ট্রান্স ফ্যাট নিয়ন্ত্রণে ভোক্তাদের দাবি পূরণের আশ্বাস শিল্পমন্ত্রীর

খাদ্যে ট্রান্স ফ্যাটের উচ্চমাত্রা নিয়ন্ত্রণে খাদ্য আইন সংস্কারের মাধ্যমে যুগোপযোগী করার আশ্বাস দিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Feb 2020, 04:53 PM
Updated : 13 Feb 2020, 04:53 PM

বৃহস্পতিবার সিরডাপ মিলনায়তনে 'খাদ্যে ট্রান্স ফ্যাট, হৃদরোগ ঝুঁকি এবং করণীয় : ভোক্তা পরিপ্রেক্ষিত’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় দাবি ওঠার পর তিনি এ আশ্বাস দেন।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, “জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় খাদ্যে ট্রান্স ফ্যাট নির্মূলে যে ৯ দফা ভোক্তা দাবিনামা দেওয়া হয়েছে, তা দ্রুত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে।”

কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব),  ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ এবং প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) সম্মিলিতভাবে এ আলোচনা সভা আয়োজন করে।
ক্যাবের সভাপতি গোলাম রহমানের সভাপতিত্বে এই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউটের (বিএসটিআই) মহাপরিচালক মুয়াজ্জেম হোসাইন, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা জাতীয় অধ্যাপক অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার আব্দুল মালিক, গ্লোবাল হেলথ এডভোকেসি ইনকিউবেটরের আবাসিক সমন্বয়ক মুহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য মনজুর মোর্শেদ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর এনসিডিসি হাবিবুর রহমান, ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবীর ভূঁইয়া ও প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই আলোচ্য বিষয় সম্পর্কে আলোকপাত করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের ইপিডেমিওলজি অ্যান্ড রিসার্চ বিভাগের অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী, প্রজ্ঞার পরিচালক ও কর্মসূচি প্রধান হাসান শাহরিয়ার এবং ক্যাবের প্রোগ্রাম কোঅর্ডিনেটর আহম্মদ একরামুল্লাহ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন নাদিরা কিরন।
রুহুল কুদ্দুস বলেন, “বাংলাদেশ থেকে এখন খাদ্যপণ্য বিদেশে রপ্তানি করা হয়। সুতরাং ট্রান্স ফ্যাট নির্মূল করা না গেলে তারা আমাদের এসব পণ্য কিনবে না এবং আমরা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হব।”

সভায় বলা হয়, মাত্রাতিরিক্ত ট্রান্স ফ্যাট গ্রহণে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। ট্রান্স ফ্যাটযুক্ত খাবার রক্তে ‘খারাপ’ কোলেস্টেরল বাড়িয়ে ‘ভালো’ কোলেস্টেরল কমিয়ে দেয় এবং মানুষকে অসুস্থ করে ফেলে।

সাধারণত ভাজা-পোড়া ও বেকারি খাবারে শিল্পোৎপাদিত ট্রান্স ফ্যাট থাকে। ভাজ্য তেলের (পাম, সয়াবিন ইত্যাদি) সঙ্গে হাইড্রোজেন যুক্ত (হাইড্রোজেনেশন) করলে তেল জমে যায় এবং ট্রান্স ফ্যাট উৎপন্ন হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা খাবারে ট্রান্স ফ্যাটের পরিমাণ মোট ফ্যাটের শতকরা দুই ভাগের কম হতে হবে বলে সুপারিশ করেছে।
অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রীর কাছে দেওয়া নয় দফা দাবিতে সব খাদ্যপণ্যে ট্রান্স ফ্যাটের পরিমাণ ২% বেঁধে দেওয়ার পাশাপাশি ট্রান্স ফ্যাটের প্রধান উৎস ডালডা/বনস্পতি উৎপাদন, আমদানি, ব্যবহার নিষিদ্ধের দাবিও তোলা হয়।

ট্রান্স ফ্যাটের স্বাস্থ্য ঝুঁকি সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে ব্যাপক প্রচার চালানোর সুপারিশও করা হয়।