ঢাকায় শিশু ধর্ষণের পর হত্যা মামলায় দেড় মাসেই সাক্ষ্য শেষ

রাজধানীর ওয়ারীতে সিলভারডেল স্কুলের ছাত্রী সামিয়া আফরিন সায়মাকে (৬) ধর্ষণের পর হত্যার মামলায় মাত্র দেড় মাসের মাথায় রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Feb 2020, 05:55 PM
Updated : 19 Feb 2020, 05:55 PM

দ্রুত গতিতে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ঢাকার ১ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক কাজী আব্দুল হান্নান ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৪২ ধারায় আসামির আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি দিন রেখেছেন।

এ ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর বিবি ফাতেমা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এ মামলায় অভিযোগ গঠন হয়েছিল গত ২ জানুয়ারি। এই দেড় মাসে তদন্ত কমর্কর্তা সহ ১৪ জনের সাক্ষ্য নিয়েছেন বিচারক।

“এ রকম দ্রুত গতিতে মামলা নিষ্পত্তি হলে বিচার বিভাগের প্রতি মানুষের আস্থা বাড়বে।”

বুধবার বিকেলে এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির ওয়ারী জোনাল টিমের পরিদর্শক মোহাম্মদ আরজুনের জবানবন্দির মাধ্যমে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়।

আগামী ধার্য দিনে মামলার একমাত্র আসামি হারুন অর রশিদ (২৬) আত্মপক্ষ সমর্থনে নিজের কোনো বক্তব্য থাকলে তা উপস্থাপনের সুযোগ পাবেন। এরপর উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে মামলার রায় ঘোষণা করবেন বিচারক।

গত বছর ৫ নভেম্বর এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আরজুন। গত ২০ নভেম্বর ঢাকার মহানগর হাকিম মইনুল ইসলাম অভিযোগপত্রটি ‘দেখিলাম’ লিখে স্বাক্ষরের পর মামলাটি বিচারের জন্য ১ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিচারের জন্য পাঠান।

চলতি বছর ২ জানুয়ারি মামলায় অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন বিচারক। একইসঙ্গে ৮ জানুয়ারি সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করা হয়। ওই দিন সায়মার বাবা আব্দুছ ছালামের জবানবিন্দর মাধ্যমে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। 

গত বছর ৫ জুলাই সন্ধ্যার পর থেকে শিশু সায়মার খোঁজ পাচ্ছিল না তার পরিবার। অনেক খোঁজাখুঁজির পর আনুমানিক সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ওয়ারীতে বনগ্রামের নবম তলায় খালি ফ্ল্যাটে তাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তার গলায় রশি প্যাঁচানো, মুখ বাঁধা ও রক্তাক্ত অবস্থায় ছিল। খবর পেয়ে রাত ৮টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। ঘটনার পরদিন সায়মার বাবা আব্দুস সালাম বাদী হয়ে ওয়ারী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয় বলে ময়নাতদন্তে বেরিয়ে আসে।

এই মামলার একমাত্র আসামির বাড়ি কুমিল্লায়। ওয়ারীর বনগ্রামের যে বহুতল ভবনে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনাটি ঘটেছে, তার অষ্টম তলায় খালাত ভাই পারভেজের বাসায় থাকতেন তিনি। ঠাঁটারীবাজারে পারভেজের রঙের দোকানেই তিনি কাজ করতেন। আর হত্যার শিকার সাত বছর বয়সী মেয়েটি ষষ্ঠ তলায় পরিবারের সঙ্গে থাকত। অন্য দিনের মতোই আটতলায় পারভেজের মেয়ের সঙ্গে খেলতে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়েছিল সে।

আসামি হারুন অর রশিদকে গত বছর ৭ জুলাই তার বাড়ি কুমিল্লার তিতাস থানার ডাবরডাঙ্গা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। পরদিন আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন তিনি। জবানবন্দি রেকর্ড শেষে তাকে কারাগারে পাঠান আদালত। সেই থেকে কারাগারে আছেন তিনি।