ভিয়েতনামের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে জোর প্রধানমন্ত্রীর

পারস্পরিক স্বার্থে বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের মধ্যে সম্পর্ক জোরদারের উপর গুরুত্ব দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Jan 2020, 06:29 PM
Updated : 26 Jan 2020, 06:29 PM

ভিয়েতনামের নতুন রাষ্ট্রদূত ফাম ভিয়েত চিয়েন রোববার দেখা করতে গেলে প্রধানমন্ত্রী তাকে বলেন, দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে সংযোগ বৃদ্ধি করা গেলে এটি একটি বড় বাজারে পরিণত হবে।

সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তাদের বৈঠকের পর আলোচনার বিষয়বস্তু সাংবাদিকদের জানান প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের স্বাধীনতা সংগ্রামের অভিন্ন ইতিহাস রয়েছে। দুদেশের জনগণই নিজ নিজ দেশকে স্বাধীন করতে সর্বোচ্চ ত্যাগ করেছে।

আওয়ামী লীগের আমলে বাংলাদেশের ‘বিস্ময়কর’ উন্নয়ন তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকারের লক্ষ্য হলো জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলা। তার সরকার সেই লক্ষ্য অর্জনে কাজ করে যাচ্ছে।

“আমরা জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৮.১৫ শতাংশে উন্নীত করেছি এবং দারিদ্র্যের হার ২০ শতাংশে নামিয়ে এনেছি।”

ভিয়েতনামিদের সাহসী হিসাবে বর্ণনা করে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সেদেশের ব্যাপক উন্নয়নের প্রশংসাও করেন তিনি।

এ বছর জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ ‘মুজিব বর্ষ’ উদযাপন করছে এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করবে।

শেখ হাসিনা রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে ভিয়েতনামের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীকে ‘মুজিব বর্ষ’ কর্মসূচিতে অংশ নিতে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।

ভিয়েত চিয়েনও ভিয়েতনামের রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তার দেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।

ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক বিকাশের, বিশেষত উচ্চ প্রবৃদ্ধির প্রশংসা করেন।

তিনি প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, বাংলাদেশের বিশাল অর্জন দেখে তিনি খুব খুশি।

বাংলাদেশ সরকার ঘোষিত রূপকল্প-২০২১ ও ২০৪১ এর সঙ্গে ভিয়েতনামের উন্নয়ন পরিকল্পনায় মিল থাকার কথাও বলেন রাষ্ট্রদূত।

তিনি বলেন, “আমরা ভাইয়ের মতো এবং আমি আমার সরকারকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম যে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা করব।”

প্রেস সচিব বলেন, রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ ভবন পরিদর্শন করে অভিভূত হয়েছেন।

বৈঠকে প্রেস সচিব ছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস উপস্থিত ছিলেন।

বিমসটেক মহাসচিবের সাক্ষাৎ

আঞ্চলিক সংস্থা বিমসটেকের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর বৃহত্তর স্বার্থে কোস্টাল শিপিং চুক্তি সম্পাদনের উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিমসটেক মহাসচিব শহিদুল ইসলাম রোববার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার জাতীয় সংসদ ভবন কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাতে গেলে তিনি এ কথা বলেন।

প্রেস সচিব ইহসানুল করিম প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে সাংবাদিকদের  বলেন, “এ আঞ্চলিক সংস্থার সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে পানি পথে সংযোগ বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে বিমসটেক কোস্টাল শিপিং চুক্তি সম্পাদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা খুবই প্রয়োজন।”

একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বিমসটেক সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে বাণিজ্যিক সহযোগিতা জোরদারের উপরও গুরুত্ব আরোপ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৬৫ সালের যুদ্ধের পরে বন্ধ হয়ে যাওয়া বাণিজ্যিক রুটগুলো ধীরে ধীরে পুনরায় খুলে দেওয়া হচ্ছে। ফলে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সংযোগ আরও জোরদার হবে।

শহিদুল প্রধানমন্ত্রীকে জানান, বিমসটেক মোটর ভেহিক্যাল চুক্তি ও বিমসটেক কোস্টাল শিপিং চুক্তি সম্পন্ন করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

তিনি প্রধানমন্ত্রীকে বিমসটেক সচিবালয়ের কর্মকান্ড সম্পর্কেও অবহিত করে বলেন, সংস্থার সাত সদস্য রাষ্ট্রের সবাই এর মধ্যে ঢাকায় সচিবালয়ে তাদের পরিচালক নিযুক্ত করেছে।

শহিদুল বলেন, বিশ্ব ব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) বিমসটেকের উন্নয়ন তহবিলে সহায়তা করতে আগ্রহী।

এর আগে সাবেক ব্রিটিশ এমপি কিথ ভাজ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন বলে জানান প্রেস সচিব।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী লেবার পার্টির এই সাবেক এমপিকে মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেন।