নরসিংদীর মেয়র কামরুজ্জামানকে হাই কোর্টে তলব

উচ্চ আদালতের আদেশ অমান্য করার অভিযোগ পেয়ে নরসিংদী পৌরসভার মেয়র মো. কামরুজ্জামান কামরুলকে তলব করেছে হাই কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Jan 2020, 04:30 PM
Updated : 29 Jan 2020, 04:30 PM

আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি তাকে স্বশরীরে হাজির হতে বুধবার নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাই কোর্ট বেঞ্চ।

সড়ক প্রশস্ত করতে নরসিংদী শহরের ব্রাহ্মনদী এলাকার বাসিন্দা রণজিৎ কুমার সাহার বাড়ির সীমানা প্রাচীর ভাঙার ঘটনায় আদালতে হাজির হয়ে তার কারণ ব্যাখ্যা করতে হবে কামরুজ্জামানকে।

বাদী পক্ষের আইনজীবী আদনান সরকার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আদালত স্থিতাবস্থা জারির পরও পৌর মেয়র কামরুজ্জামান সড়ক প্রশস্ত করতে রণজিৎ কুমার সাহার বাড়ির সীমানা প্রাচীর ভেঙে ১২ ফুট জায়গা দখল করেন। “বিষয়টি উল্লেখ করে আদালতে পৌর মেয়রসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগের আবেদন করলে আদালত নরসিংদীর পৌর মেয়র মো. কামরুজ্জামানকে তলব করেছেন।”

সেই সঙ্গে আদালত একটি রুলও দিয়েছে। তাতে জানতে চাওয়া হয়েছে,আদালত অবমাননার অভিযোগে কেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হবে না।

এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে নরসিংদী শহরের শিক্ষা চত্বর সংলগ্ন ব্রাহ্মনদী-পুটিয়া সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্পের কাজ চলছে।

কোনো আইনানুগ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে গত ১ ও ২ জানুয়ারি পৌর মেয়র নিজে এসে রণজিৎ কুমার সাহাকে সড়ক প্রশস্ত করতে বাড়ির সীমানার কিছু জায়গা ছেড়ে দিতে বলেন।

তাতে অস্বীকৃতি জানালে মেয়র কামরুজ্জামান তখন তাকে হুমকি দেন বলে অভিযোগ রনজিতের।

এর প্রতিকার চেয়ে গত ৩ জানুয়ারি রণজিৎ কুমার সাহা স্থানীয় সরকার সচিব, পৌর মেয়র, নরসিংদীর জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও সদর থানার ওসিসহ সংশ্লিষ্ট সাতজনকে আইনি নোটিস দেন।

কিন্তু বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে কোনো জবাব না পেয়ে হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন রণজিৎ। তার প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ৬ জানুয়ারি আদালত এক মাসের স্থিতাবস্থা জারির পাশাপাশি বিবাদীদের প্রতি রুল জারি করে।

রনজিতের অভিযোগ, আদালত স্থিতাবস্থা জরির পরও পৌর মেয়র কামরুজ্জামান গত ১০, ১৮ ও ২২ জানুয়ারি লোকজন নিয়ে এসে তার বাড়ির সীমানা প্রাচীর ভেঙে ১২ ফুট জায়গা দখল করে নেন।

তখন রনজিৎ পৌর মেয়রসহ সংশ্লিষ্টদের আবার আইনি নোটিস পাঠান। তার জবাব না পেয়ে গত ২৩ জানুয়ারি হাই কোর্টে আদালত অবমাননার অভিযোগ করেন। ওই আবেদনের শুনানি করেই পৌর মেয়রকে তলব করা হল।

রণজিৎ সাহা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আদালতের আদেশের খবর পেয়ে মেয়র কামরুজ্জামান লোকজন নিয়ে হুমকি দিয়ে গেছেন।

“বলে গেছেন, কাল সকালে ১০ হাজার লোক নিয়ে আসতেছি, আপনারা কেমন এখানে থাকেন আমি দেখব। আপনারা এখানে থাকতে পারবেন না। আপনাদের থাকতে দিব না। এত সাহস আমার বিরুদ্ধে আপনারা মামলা করসেন!”

“এখন আমার বাড়ির লোকজন ভীতসন্ত্রস্ত! কি করবো, কোথায় যাবো, কোথায় থাকব, জানি না,” বলেন রনজিৎ।

এ বিষয়ে কথা বলতে মেয়র কামরুজ্জামানকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

কামরুল নরসিংদী পৌরসভার সাবেক মেয়র লোকমান হোসেনের ভাই। লোকমান হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ার পর ভোটে কামরুল মেয়র হন। লোকমানের স্ত্রী বর্তমানে সংসদে সংরক্ষিত আসনের সদস্য।