বিএনপি ইভিএম দেখতে না এলে কী করার আছে: ইসি সচিব

ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) কোনোভাবে জাল ও কারচুপির সুযোগ নেই দাবি করে নির্বাচন কমিশনের সচিব মো. আলমগীর বলেছেন, ইভিএম নিয়ে সবাই সন্তোষ প্রকাশ করেছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Jan 2020, 10:24 AM
Updated : 28 Jan 2020, 10:27 AM

ইভিএম নিয়ে বিএনপির বিরোধিতার প্রেক্ষাপটে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে মঙ্গলবার দুপুরে নির্বাচন ভবনে তিনি বলেন, “এটা (ইভিএম) ওপেন, যে কেউ এসে দেখতে পারে।

“নির্বাচনী কেন্দ্রগুলোতে ইভিএম দেওয়া রয়েছে, দেখতে পারেন। ইভিএম প্রদর্শনী ও মক ভোটিং রয়েছে ১ ফেব্রুয়ারির আগেও। এতে কোনো জাল-জালিয়াতির সুযোগ নেই।”

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতরা ইভিএম দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বলেও জানান ইসি সচিব।

কিন্তু যাদের নিয়ে ভোট করছেন, সেই বিএনপি তো সন্তুষ্ট না- সাংবদিকদের এমন কথার জবাবে মো. আলমগীর বলেন, “তাদেরকে বলেছি আপনারা দেখেন; তারা তো আসে না। আমরা তো ওপেন রেখেছি, না এলে কী করতে পারি? তারা যদি না আসেন, আমরা তাদের কিভাবে আনব?”

কিছু বিষয় কন্ট্রোল করা কষ্টকর

ঢালাওভাবে আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে জানতে চাইলে ইসি সচিব জানান, সুনর্দিষ্টভাবে কিছু অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাতে বড় ধরনের আচরণবিধি লঙ্ঘিত হয়েছে এমন নয়। দুটি ঘটনা উত্তর ও দক্ষিণে রয়েছে।

“দুটো ঘটনাই অতর্কিতে হয়েছে। ২৪ ঘণ্টা আগে পুলিশকে না জানিয়ে পথসভা হয়েছে; এটা নিয়ে দুই দলের সঙ্গে কমিশনের কথা হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা না করার জন্য বলা হয়েছে। রিটার্নিং অফিসারকেও নির্দশনা দেওয়া হয়েছে। ছোটোখাটো জিনিস থেকে এসব হয়েছে।”

মাইকিং, লেমিনেটেড পোস্টার নিয়ে আদালতের নির্দেশনা অনুসরণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

ঢাকা সিটি নির্বাচন সামনে রেখে ইভিএম প্রদর্শন এবং মক ভোটিংয়ের ব্যবস্থা রেখেছে নির্বাচন কমিশন

“এ ধরনের উল্লাসপূর্ণ ও পার্টিসিপেটিং ইলেকশন করতে গেলে এটা কন্ট্রোল করা খুবই কঠিন। তবে কমিশন ভবিষ্যতে এটা নিয়ে চিন্তা করবে। আচরণবিধি সময়োপযোগী করারও প্রয়োজন রয়েছে। যাতে মানুষের কষ্ট না হয়, প্রার্থীরাও যেন প্রচার করতে পারে।”

সচিব জানান, আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে অনেককে সতর্ক করা হয়েছে।

প্রিজাইডিং কর্মকর্তার সুযোগ মাত্র ১%

ইভিএমে ভোট দিতে যেহেতু ভোটারের আঙুলের ছাপ লাগবে, সেহেতু এতে জালিয়াতির কোনো সুযোগ নেই বলে জানান ইসি সচিব।

“যদি কারো আঙুল না থাকে তাহলে জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী ওই ব্যক্তি ভোটগ্রহণ কর্মকর্তারা মাধ্যমে ভোট দিতে পারবেন। এ ধরনের ঘটনায় মাত্র এক শতাংশ ভোটারদের শনাক্ত করতে পারবেন ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা।

ঢাকা সিটি নির্বাচন সামনে রেখে ইভিএম প্রদর্শন এবং মক ভোটিংয়ের ব্যবস্থা রেখেছে নির্বাচন কমিশন

“এক শতাংশের বেশির প্রয়োজন হলে রিটার্নিং কর্মকর্তার অনুমতি নিতে হবে। আরো বেশি লাগলে কমিশনের অনুমতি লাগবে। পরবর্তীতে চাইলে এই ইভিএমের তথ্য জানা যাবে।”

আইডি কার্ড মিলেছে, আঙুলের ছাপ মিলছে না বা আঙুল নেই- এমন ভোটারদের ক্ষেত্রে এ সুযোগ ব্যবহার করা যাবে।

মো. আলমগীর বলেন, “ভোটের তথ্য আমাদের কাছে ডিজিটালি সংরক্ষণ করা থাকে। মামলা করারও সুযোগ রয়েছে। কেউ ইচ্ছা করলে এ নিয়ে আদালতেও যেতে পারেন। কেউ চ্যালেঞ্জ করলে তথ্য দেখানো যাবে।”

কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা থাকলে সচল রাখার অনুরোধ

দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কিছু কিছু কেন্দ্র সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকবে বলে জানান সচিব।

তিনি বলেন, “ভোটকেন্দ্র হিসেবে নির্ধারিত যেসব প্রতিষ্ঠানে আগে থেকেই সিসি ক্যামেরা আছে, সেগুলোকে সচল রাখতে বলা হয়েছে, যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে দোষীদের চিহ্নিত করা যায়। তবে কেন্দ্রগুলোর বুথে কোনোভাবেই যাতে কোনো সিসি ক্যামেরা না থাকে সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।”