করোনাভাইরাস: মৈত্রী এক্সপ্রেসেও ‘হেলথ স্ক্রিনিং’

করোনাভাইরাস নিয়ে সতর্কতার অংশ হিসেবে ঢাকা-কলকাতা রুটে চলাচলকারী মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রীদেরও স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Feb 2020, 10:35 AM
Updated : 12 Feb 2020, 10:35 AM

আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, বিমানবন্দর, স্থলবন্দর এবং নৌবন্দরের পর এবার রেলস্টেশনেও বিদেশফেরত যাত্রীদের হেলথ স্ক্রিনিং হচ্ছে। ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে মঙ্গলবার থেকে মৈত্রী এক্সপ্রেসে আসা যাত্রীদের স্ক্রিনিং শুরু হয়েছে।

“মৈত্রী এক্সপ্রেস বেনাপোল হয়ে এলেও সেখানে কোনো যাত্রী নামেন না। তারা ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে নামেন। গতকাল থেকে তাদেরও আমরা স্ক্রিনিংয়ের আওতায় নিয়ে এসেছি।”

ঢাকা ও কলকাতার মধ্যে সপ্তাহে পাঁচদিন চলাচল করে মৈত্রী এক্সপ্রেস। মঙ্গল, বুধ, শুক্র, শনি ও রোববার ট্রেনটি ঢাকা ছেড়ে যায়। আর সোম, মঙ্গল, বুধ, শুক্র ও শনিবার কলকাতা থেকে ছেড়ে আসে।

আইইডিসিআরের পরিচালক জানান, চীনফেরত যে যুবককে রংপুর মেডিকেল থেকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছিল, পরীক্ষায় তার দেহে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি।

“কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে আইসোলেশনে থাকা ওই ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাস ছিল না। আমরা বলেছিলাম তার মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার কোনো লক্ষণও নেই। তারপরও আমরা অতিরিক্ত সতর্কতা হিসেবে তাকে আইসোলেশনে রেখেছিলাম। তার নমুনা পরীক্ষা করেছিলাম।”

মঙ্গলবার পর্যন্ত আইইডিসিআর ৫৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করে কারও শরীরে করোনাভাইরাস পায়নি বলে জানান অধ্যাপক ফ্লোরা।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সিঙ্গাপুরে যে দুই বাংলাদেশি করোনাভাইরাস নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, তাদের মধ্যে একজনের সংস্পর্শে থাকা ১৯ জনকে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে। ওই ১৯ জনের মধ্যে দশজন বাংলাদেশি।

“সিঙ্গাপুরে যেহেতু দুজন বাংলাদেশি আক্রান্ত হয়েছেন, সে কারণে সেখানে আমাদেরও বিশেষ নজর রয়েছে। তাদের চিকিৎসার ব্যয় সিঙ্গাপুর সরকার বহন করবে।”

চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া নতুন এ করোনাভাইরাসে এ পর্যন্ত ১ হাজার ১১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে; আক্রান্ত হয়েছে অন্তত ৪৫ হাজার মানুষ।

এতদিন এ ভাইরাসটিকে বলা হয়েছে নভেল করোনাভাইরাস। এ ভাইরাস যে সংক্রামক রোগের কারণ ঘটাচ্ছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তার আনুষ্ঠানিক নাম দিয়েছে ‘কভিড-১৯’।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসাস মঙ্গলবার জেনিভায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, নতুন করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন পেতে আরও অন্তত ১৮ মাস সময় লাগতে পারে।

সে প্রসঙ্গ টেনে আইইডিসিআরের সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক ফ্লোরা বলেন, “আমাদের হাতে ভ্যাকসিন আসতে বেশ কিছুটা সময় লাগবে। তার মানে প্রতিরোধের যে কার্যক্রমগুলোর কথা আমরা বলে আসছিলাম- সচেতনতা, পার্সোনাল হাইজিন, কাশি শিষ্টাচার- এগুলোই এ রোগ প্রতিরোধের অন্যতম উপায়।”

চীন থেকে ফেরা ৩১২ জনের মধ্যে যাদের আশকোনার হজ ক্যাম্পে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে, তাদের সবাই সুস্থ আছেন বলে জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।

অধ্যাপক ফ্লোরা বলেন, “সেখানে তাদের ১৫ জানুয়ারি বিকাল পর্যন্ত রাখা হবে। তারপর সেখান থেকে কীভাবে তাদের রিলিজ করা হবে সে বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।”