হালনাগাদে যুক্ত হতে যাওয়া নতুন ভোটার ও মৃতদের বাদ দিয়ে এ বছর বাংলাদেশে মোট ভোটার সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে প্রায় ১১ কোটি।
Published : 20 Jan 2020, 09:40 PM
সোমবার নির্বাচন ভবনে ২০১৯ সালের ভোটার তালিকা হালনাগাদের খসড়া প্রকাশ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম জানান, নতুনদের নিয়ে এখন ভোটার ১০ কোটি ৯৬ লাখ ৬ হাজার ১৮৭ জন। এরমধ্যে নারী-পুরষের অনুপাত প্রায় সমান সমান। হিজড়া ৩৫৩ জন।
নতুন যুক্ত হওয়ার ৬৭ লাখ ৫৮ হাজার ও ৩৪১ জন ভোটারের তথ্য দেশের সর্বত্র স্থানীয় পর্যায়ে প্রকাশ করা হয়।
এদিন জেলা নির্বাচন অফিস, উপজেলা নির্বাচন অফিস, ইউনিয়ন-ওয়ার্ড-ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড- অথবা গুরুত্বপূর্ণ দর্শনীয় স্থান ও সংশোধনকারী কর্তৃপক্ষের অফিসে খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।
এনিয়ে কারও দাবি-আপত্তি ৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জানানোর সুযোগ রয়েছে; ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তা নিষ্পত্তি করা হবে এবং ২০ ফেব্রুয়ারি এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত সন্নিবেশ করা হবে।
এরপরই ১ মার্চ হালনাগাদের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে।
এনআইডি উইংয়ের মহাপরিচালক জানান, হালনাগাদে নতুন ভোটার যুক্ত হয়েছে ৬৭ লাখ ৫৮ হাজার ৩৪১ জন; বর্তমান তালিকা থেকে মৃত ভোটার বাদ যাবে ১৩ লাখ ৯২ হাজার ২৩৬ জন।
সর্বশেষ গত বছরের ৩০ ডিসেম্বরের একাদশ সংসদ নির্বাচনের সময় ভোটার ছিল ১০ কোটি ৪২ লাখ ৪০ হাজার ৮২ জন।
হালনাগাদ তথ্য >> ৩১ জানুয়ারি, ২০১৮: ভোটার সংখ্যা- ১০,৪১,৪২,৩৮১। পুরুষ ৫,২৫,১২,১০৫ জন, নারী ৫,১৬,৩০,২৭৬। >> ২০১৯ হালনাগাদে নতুন ভোটার- ৬৭,৫৮,৩৪১ জন। পুরুষ ৩৫,৮২,১৬৩ জন, নারী ৩১,৭৫,৮২৫ জন; হিজড়া ৩৫৩ জন। >> মৃত্যুর কারণে বাদ- ১৩,৯২,২৩৬ জন। >> এক বছরে বেড়েছে (মৃত বাদ, নতুন যোগ)- ৫৩,৬৬,১০৫ জন (৫.১৫%) >> ২০ জানুয়ারি, ২০২০ মোট ভোটার- ১০,৯৬,০৬,১৮৭ জন; পুরুষ ৫,৫৩,২৫,২৯২ জন (৫০.৪৭%); নারী ৫,৪২,৮০,৫৪২ জন (৪৯.৫২%); হিজড়া ৩৫৩ জন। >> দ্বৈত ভোটার- ২,০৭,৬৩৫ জন (যাদের হিসাবে বাদ রাখা হয়েছে)। |
প্রথমবারের মতো এবছর ৩৫৩ জন তৃতীয় লিঙ্গের নাগরিক ‘হিজড়া’ পরিচয়ে ভোটার তালিকাভুক্ত হয়েছে।
৪ বছরের তথ্য একসঙ্গে
এবার হালনাগাদে চার বছরের (২০০১-২০০৪ বছরের আগে যাদের জন্ম) প্রায় ৯৬ লাখ নাগরিকের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।
এর মধ্যে ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি যাদের বয়স ১৮ বছর বা তার বেশি হয়েছে, এমন ৬৭ লাখের খসড়া প্রকাশ করা হল। বাকিদের খসড়া স্বয়ংক্রিয়ভাবে ২০২১ ও ২০২২ সালে ভোটার উপযোগী হলেই প্রকাশ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনকালে ইসির অতিরিক্ত সচিব মোখলেসুর রহমান, ঢাকা উত্তর সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল কাসেম ও দক্ষিণের রিটার্নিং কর্মকর্তা আব্দুল বাতেনও উপস্থিত ছিলেন।
রোহিঙ্গা ভোটার ‘নেই’
এনআইডি উইংয়ের মহাপরিচালক সাইদুল ইসলাম দাবি করেন, হালনাগাদ ভোটার তালিকায় কোনোভাবেই রোহিঙ্গারা ভোটার হতে পারেনি। সবার আঙুলের ছাপ ও আইরিশ যাছাইয়েরে পর তথ্য ডেটাবেইজে আপলোড করা হয়েছে।
রোহিঙ্গাদের জালিয়াতির মাধ্যমে এনআইডি নিয়ে চলমান তদন্তের অগ্রগতিও জানান তিনি।
সাইদুল বলেন, “ইতোমধ্যে জালিয়াতিতে সম্পৃক্ত কিছু সদস্যকে ধরা হয়েছে। এ ধরনের অপরাধে কাউকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না; আগামীতেও কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। কোনোভাবেই বিদেশি নাগরিকদের ভোটার তালিকাভুক্ত করা যাবে না।”
চলমান হালনাগাদে ২ লাখ ৭ হাজার ৬৩৫ জন দুই স্থানে ভোটার হওয়ার অপচেষ্টা করেছেন বলে জানান তিনি।
“যারা দ্বৈত ভোটার হওয়ার চেষ্টা করেছে, তাদের শনাক্ত করা হয়েছে। বিষয়টি যাচাই বাছাই করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
কমবয়সীদের এনআইডি
ভোটারদের পাশাপাশি কমবয়সীদেরও জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান এনআইডি উইং মহাপরিচালক।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুল বলেন, “দেশের সব নাগরিকেরই এনআইডি পাওয়ার অধিকার রয়েছে। তবে আমরা বর্তমানে ১০ বছর বয়সীদের এনআইডি দেওয়ার লক্ষ্যে কার্যক্রম হাতে নিচ্ছি। ধীরে ধীরে সবাইকেই দেওয়া হবে।”
ইতোমধ্যে ১৬ ও ১৭ বছর বয়সীদেরও তথ্য সংগ্রহ করার কথা তুলে ধরেন তিনি।
“তাদের ১০ আঙুলের ছাপ, ছবি এবং চোখের আইরিশের প্রতিচ্ছবিও নেওয়া হয়েছে। জেলা পর্যায়ে আমাদের কার্যক্রম চলছে। দ্রুততম সময়ে তাদের আমরা এনআইডি দেব। আমাদের আরেকটি প্রকল্পের কাজও নেওয়া হচ্ছে। কমবয়সীরা এনআইডি পেলেও ১৮ বছর বয়স হলেই তারা ভোটার হবেন।”