পরপর চারজন এমপির মৃত্যু কষ্টকর: প্রধানমন্ত্রী

পরপর চারজন সংসদ সদস্যের মৃত্যুকে সংসদের জন্য একটা কষ্টকর বিষয় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Jan 2020, 01:34 PM
Updated : 21 Jan 2020, 01:34 PM

যশোর-৬ আসনের সংসদ সদস্য ইসমাত আরা সাদেকের মৃত্যুতে মঙ্গলবার সংসদে উত্থাপিত শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এটা কষ্টকর। এবারের নির্বাচনের পর অনেক সদস্যদের আমরা হারিয়েছি। জানিনা এবার আমাদের সংসদের কি রকম একটা দুর্ভাগ্য যে পর পর আমাদের চারজন সংসদ সদস্য মৃত্যুবরণ করলেন।

“ডা. ইউনুস চলে গেলেন, ডা. মোজাম্মেল সাহেব মারা গেলেন, মান্নান এখানে দাঁড়িয়ে কথা বলার তিনদিন পর শুনলাম সে আর নেই। আবার আজকে সকালে ইসমাত আরা সাদেক এভাবে মারা গেলেন।”

গত ২৭ ডিসেম্বর গাইবান্ধা-৩ আসনের সংসদ সদস্য মো. ইউনূস আলী সরকার, ৯ জানুয়ারি রাতে বাগেরহাট-৪ আসনের সংসদ সদস্য সাবেক প্রতিমন্ত্রী মো. মোজাম্মেল হোসেন এবং ১৮ জানুয়ারি বগুড়া-১ আসনের সংসদ সদস্য ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আবদুল মান্নান মারা যান। আর মঙ্গলবার সকালে মারা যান সংসদ সদস্য ইসমাত আরা সাদেক।

মারা যাওয়া সাংসদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে ইসমাত আরা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “উনাকে মন্ত্রিসভায় দায়িত্ব দিতে চাইলে উনি তা পালনে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ছিলেন। পারবেন কীনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন। তবে আমি তাকে সহযোগিতার আশ্বাস দেই। অত্যন্ত গোছালোভাবে তিনি কাজ করতেন। প্রতিটি কাজ তিনি সুষ্ঠুভাবে সততা, নিষ্ঠার সাথে করতেন। উনার একাগ্রতা, সততা ছিল অসামান্য।”

সম্প্রতি ইসমাত আরার সঙ্গে সাক্ষাতের প্রসঙ্গ তুলে শেখ হাসিনা বলেন, “উনি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আগে আমার সাথে দেখা করেন। তখন অসুস্থতার কথা বললেন, অনেকক্ষণ আলাপ আলোচনা হল। একটা অপারেশন করার কথা জানালেন। এ বয়সে অপারেশন করবেন কীনা তা চিন্তা করতেও বললাম। অসুস্থতার খোঁজ খবর নিলাম, বললাম ঘাবড়াবেন না, চিকিৎসা আধুনিক হয়ে গেছে। এটাও বললাম আমাদের সবার তো বয়স হয়ে গেছে আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।

“জবাবে বললেন, আমি তো আপনার থেকে বড়। আমি বললাম মৃত্যু তো বয়স দেখে আসে না। যেকোনো সময়েই আসতে পারে। উনি চলে গেলেন, হাসপাতালে ভর্তি হলেন। পরে শুনলাম উনি স্ট্রোক করেছেন, অবস্থা ভালো না। অপারেশন পর্যন্ত উনাকে নেওয়াই গেল না।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “মৃত্যু এভাবেই আসে। তবে উনাকে ভুগতে হল না, কষ্ট করতে হল না। এটাই হচ্ছে বড় কথা।”

এলাকার উন্নয়নে ইসমাত আরা সাদেক অনেক কাজ করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, “তিনি এলাকার উন্নয়নে ব্যাপক কাজ করেছেন। নির্বাচনী এলাকা কেশবপুর আলোকিত করেছেন। অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে এলাকার উন্নয়নে কাজ করে গেছেন। হঠাৎ করে এত তাড়াতাড়ি চলে যাবেন তা ভাবতে পারিনি।”

সংসদে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর আনা শোক প্রস্তাবের ওপর তোফায়েল আহমেদ, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, উপাধক্ষ্য আব্দুস শহীদ,কাজী নাবিল আহমেদ, ওয়াসিকা আয়শা খানম, আ কা ম সরওয়ার জাহান বাদশা ও জাতীয় পার্টির রওশন আরা মান্নান বেশ কয়েকজন আলোচনা করেন।

সর্বসম্মতক্রমে শোকপ্রস্তাব গ্রহণের পর রেওয়াজ অনুযায়ী সংসদ অধিবেশন মুলতুবি করেন স্পিকার।

এর আগে ইসমাত আরা সাদেকের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন ও মোনাজাত করা হয়।