বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম ভবন ভাঙার কাজের উদ্বোধন করেন। মন্ত্রী নিজ হাতে মেশিন দিয়ে ভবনের নিচতলার মেঝের কিছু অংশ উপড়ে দেন।
ভাঙার কাজ চালু করে দেওয়া হলেও শ্রমিকদের নিয়ে পুরোদমে কাজ শুরু হবে আগামী সোমবার।
এদিন ভবন ভাঙার কাজ পুরোদমে শুরুর পরিকল্পনা না থাকলেও রাজউকের ৪/৫টি এক্সক্যাভেটর এনে রাখা বিজিএমইএ ভবনের কাছে। উদ্বোধনী শেষে সেগুলো আবার ফিরিয়ে নেওয়া হয়।
উদ্বোধন শেষে গণপূর্ত মন্ত্রী বলেন, সুন্দর ঢাকার দৃষ্টিনন্দন হাতিরঝিলের ওপরে অপরিকল্পিতভাবে এবং বেআইনিভাবে বিজিএমইএর এই ভবন গড়ে উঠেছিল। সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে এই ভবন অপসারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কোনো আইনগত ত্রুটি যাতে না থাকে সেজন্য পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে ঠিকাদারের মাধ্যমে ভাঙার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
“সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে প্রথমে যাকে পেয়েছিলাম তিনি কারিগরি কারণে পরে অপারগতা জানিয়েছেন। সে কারণে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দরদাতাকে দিয়ে এই ভবন ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে।”
ভবনটি ভাঙার ক্ষেত্রে যেকোনো দুর্ঘটনা এড়াতে একাধিক সরকারি কর্তৃপক্ষের সার্বক্ষণিক নজরদারি থাকবে বলেও জানান মন্ত্রী।
প্রথমে অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে ভবন ভাঙার উদ্যোগ নেওয়া হলেও পারিপার্শ্বিক পরিবেশ বিবেচনায় সরকার সেই পথ থেকে সরে আসে।
“প্রথমে অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে ভাঙার কথা ভাবা হলেও পরে দেখা গেছে পাশে একটি ফাইভ স্টার হোটেলসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান আছে। ওই জাতীয় কাজ করতে গেলে এর গতিবেগ ও শক্তিতে চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়লে অনেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। সবদিকে ধুলা ছড়িয়ে পড়লে পরিবেশেরও ক্ষতি হবে। সেজন্য যান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভাঙার সিদ্ধান্ত হয়েছে।”
ভবন ভাঙার পুরো প্রক্রিয়া সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবগত আছেন বলেও জানান মন্ত্রী।
ভবন ভাঙার কাজ পাওয়া ফোর স্টার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদ ও পরিচালক নসরুল্লাহ খান এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
পরে নসরুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, মূলত আগামী সোমবার থেকে ভবন ভাঙার মূল কাজ শুরু হবে।
এদিকে ভবন ভাঙা প্রসঙ্গে বিজিএমইএর বর্তমান সভাপতি রুবানা হক বলেন, ভবনটি উচ্ছেদে আদালতের রায়ের প্রতি তাদের পূর্ণ শ্রদ্ধা রয়েছে।
“তবে এতো বড় স্থাপনা উচ্ছেদে যুক্ত শ্রমিকদের নিরাপত্তার বিষয়টি যেন সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়- মালিকদের পক্ষ থেকে সেই দাবি থাকবে।”
বিজিএমইএ ভবনকে হাতিরঝিল প্রকল্পের ‘ক্যান্সার’ আখ্যায়িত করে হাই কোর্ট ২০১১ সালে এক রায়ে ইমারতটি ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেয়। পরে আপিল বিভাগেও তা বহাল থাকে।
সর্বোচ্চ আদালত বিজিএমইএ ভবন ভাঙার রায় দেওয়ার পর কয়েক দফায় সময় নিয়েছিল তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকরা। সবশেষ আদালতের দেওয়া সাত মাস সময়সীমা গত ১২ এপ্রিল শেষ হয়।