ডিবিসি টেলিভিশনের চিত্রগ্রাহক আল আমিন (২৩) রোববার দুপুর ১টার দিকে ঢাকার আদালত চত্বরে হামলার শিকার হন। হামলায় জড়িত আব্দুল মতিন নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে পুলিশ।
কয়েক মাস ধরে পালিয়ে থাকা এনু ও রূপমকে গত সোমবার কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যায় একটি বাড়ি থেকে গ্রেপ্তারের পর মুদ্রা পাচারের মামলায় হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।
দুদকের আরেক মামলায় গ্রেপ্তার দেখাতে রোববার দুই ভাইকে ঢাকা মহানগর যষ্ঠ বিশেষ জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালতে নেওয়া হয়। খবর শুনে তাদের ৪০/৫০ জন সমর্থক আদালত চত্বরে উপস্থিত হন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এনু-রুপনকে প্রিজন ভ্যান থেকে নামিয়ে আদালত ভবনের দোতলায় ওঠানোর সময় ডিবিসির ক্যামেরাপার্সন আল আমিন ভিডিও ধারণ করছিলেন। ওই সময় রুপন-এনুর ৮/১০ জন সমর্থক তাকে কিল-ঘুষি মারতে থাকে। তার ক্যামেরাটিও ভেঙে ফেলে।
আল আমিন সাংবাদিকদের বলেন, তার পকেটে থাকা ২০ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ফোনও ছিনিয়ে নেয় হামলাকারীরা।
ওই সময় পুলিশ এগিয়ে গেলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। তবে একজন ধরা পড়ে।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতখানার দায়িত্বে থাকা পুলিশ পরিদর্শক মুইনুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মতিন নামের একজনকে আটকের পর কোতোয়ালি থানায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এই ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়ে ডিবিসির আদালত প্রতিবেদক লিটন মাহমুদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এভাবে প্রকাশ্য আদালতে সাংবাদিকদের উপরে হামলায় আমরা শঙ্কিত।”
আহত আল আমিনকে মিটফোর্ড হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানোর কথা জানিয়ে তিনি বলেন, কোতোয়ালি থানায় তারা মামলা করবেন।
ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের পরিচালক এনু ছিলেন গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। আর তার ভাই রুপন ছিলেন থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
গত বছর ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার কয়েকটি ক্লাবের সঙ্গে ওয়ান্ডারার্সে অভিযান চালিয়ে জুয়ার সরঞ্জাম, কয়েক লাখ টাকা ও মদ উদ্ধার করে র্যাব।
এর ধারাবাহিকতায় গত ২৪ সেপ্টেম্বর গেণ্ডারিয়ায় প্রথমে এনু ও রুপনের বাড়িতে এবং পরে তাদের এক কর্মচারী এবং তাদের এক বন্ধুর বাসায় অভিযান চালিয়ে পাঁচটি সিন্দুকভর্তি প্রায় ৫ কোটি টাকা, আট কেজি সোনা এবং ছয়টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
তখন র্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, সিন্দুকে পাওয়া ওই টাকার উৎস ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের ক্যাসিনো। টাকা রাখতে জায়গা বেশি লাগে বলে কিছু অংশ দিয়ে সোনা কিনে রাখতেন এনামুল।
ওই ঘটনার পর মোট সাতটি মামলা করা হয় এনু ও রুপনের বিরুদ্ধে।