সিনহার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করায় হুদার বিরুদ্ধে মামলা

সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার বিরুদ্ধে ঘুষ চাওয়ার মিথ্যা অভিযোগ করায় ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Feb 2020, 03:11 PM
Updated : 19 Feb 2020, 03:11 PM

দুদকের ঢাকা-১ এর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে বুধবার পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন বাদি হয়ে মামলাটি করেন।

এজাহারে বলা হয়, মিথ্যা জেনেও নাজমুল হুদা বিজ্ঞ আদালত ও প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি জনাব সুরেন্দ্র কুমার সিনহার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার হীন উদ্দেশ্যে শাহবাগ থানায় ২০১৮ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর মামলা করেন।

এজন্য দুদক আইন-২০০৪ এর ২৮গ (২) ধারায় নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।

এবিষয়ে দুদক সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখত সাংবাদিকদের বলেন, “সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার বিরুদ্ধে ঘুষ চাওয়ার মামলা তদন্ত করে দেখা গিয়েছে মামলাটির তথ্য সঠিক নয়, ভিত্তিহীন।”

প্রধান বিচারপতি সিনহা দুই বছর আগে নানা নাটকীয় ঘটনার মধ্যে বিদেশে পাড়ি জমানোর পর যখন তার বিরুদ্ধে ঋণ জালিয়াতির অভিযোগের তদন্তে নেমেছিল দুদক, তখনই ঘুষের মামলাটি করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী নাজমুল হুদা।

২০১৮ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর শাহবাগ থানায় মামলাটি হলে পুলিশ ৩ অক্টোবর মামলাটি দুদকে পাঠিয়ে দেয়। ওই মামলাটি তদন্ত করেন দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন।

গত বছরের ৪ ডিসেম্বর কমিশন এই অভিযোগ থেকে বিচারপতি সিনহাকে অব্যাহতি দিলেও একই দিন ঋণ জালিয়াতির মামলায় তাকে আসামি করে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে দুদক।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য ও খালেদা জিয়ার সরকারের মন্ত্রী নাজমুল হুদা ওই দল ছেড়ে নতুন দল গড়ে এখন আওয়ামী লীগের জোটে ভেড়ার আশায় আছেন।

বিচারপতি সিনহার বিরুদ্ধে মামলা করার পর নাজমুল হুদা সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ২০১৭ সালে তার কাছে সোয়া তিন কোটি টাকা ঘুষ দাবি করেন বিচারপতি এস কে সিনহা।

“সে সময় তিনি আমাকে বলেছিলেন, টাকা না দিলে আমার বিরুদ্ধে করা সবকটি মামলার রায় বিরুদ্ধে যাবে। ঘটনার তারিখ ছিল ২০ জুলাই। ওই দিন দুপুরে প্রধান বিচারপতি তার খাস কামরায় ডেকে ঘুষ দাবি করেন।”

সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘খবরের অন্তরালে’র জন্য মীর জাহের হোসেন নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে এক মামলায় নাজমুল হুদার ৭ বছরের কারাদণ্ড হয়েছিল। জরুরি অবস্থার সময় দেওয়া ওই মামলার রায়ে হুদার স্ত্রী সিগমা হুদারও তিন বছর কারাদণ্ড হয়েছিল।

ওই রায়ের বিরুদ্ধে নাজমুল হুদা ও সিগমা হুদা আপিল করলে ২০১১ সালের ২০ মার্চ হাই কোর্ট তাদের খালাস দেয়। কিন্তু দুদকের আপিলে আপিল বিভাগ ওই রায় বাতিল করে পুনঃশুনানির নির্দেশ দেয়। তখন আপিল বিভাগে ছিলেন বিচারপতি সিনহা।

মামলার পুনঃশুনানি শেষে হাই কোর্টের আরেকটি বেঞ্চ নাজমুল হুদাকে চার বছরের কারাদণ্ড দেয়।

বঙ্গবন্ধু (যমুনা) সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ কোম্পানি মর্গানেট ওয়ান লিমিটেডের কাছ থেকে ৬ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে আরেক মামলায় সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে দুদক।