বুড়িগঙ্গা দূষণ: শ্যামপুরের চার কারখানাকে হাই কোর্টের জরিমানা

বুড়িগঙ্গা দূষণের দায়ে শ্যামপুরের চারটি শিল্প প্রতিষ্ঠানকে পাঁচ লাখ টাকা করে জরিমানা করেছে হাই কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Jan 2020, 03:50 PM
Updated : 28 Jan 2020, 03:50 PM

এই চার শিল্পপ্রতিষ্ঠান হল- মিতা টেক্সটাইল, অভিজিৎ ডায়িং, চাঁদপুর টেক্সটাইল ও শারমীন টেক্সটাইল।

রায়ের অনুলিপি পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে চার প্রতিষ্ঠানকে জরিমানার ওই  টাকা পরিবেশ অধিদপ্তরে জমা দিতে বলা হয়েছে। আর পরিবেশ অধিদপ্তরকে বলা হয়েছে, সেই টাকা যেন বুড়িগঙ্গার দূষণ রোধে ব্যয় করা হয়।

এই চার শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকদের করা চারটি আলাদা রিট আবেদনে এর আগে জারি করা রুল খারিজ করে দিয়ে বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও মোহাম্মদ উল্লাহ’র হাই কোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এই রায় দেয়।

আদালতে রিট আবেদনকারীদের পক্ষে রুল শুনানি করেন আইনজীবী সিদ্দিকুর রহমান ও মো. রায়হান। পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ ও আমাতুল করিম।

রায়ের পর মনজিল মোরসেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বুড়িগঙ্গার দূষণরোধ জনস্বার্থে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) করা এক মামলার রায়ে উচ্চ আদালত নির্দেশ দিয়েছিল, বুড়িগঙ্গা পাড়ের যেসব শিল্প প্রতিষ্ঠান বা কারখানায় বর্জ্য শোধনাগার বা ইটিপি প্ল্যান্ট নেইম সেগুলো বন্ধ করে দিতে হবে।

২০১০ সালে ওই রায়ের নির্দেশনা অনুযায়ী পরিবেশ অধিদপ্তর শ্যামপুরের এই চার শিল্প প্রতিষ্ঠানের গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির লাইন বিচ্ছিন্ন করে দেয়।

তখন বেশ কিছু শিল্প প্রতিষ্ঠান ও কারাখানার মালিক আপিল বিভাগে যান। আপিল বিভাগ তখন তাদের সে আবেদনে সাড়া না দিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযান চলমান রাখতে বলে।

“কিন্তু আপিল বিভাগের সেই আদেশ গোপন করে পরিবেশ অধিদপ্তরের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে এই চার শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিক হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন। হাই কোর্ট তখন স্থিতাবস্থা দিয়ে রুল জারি করে।”

২০১৫ সালে পরিবেশ অধিদপ্তর নোটিস দেওয়ার পরও এই চার কোম্পানি ইটিপি ছাড়াই শিল্প প্রতিষ্ঠান চালিয়ে আসছিল। হাই কোর্ট মঙ্গলবার তাদের রুল খারিজ করে রায় দিয়েছে।

বুড়িগঙ্গার দূষণ রোধে এইচআরপিবির করা চলমান মামলার এক সম্পূরক আবেদনে গত ২০ জানুয়ারি হাই কোর্টের একই বেঞ্চই দূষণে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়।

সেই সঙ্গে পরিবেশগত ছাড়পত্র ও বর্জ্য সংশোধনাগার ছাড়া চলা ২৩১টি শিল্প প্রতিষ্ঠান অবিলম্বে বন্ধ করতে পরিবেশ অধিদপ্তরকে নির্দেশ দেয়।

পাশাপাশি পরিবেশ অধিদপ্তরের চিঠি পাওয়ার পর সেসব শিল্প প্রতিষ্ঠানের পানি, গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে ঢাকা ওয়াসা, তিতাস গ্যাস ও ডিপিডিসিকে নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট।

ঢাকার জেলা প্রশাসক, ডিএমপি কমিশনার ও সংশ্লিষ্ট থানার ওসিকে আদালতের এই নির্দেশনা বাস্তবায়নে সহযোগিতা দিতে বলা হয়।

ওই আদেশ বাস্তবায়নের বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের আগামী ২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের মাধ্যমে অগ্রগতি প্রতিবেদন দিতে বলেছে আদালত।