মার্কেটে ‘ল্যাবএইড’ ছড়ানোয় ব্যবসায় ক্ষতি হওয়ার অভিযোগ

মার্কেটের জায়গা কিনে সেখানে ল্যাবএইড কর্তৃপক্ষ হাসপাতাল সম্প্রসারণ করায় ব্যবসায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার অভিযোগ করেছেন ধানমণ্ডির কনকর্ড আর্কেডিয়া শপিং মলের দোকান মালিকরা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Feb 2020, 03:56 PM
Updated : 12 Feb 2020, 04:01 PM

তবে তাদের এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে ল্যাবএইড কর্তৃপক্ষ।

ল্যাবএইড হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বহিরাগতরা হামলা-ভাঙচুরের পর ‘মিথ্যা’ মামলা দিয়েছে অভিযোগ করে এর প্রতিবাদে বুধবার দুপুরে ওই শপিং মলের নিচতলায় সংবাদ সম্মেলন করে শপিং মলটির ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন।

সেখানে বলা হয়, ২০০২ সালে কনকর্ড আর্কেডিয়া চালুর পর একে একে এর শতাধিক দোকান কিনে নেয় ল্যাবএইড কর্তৃপক্ষ। কেনার পর মার্কেটের তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় হাসপাতালের কার্যক্রম সম্প্রসারিত করে তারা।

অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সানাউল হক নীরু বলেন, “হঠাৎ করে ২০০৫ সালে আমরা জানতে পারি, মার্কেটের তৃতীয় তলার ও চতুর্থ তলার মোট ১০২টি দোকান এবং পঞ্চম তলার ৭ হাজার বর্গফুট অফিস স্পেস কিনে নিয়েছে ল্যাবএইডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এ এম শামীম।

“দোকানগুলো কিনে নেওয়ার পর পর মার্কেটের তৃতীয়, চতুর্থ তলা ও পঞ্চম তলা ল্যাবএইডের পাশের অংশ ভেঙে হাসপাতালের সঙ্গে এক করে দেয়। এবং ওই ফ্লোরগুলোতে সাধারণ ক্রেতা ও মার্কেটের সংশ্লিষ্ট লোকজনের চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।”

রাজউকের নকশা অমান্য করে ল্যাবএইড মার্কেটে হাসপাতাল বানিয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, “রাজউক চতুর্থ তলা পর্যন্ত মার্কেটের অনুমতি দিয়েছে, কিন্তু ল্যাবএইড জোর করে হাসপাতাল বানিয়ে ফেলছে।”

মার্কেটের বড় অংশ হাসপাতালে রূপান্তর এবং কিনে রাখা অনেক দোকান মাসের পর মাস বন্ধ রাখায় সেখানে কেনাকাটা করতে ক্রেতারা আগ্রহ হারাচ্ছেন এবং এতে তারা ক্ষতির মুখে পড়েছেন বলেও অভিযোগ করেন সানাউল হক নীরু।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২০১১ সালের ৩ অক্টোবর মার্কেটের ভূমি মালিক ও ল্যাবএইডের সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করে কনকর্ড আর্কেডিয়া শপিং মল ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন।

শুনানি শেষে ২০১২ সালের ২৬ নভেম্বর মামলাটি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আদেশ দেয় আদালত। মামলাটি এখনও নিষ্পত্তি হয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শপিং মলের ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি আল আমিন ও শাহীদ আহমেদ বাবু, সাধারণ সম্পাদক মোক্তার হোসেন, কোষাধ্যক্ষ ওয়াহিদুর রহমান, সদস্য ফরিদা রিফায়ার, সিরাজুল ইসলাম আকন্দ, মো. শাহীন ও খোরশেদ আলম।

তবে মার্কেটের দোকান ব্যবসায়ীদের অভিযোগ নাকচ করে উল্টো তাদের বিরুদ্ধেই হামলার অভিযোগ করেছে ল্যাবএইড কর্তৃপক্ষ।

ল্যাবএইডের জনসংযোগ কর্মকর্তা মেহের-ই-খুদা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কনকর্ড শপিং কমপ্লেক্সের কয়েকটি দোকান ল্যাবএইড কর্তৃপক্ষ কিনে নেয়। এরপর বিভিন্ন সময়ে দোকানগুলোতে সানাউল হকের লোকজন চাঁদাবাজি করে এবং দোকানগুলো জোরপূর্বক বন্ধ করে দেওয়া হয়।

“একদিন দোকানগুলোতে রঙ মিস্ত্রীরা রঙ করার সময় তাদের উপর হামলা চালানো হয়। এক পর্যায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে সানাউল হকের লোকজন হুমকি দেয়। এরপর শখানেক লোকের দল নিয়ে ল্যাবএইডের ইমার্জেন্সিতে হামলা চালানো হয়। রোগীসহ অ্যাম্বুলেন্স পর্যন্ত আটকে দেওয়া হয়। তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ এসে সানাউল হককে গ্রেপ্তার করে। এরপর তিনি জামিনে ছাড়া পান।”

মার্কেটের তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম তলাকে হাসপাতালের সঙ্গে এক করে দেওয়ার অভিযোগও অস্বীকার করেন তিনি।

ল্যাবএইডের এই কর্মকর্তা বলেন, “শপিং মলের পঞ্চম তলা মূলত ল্যাবএইডের ডক্টরস চেম্বারের জন্য বরাদ্দকৃত এবং এটি হাসপাতালের ক্রয়কৃত সম্পত্তি।”