গোপীবাগের ঘটনা বিএনপির পূর্বপরিকল্পিত: এইচটি ইমাম

ঢাকা দক্ষিণে মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেনের প্রচারে সহিংসতার ঘটনা বিএনপির সাজানো বলে দাবি করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো চেয়ারম্যান এইচ টি ইমাম।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Jan 2020, 01:47 PM
Updated : 27 Jan 2020, 01:52 PM

দলের একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে সিইসি ও অন্য নির্বাচন কমিশনাদের সঙ্গে সোমবার বৈঠকের পর তিনি বিএনপিকে উদ্দেশ করে বলেছেন, ‘চোরের মায়ের বড় গলা’।

গোপীবাগে বিএনপির প্রার্থী ইশরাকের কর্মীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সমর্থিত দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সংঘর্ষের ঘটনার পরদিন নির্বাচন ভবনে গেল আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দল।

এইচটি ইমাম সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা এসেছিলাম গতকালের ঘটনা কমিশনকে অবহিত করতে। তথ্য প্রমাণ নিয়ে এসেছি।....পুরো ঘটনাটি একটি সাজানো, পূর্বপরিকল্পিত। বিএনপি ক্যাডাররা এমনভাবে করেছেন, তাতে প্রমাণ হয়, তারা আগে থেকে তৈরি হচ্ছিল।”

নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া প্রমাণে বিষয়ে তিনি বলেন, “বিএনপি প্রার্থী নিজেহই অন্যদের উপর হাত তুলতে যাচ্ছেন, মারতে যাচ্ছেন, আক্রমণমুখী, এমন তথ্য দেওয়া হয়েছে।”

ইশরাক অভিযোগ করেছেন, সোমবার তিনি প্রচার চালানোর সময় পরিকল্পিতভাবে তার উপর হামলা হয়েছিল।

ইশরাক ‘নাটক করে থাকতে পারেন’ মন্তব্য করে এইচ টি ইমাম বলেন, “তার পিতা মরহুম সাদেক হোসেন খোকা কীভাবে নিজের মাথায় পট্টি বেঁধে ও গরুর রক্ত গায়ে মেখে এমনভাবে সেজে এসে ইউনাইটে হাসতপালে ভর্তি হয়েছিলেন। এ ধরনের নাটক করার অভ্যাস তাদের রয়েছে। এ ধরনের নাটক আজকেও করে থাকতে পারে।”

এইচ টি ইমাম পাল্টা অভিযোগ করেন, নির্বাচন বানচালের উদ্দেশ্যে কাজ করছে বিএনপি-জামায়াত জোট।

“২০১৪-১৫ সালে তখনকার অগ্নি সন্ত্রাসের সময় বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন অঞ্চলে অংশ নিয়েছিল, পরবর্তীতে বিভিন্ন মামলায় ছাড়া পেয়েছে, বাইরে আছে, তাদের অনেককেই ঢাকায় নিয়ে আসা হয়েছে। তারা বিভিন্ন জায়গা থেকে অস্ত্র সজ্জিত হয়ে ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন। সুযোগ মতো পরিস্থিতি এমন সৃষ্টি করতে পারেন, যাতে নির্বাচনটি বানচাল হয়ে যায়।”

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের এই সদস্য বলেন, এ ধরনের ঘটনায় বড় ভূমিকা রাখছেন ‘জামায়াত-শিবিরের সশস্ত্র ক্যাডাররা’।

ক্ষমতাসীন দল হিসেবে ভোটের পরিবেশ নষ্ট করতে আওয়ামী লীগ চায় না না বলে মন্তব্য করেন দলটির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এইচ টি ইমাম।

“আমরা কী চাইব মারামারি করে নির্বাচন নষ্ট হোক? আমাদের প্রার্থীর বিজয় সুনিশ্চিত। এ ধরনের কর্মকাণ্ড যাতে না হয় সেটাই দেখছি আমরা।”

সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের আহ্বান

আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, “বিএনপি-জামায়াত শিবিরের সশস্ত্র সন্ত্রাসী, অগ্নি সন্ত্রাসীদেরকে অবিলম্বে আইনের আওতায় আনা হোক। তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হোক।”

কমিশনের কাছে এমন আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “ঢাকাবাসীর জীবনমান রক্ষার জন্য, তাদের নিরাপত্তার জন্যে এ নির্বাচনকে উৎসবমুখর করার জন্য, সবার অংশগ্রহণমূলক করার পরিবেশ তৈরির অনুরোধ জানিয়েছি।”

১৯৯৪ সালে ঢাকায় আওয়ামী লীগের মো. হানিফ মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর সাতজন নেতা-কর্মীকে গুলি করে হত্যার তথ্য তুলে ধরে নানক বলেন, “এটা তাদের পুরনো চরিত্র। সন্ত্রাসের চরিত্র, অগ্নি সন্ত্রাস, ভোট কারচুপি, বানচালের চরিত্র।”

আচরণবিধি ‘মানছি’

এইচ টি ইমাম বলেন, “আমরাই আচরণবিধি মেনে চলছি। এমপি মন্ত্রীরা যাচ্ছেন না।...রিটার্নিং অফিসার দেখভাল করছে। আগামীকাল থেকে নির্বাহী হাকিম বাড়বে। আচরণবিধি লঙ্ঘিত হলে ব্যবস্থা নেব।”

তিনি জানান, গোপীবাগের ঘটনা নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে এফআইআর দেওয়া হয়েছে, কমিশন পুলিশকে এ বিষয়ে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যে বলবে।