চুড়িহাট্টার আগুনে নিহতদের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত: চিকিৎসক

চকবাজারের চুড়িহাট্টা মোড়ের কাছে ওয়াহেদ ম্যানশনের অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন শিগগিরই পুলিশের কাছে জমা দেওয়া হবে বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Feb 2020, 04:06 PM
Updated : 19 Feb 2020, 04:06 PM

ঘটনার এক বছরের মাথায় বুধবার দুপুরে ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক সোহেল মাহমুদ এ তথ্য জানান।

সাংবাদিকদের তিনি বলেন, এ ঘটনায় নিহত ৬৭ জনের মৃত্যুর ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে। যে কোনো সময় পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

তবে বুধবার রাত ১০টা নাগাদও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাননি বলে চকবাজার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কবির হোসেন হাওলাদার জানিয়েছেন।

গত বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে ওয়াহেদ ম্যানশন থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ওই ভবন ও আশপাশের গুদামে থাকা প্লাস্টিক ও পারফিউমসহ রাসায়নিক আগুনকে আরও উসকে দেয়। ওই ঘটনায় মোট ৭১ জনের পোড়া লাশ উদ্ধার হয়। এর মধ্যে চারজনের মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই নিয়ে যান তাদের স্বজনরা।

বাকি ৬৭ লাশের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন না আসায় এঘটনায় করা মামলার তদন্তও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আদালতে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমার জন্য নয়বার তারিখ পিছিয়ে ২৬ ফেব্রুয়ারি দিন রেখেছে আদালত।

ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন জমায় দেরির কারণ ব্যাখ্যা করে ডা. সোহেল বলেন, “৬৭ জনের প্রোফাইল তৈরি করার পাশাপাশি গ্রুপভিত্তিক ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়। একই সাথে নিহতদের নমুনা সিআইডিতে পাঠানোর পর প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। আবার গ্রুপের কেউ কেউ বদলি হওয়ার ফলেও কাজে কিছুটা বিলম্ব হয়।

“তবে সব প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। এখন সমন্বয়ের কাজ চলছে, যাও প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে।”

৩ জনের পরিচয় শনাক্ত হয়নি

চুড়িহাট্টার অগ্নিকাণ্ডে ঘটনাস্থল থেকে থেকে ৬৭ জনের পোড়া লাশ মর্গে পাঠান উদ্ধারকর্মীরা। পরে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭১ জন হয়। এদের মধ্যে চারজনের মরদেহ নিয়ে যান স্বজনরা।

বাকি ৬৭ জনের মধ্যে তিনজনের পরিচয় এখনো শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি জানিয়ে ডা. সোহেল বলেন, প্রথম পর্যায়ে ৪৫ জনের ও ডিএনএ প্রোফাইলিংয়ের মাধ্যমে ২২ জনের পরিচয় শনাক্ত করা হয়।

“যারা এখনো তাদের স্বজনকে পাননি তারা ডিএনএ নমুনা দিয়ে গেলে তা প্রোফাইলিং করে পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা করা হবে।”

ওই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পরের দিন‍ ‘অবহেলার কারণে সৃষ্ট অগ্নিসংযোগের ফলে মৃত্যু ঘটাসহ ক্ষতিসাধনের’ অভিযোগে ওয়াহেদ ম্যানশনের মালিকের ছেলে হাসান ও সোহেল ওরফে শহীদসহ অজ্ঞাতপরিচয় ১০-১২ জনকে আসামি করে মামলা হয়।

মামলায় বলা হয়, চারতলা বাড়ির বিভিন্ন ফ্লোরে দাহ্য পদার্থ রাখতেন তারা। মানুষের জীবনের ঝুঁকি জেনেও অবৈধভাবে রাসায়নিকের গুদাম করার জন্য ব্যবসায়ীদের কাছে বাসা ভাড়া দেন তারা।

আসামি হাসান ও শহীদ গ্রেপ্তার হয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীও দিয়েছেন। আগামী গত বছরের ৮ অগাস্ট হাই কোর্ট থেকে ছয় মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পান তারা। পরে ১৬ ফেব্রুয়ারি এই জামিনের মেয়াদ এক বছরের জন্য বাড়িয়ে দেয় হাই কোর্ট।