বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালতে সোমবার ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্য মো. ইমরুল হাসান এই অভিযোগ দায়ের করেন বলে ট্রাইব্যুনালের পেশকার শামীম আল মামুন জানিয়েছেন।
বিচারক অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৮ (১) ধারায় দায়ের করা অভিযোগে বলা হয়েছে, সম্প্রতি একটি পালা গানের আসরে প্রতিপক্ষকে আক্রমণ করতে গিয়ে রিতা দেওয়ান মহান আল্লাহকে নিয়ে চরম ধৃষ্টতা, অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন।
ইউটিউবে সেই পালা গানের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগ আনেন আইনজীবী ইমরুল হাসান।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৮(১) ধারায় বলা হয়েছে- ‘যদি কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী ইচ্ছাকৃতভাবে বা জ্ঞাতসারে ধর্মীয় মূল্যবোধ বা অনুভূতিতে আঘাত করিবার বা উস্কানি প্রদানের অভিপ্রায়ে ওয়েবসাইট বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে এমন কিছু প্রকাশ বা প্রচার করেন বা করান, যা ধর্মীয় অনুভূতি বা ধর্মীয় মূল্যবোধের উপর আঘাত করে, তাহলে উক্ত ব্যক্তির অনুরূপ কার্য হইবে একটি অপরাধ। যদি কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো অপরাধ সংঘটন করেন, তাহা হইলে তিনি অনধিক ৫ (পাঁচ) বৎসর কারাদণ্ডে বা অনধিক ১০ (দশ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন’।
এদিকে রিতা দেওয়ানের গানটি ইউটিউবে ছড়ানোর পর গত ১ ফেব্রুয়ারি ক্ষমা চেয়েছেন বাউলশিল্পী রিতা দেওয়ান। ‘গান রুপালি এইচডি’ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে দুই মেয়েকে পাশে নিয়ে একটি সাক্ষাৎকারে তিনি ক্ষমা চান।
এছাড়া রিতা দেওয়ানের বিরুদ্ধে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতেও একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
রাসেল মিয়া নামের এক নির্মাতা ও অভিনেতা রিতার বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার অভিযোগ এনেছেন। দণ্ডবিধির ২৯৫ (ক), ২৯৮ ধারায় অভিযোগটি আনা হয়েছে।
ঢাকার মহানগর হাকিম রাজেশ চৌধুরী বাদীর জবানবন্দি নিয়ে পিবিআইকে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে আগামী ৩ মার্চ প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
এর আগে গত ২৪ ডিসেম্বর ঢাকার ধামরাই উপজেলার রৌহাট্টেক পীর এ কামেল হযরত হেলাল শাহ’র ১০ম বাৎসরিক মিলন মেলায় ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার অভিযোগ ওঠে শরিয়ত বয়াতি নামের এক শিল্পীর বিরুদ্ধে।
এই অভিযোগে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার আগধল্যা গ্রামের জামে মসজিদের ঈমাম ফরিদুল ইসলাম মির্জাপুর থানায় মামলা করেন।
ওই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে কারাগারে আছেন শরিয়ত বয়াতি। তাকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করেছে পুলিশ।
শরিয়ত বয়াতির বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও কথা বলতে হয়েছে সংসদের অধিবেশনে।
গত ২২ জানুয়ারি সংসদে এক প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শরিয়ত বয়াতি নিশ্চয়ই কোনো অপরাধে সম্পৃক্ত বলেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।