেশনা না মেনে আইন বিভাগে ৫০ জনের বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করায় আরও দুই বিশ্ববিদ্যালয়কে ১০ লাখ টাকা করে জরিমানা করেছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Feb 2020, 07:23 AM
Updated : 23 Feb 2020, 07:23 AM

ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি চট্টগ্রাম (আইআইইউসি) ও সিলেট মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটিকে জরিমানার এই অর্থ বাংলাদেশ বার কাউন্সিলে জমা দিতে বলা হয়েছে।

টাকা জমা দেওয়ার সেই সেই রশিদ দেখিয়ে ওই দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের রিটকারী শিক্ষার্থীরা আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি বার কাউন্সিল পরীক্ষার জন্য প্রবেশপত্র নিতে পারবেন। 

এ দুই ইউনিভার্সিটির উপাচার্য, উপউপাচার্য, রেজিস্ট্রার, আইন বিভাগের ডিনরা আদালতের তলবে রোববার হাজির হলে তাদের উপস্থিতিতে বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন তিন বিচারকের আপিল বেঞ্চ এই আদেশ দেয়।

আদালতে বার কাউন্সিলের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ ওয়াই মশিউজ্জামান ও এসএম কফিল উদ্দিন।

চট্টগ্রামের ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটির (আইআইইউসি) শিক্ষার্থীদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী সগির হোসেন লিয়ন।

আর সিলেট মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির রিটকারী শিক্ষার্থীদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এবিএম আলতাফ হোসেন। তার সঙ্গে ছিলেন কামরুজ্জামান কাকন।

আদালত আদেশে বলেছে জরিমানার অর্থ কোনোভাবেই শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া যাবে না, বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিল থেকেই তা পরিশোধ করতে হবে।

আইনজীবী কামরুজ্জামান কাকন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সিলেট মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির উপচার্য দীর্ঘদিন ধরে ছুটিতে থাকায় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক শিব প্রসাদ সেন, আইন বিভাগের ডিন অধ্যাপক রবিউল ইসলাম ও রেজিস্ট্রার আদালতের তলবে উপস্থিত হয়েছিলেন।

“তারা বলেছেন, আপিল বিভাগের নির্দেশের পর তারা অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করারননি। রিটকারী ১৭ শিক্ষার্থী আগেই ভর্তি হয়েছিলেন।”

আইনজীবী সগির হোসেন লিয়ন বলেন, চট্টগ্রামের ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটির উপাচার্য কে এম গোলাম মহিউদ্দিন আদালতে এসেছিলেন।

“আদালত তার বক্তব্য শোনার পর ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন। বার কাউন্সিলে টাকা জমা দিলে রিটকারী শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন।”  

২০১৪ সালের ২৩ এপ্রিল ইউজিসির জারি করা এক নির্দেশনায় বলা হয়, কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিভাগে প্রতি সেমিস্টারে ৫০ জনের বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি নিতে পারবে না।

ইউজিসির নির্দেশনার বিষয়টি জানিয়ে ২০১৯ সালের ১ অক্টোবর বার কাউন্সিল এক নোটিসে জানায়, কোনো বেসরকারি বিশ্বাবদ্যালয় প্রতি সেমিস্টারে ৫০ জনের বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি নিলে নিবন্ধন দেওয়া হবে না।

এরপর ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই হাজার শিক্ষার্থী বিভিন্ন সময়ে বার কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করেন। সেসব আবেদনে হাই কোর্ট বিভিন্ন সময়ে রুল জারি করে এবং তাদের পরীক্ষা দেওয়ার অনুমতি দেয়।

ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটির (আইআইইউসি) ৩৯ এবং সিলেট মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির ১৭ জন শিক্ষার্থীর করা পৃথক রিট আবেদনে হাই কোর্ট আইনজীবী হিসেবে তাদের তালিকাভুক্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য নিবন্ধন ও ফরম পূরণের সুযোগ দিতে বার কাউন্সিলকে নির্দেশ দেয়।

এর বিরুদ্ধে বার কাউন্সিল আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করলে করলে আদালত গত বৃহস্পতিবার দুই ইউনিভার্সিটির উপাচার্যদের তলব করে।

সে তলবে রোববার সকালে হাজির হয়ে তারা ভুল স্বীকার করলে সর্বোচ্চ আদালত ১০ লাখ টাকা জরিমানা করে আদেশ দেয়।

এর আগে একই কারণে ঢাকার সিটি ইউনিভার্সিটি ও সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটিকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করে সর্বোচ্চ আদালত।