ওই সময় পর্যন্ত তাদেরকে গ্রেপ্তার ও কোনো ধরনের হয়রানি না করার আবেদনে প্রাথমিক শুনানি করে বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাই কোর্ট বেঞ্চে রোববার এ আদেশ দেয়।
তাদের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম।
আবেদনকারী অন্যরা হলেন-পত্রিকাটির সহযোগী সম্পাদক আনিসুল হক, কিশোর আলোর জ্যেষ্ঠ সহসম্পাদক মহিতুল আলম, প্রথম আলোর হেড অব ইভেন্ট অ্যান্ড অ্যাকটিভেশন কবির বকুল, নির্বাহী শাহ পরাণ তুষার ও নির্বাহী শুভাশীষ প্রামাণিক।
ব্যারিস্টার আমীর পরে সাংবাদিকদের বলেন, “সকালে মামলাটি (জামিন আবেদন) ফাইল করেছিলাম। মাননীয় আদালত প্রথমে সেটি বিকালে শুনানির জন্য নির্ধারণ করেছিলেন। যেহেতু সময় খুব সংকীর্ণ সেহেতু মাননীয় আদালত আদেশ দিয়েছেন নট টু হ্যারাস, নট টু অ্যারেস্ট (গ্রেপ্তার ও হয়রানি না করতে)। আগামীকাল এটা আইটেমের প্রথম দিকেই থাকবে। সুতরাং আগামীকাল আমরা আমাদের যুক্তি, প্রার্থনা আদালতে পেশ করব।”
আবেদনকারীরা নিম্ন আদালতে জামিন না চেয়ে সরাসরি হাই কোর্টে কেন জামিন চাইতে আসলেন জানতে চাইলে আমীর-উল ইসলাম বলেন, “যে ধরনের অ্যাকশনস (পদক্ষেপ) নিয়েছেন তারা (নিম্ন আদালত), সেই অ্যাকশনসটাকেই অযৌক্তিক মনে হয়েছে। সুতরাং হাই কোর্টে আসা ছাড়া অন্য কোথাও ইফেকটিভ রেজাল্ট পাওয়া যাবে না।
“তাছাড়া, যিনি ঘটনাস্থলেই ছিলেন না, যেখানে তার পিতা (নাঈমুল আবরার রাহাতের বাবা) ওসি সাহেবকে অনুরোধ করে চিঠি লিখেছেন যে, তিনি এ নিয়ে মামলা করবেন না। এটা দুর্ঘটনা। ফলে এটাকে আমাদের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রসিকিউশনস বলে মনে হয়েছে।”
তিনি বলেন, “আমাদের কাছে মনে হয়েছে যে, নিম্ন আদালতের আদেশে আইন ভঙ্গ হয়েছে। বেআইনিভাবে তাদের (জামিন আবেদনকারীদের) ব্যক্তি স্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ করেছে। সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ব্যক্তি স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়েছে, সেটাতে নিম্ন আদালত হস্তক্ষেপ করেছে।”
আবরারের অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগে করা মামলায় গত বৃহস্পতিবার ঢাকার অতিরিক্ত মূখ্য মহানগর হাকিম মো. কায়সারুল ইসলাম মতিউর রহমানসহ ১০ জনের নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
মোহাম্মদপুরে ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজে ক্যাম্পাসে এক অনুষ্ঠানে গত ১ নভেম্বর বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় নবম শ্রেণির ছাত্র আবরার রাহাত। মহাখালীর ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
ওই অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিল প্রথম আলোর কিশোর সাময়িকী কিশোর আলো। প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান কিশোর আলোরও প্রকাশক; আর কিশোর আলোর সম্পাদক হলেন আনিসুল হক।
আবরারের বাবা মো. মুজিবুর রহমান গত ৬ নভেম্বর প্রথম আলো সম্পাদকসহ অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনের বিরুদ্ধে আদালতে এ মামলা করেন। সেখানে দণ্ডবিধির ৩০৪ (ক) ধারায় অবহেলার কারণে মৃত্যুর অভিযোগ আনা হয়।