নবম ওয়েজ বোর্ড নিয়ে রুল দ্রুত নিষ্পত্তির নির্দেশ

সংবাদপত্র ও বার্তা সংস্থার কর্মীদের নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারণ করে প্রকাশিত নবম ওয়েজ বোর্ডের গেজেট অবৈধ ঘোষণা প্রশ্নে জারি করা হাই কোর্টের রুল দ্রুত নিষ্পত্তি করতে বলেছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Jan 2020, 10:46 AM
Updated : 26 Jan 2020, 02:11 PM

তবে ওই গেজেটের ওপর হাই কোর্টের দেওয়া স্থিতাবস্থার আদেশ আপাতত স্থগিতই থাকছে। ফলে ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়নে আপাতত কোনো বাধা থাকছে বলে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম জানিয়েছেন।

রাষ্ট্রপক্ষ ও নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের (নোয়াব) দুটি লিভ টু আপিলের নিষ্পত্তি করে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে চার বিচারকের আপিল বেঞ্চ রোববার এই আদেশ দেয়।

নোয়াবের পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এ এম আমিনউদ্দিন ও মো. ইউসুফ আলী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

২০১৫ সালে সরকারি কর্মচারীদের নতুন বেতন কাঠামো ঘোষণার পর থেকেই নতুন বেতন কাঠামোর দাবি জানিয়ে আসছিল সাংবাদিকদের সংগঠনগুলো। এ দাবিতে তারা বিভিন্ন কর্মসূচিও পালন করেছেন।

দীর্ঘদিন বিষয়টি ঝুলে থাকার পর আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. নিজামুল হককে প্রধান করে ২০১৮ সালের ২৯ জানুয়ারি ১৩ সদস্যের নবম ওয়েজবোর্ড গঠন করা হয়।

পরে নিউজপেপারস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়াব) পক্ষে সংগঠনটির সভাপতি মতিউর রহমান গত বছরের মে মাসে একটি রিট আবেদন করেন।

প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাই কোর্ট বেঞ্চ গত ৬ অগাস্ট ওয়েজবোর্ডের গেজেট প্রকাশের ওপর দুই মাসের স্থিতাবস্থা জারি করে।

হাই কোর্টের এ আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। সে আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ২০ অগাস্ট আপিল বিভাগ হাই কোর্টের আদেশটি ৮ সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে দেয়।

ওই সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষকে হাই কোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে নিয়মিত লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করতে বলে সর্বোচ্চ আদালত। এরপর আপিল বিভাগের আদেশ প্রত্যাহার চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে নোয়াব।

এরই মধ্যে ১১ সেপ্টেম্বর সংবাদপত্র ও বার্তা সংস্থার কর্মীদের জন্য মূল বেতনের ৪৫ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা ঘোষণা করে সরকার, যা ২০১৮ সালের ১ মার্চ থেকে কার্যকর করার কথা বলা হয়।

বিচারপতি নিজামুল হক গত ৪ নভেম্বর তখনকার তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর কাছে সংবাদকর্মীদের বেতন-ভাতা সর্বোচ্চ ৮৫ শতাংশ বৃদ্ধির সুপারিশ করে তাদের প্রতিবেদন জমা দেন। তার ভিত্তিতে  নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারণ করে গতবছর ১২ সেপ্টেম্বর ওয়েজ বোর্ডের গেজেট প্রকাশ করে সরকার।

তা চ্যালেঞ্জ করে একটি সম্পূরক অবেদন করেন নোয়াব সভাপতি দৈনিক প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের হাই কোর্ট বেঞ্চ ১৫ অগাস্ট রুল জারি করে। নবম ওয়েজ বোর্ডের গেজেট কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চাওয়া হয় রুলে।

এরপর আপিল বিভাগে রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিল এবং আপিল বিভাগের আদেশ প্রত্যাহার চেয়ে নোয়াবের আবেদনের শুনানি করে রোববার তা নিষ্পত্তি করে দিল আপিল বিভাগ। সেই সঙ্গে ১৫ অগাস্ট জারি করা হাই কোর্টের রুল দ্রুত নিষ্পত্তির নির্দেশ দিল।