ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা থেকে এক মাসে ভোটের পরিবেশ নিয়ে সন্তোষ রয়েছে নির্বাচন কমিশনের।
Published : 23 Jan 2020, 12:22 AM
বিএনপির একজন মেয়র প্রার্থীর প্রচারে হামলা ছাড়া আর বড় কোনো ঘটনা না থাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছেও তা ‘উৎসবমুখর পরিবেশের’ স্বস্তি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
তবে ভোটের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে তাতে মোটাদাগে অন্তত দুটি বিষয়ে কড়া নজর রাখার কথা বলেছেন সংশ্লিষ্টরা।
এরমধ্যে সোশাল মিডিয়ায় গুজব ছড়ানো যেন না হয় এবং অনেকের বিরুদ্ধে মামলার রেকর্ড ও বিদ্রোহী প্রার্থীদের কোন্দলকে কেন্দ্র করে নির্বাচনী পরিবেশ যেন বিঘ্ন না ঘটে সেদিকে কঠোর নজরদারির কথা বলেছেন তারা।
সিইসির সন্তোষ
আইন শৃঙ্খলা সভায় তিনি বলেন, “সবার নজর ঢাকা সিটি ভোটের দিকে। কোনো অনিয়ম দেখতে চায় না কমিশন, কঠোর অবস্থানে ইসি। জনগণ, প্রার্থীর মধ্যে মহোৎসবের আমেজ তৈরি হয়েছে। এরপরও অভিযোগ থাকতে পারে, কোথাও ত্রুটি বিচ্যতি থাকতে পারে, দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছে রিটার্নিং কর্মকর্তা।”
আইন শৃঙ্খলাবাহিনীসহ সংশ্লিষ্টদের সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিয়ে সিইসি বলেন, “একজন ভোটার যেন নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে, কেন্দ্রে যেতে পারে, নিশ্চিন্তে বাড়ি যেতে পারবে। প্রার্থী ও এজেন্টও যথাযথ দায়িত্ব পালন করবেন। সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য উপায়ে সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।”
পরিবেশ উৎসবমুখর থাকবে: আইজিপি
পুলিশের মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ায়ারী বলেছেন, ভোটের পরিবেশ শেষ পর্যন্ত উৎসব মুখর থাকবে এবং তার জন্যে আইন শৃঙ্খলাবাহিনী কাজ করছে।
নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে বিএনপির মেয়র প্রার্থীদের শঙ্কার মধ্যে আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর তৎপরতার কথা তুলে ধরেন তিনি।
নির্বাচন কমিশনের ৩ ঘণ্টার বৈঠক শেষে আইজিপি বলেন, “উৎসবমুখর পরিবেশ রয়েছে। এ পর্যন্ত উল্লেখ করার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি। পুলিশ সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা গ্রহণ করেছে। আশা করি, এমন উৎসবমুখর পরিবেশ শেষ পর্যন্ত বজায় থাকবে।”
‘শান্তিপূর্ণ’ পরিবেশে সবাই প্রচারণা চালাচ্ছেন দাবি করে তিনি বলেন, “যে কয়দিন রয়েছে ভোটের এমন চমৎকার পরিবেশ থাকবে।”
আরও উন্নতি হবে: ইসি সচিব
বৈঠক শেষে আইন শৃঙ্খলা সভার সার্বিক বিষয়ে সাংবাদিকদের জানান ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীর।
তিনি বলেন, “নির্বাচনের পরিবেশ ভালো আছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, নির্বাচনের পরিবেশ ভালো আছে। এক্ষেত্রে ১০০ নম্বরের মধ্যে ৯৫ নম্বর নিয়ে ভোটের কার্যক্রম এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা হয়ত শতভাগ করতে পারিনি, উত্তরের যে অভিযোগটি এসেছে সেটার ক্ষেত্রেও সাথে সাথে নির্বাচন কমিশন রিটার্নিং অফিসারকে নির্দেশ দিয়েছে।”
সচিব জানান, নির্বাচনের দুই দিন আগে আরও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হবে। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটও সে সময় মাঠে থাকবে।
‘শান্তিপূর্ণ পরিবেশের’ যেন অবনতি না হয় সে দিকে নজর রয়েছে রয়েছে কমিশনের।
“এখন পরিস্থিতি যা আছে তা তো থাকবেই। আশা করি, আরও ভালো হবে।”
গুজব ও কোন্দল যেন সমস্যা না হয়
আইন শৃঙ্খলা সভায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রার্থী বা দল বা ভোটারদের নিয়ে গুজব রটানোর শঙ্কা উঠে এসেছে। ভোটের পরিবেশে নেতিবাচক প্রভাব রুখতে যাতে এ ধরনের অপতৎপরতা রোধ করা যায়, সে বিষয়ে নজরদারি চাওয়া হয়েছে।
এ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে বলা হয়েছে, “গুজব ঠেকাতে সাইবার সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স বিশেষজ্ঞদের কাজ করতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের উপর নজরদারি করতে হবে।”
সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সোশাল মিডিয়া মনিটর করা হচ্ছে বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ইতোমধ্যে জানিয়েছেন।
কাউন্সিলর পদে দলীয় প্রতীকে ভোট না থাকলেও দল সমর্থন নিয়ে ভোট করছেন প্রার্থীরা। এরমধ্যে বেশ কিছু ওয়ার্ডে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে অনেকে প্রার্থী হয়েছে।
অভ্যন্তরীণ কোন্দলকে কেন্দ্র করে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডগুলোতে যেন সংঘর্ষ বা অশান্ত পরিবেশ না ঘটে তা চিহ্নিত করে নজর রাখার প্রসঙ্গটিও এসেছে আলোচনায়।
হলফনামা অনুযায়ী কিছু প্রার্থীর অনেক মামলা (অতীত-বর্তমান) থাকার পরও ভোটে অংশগ্রহণের সুযোগ পাওয়ার বিষয়টিও উঠেছে। সাজাপ্রাপ্ত না হলে ভোট থেকে বিরত রাখার আইনি বিধানও নেই।
সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তাদের কার্যক্রমে যাতে সমস্যা না হয় সেদিকেও নজর রাখার কথা বলা হয়েছে।