ভোটের তারিখ বদলালে আপত্তি নেই: কাদের

সরস্বতী পূজার দিনে ঢাকা সিটি নির্বাচনের ভোটের তারিখ নিয়ে জটিলতা নিরসনে নির্বাচন কমিশনকে দেশের হিন্দু ধর্মালম্বীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার পরামর্শ দিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Jan 2020, 09:45 AM
Updated : 17 Jan 2020, 12:15 PM

তিনি বলেছেন, “নির্বাচন কমিশন যদি মনে করে নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তন করবেন, এটা সম্পূর্ণভাবে তাদের এখতিয়ার। তারা এটি করতে পারেন। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ বা আওয়ামী লীগ সরকারে কিছুই করণীয় নেই এবং আমাদের কোনো আপত্তিও নেই।“

শুক্রবার ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমন্ডলীর সভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদেরের এ বক্তব্য আসে।

সরস্বতী পূজার মধ্যে ৩০ জানুয়ারি ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোট থাকায় তার বিরোধিতা করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী এবং কয়েকটি সংগঠন।

ভোটের তারিখ পরিবর্তনের জন্য এক আইনজীবীর করা রিট হাই কোর্টে খারিজ হয়ে গেলেও তিনি আপিল বিভাগে আবেদন করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের জানান, আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সভায় এদিন কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এর মধ্যে পূজার দিনে ভোটগ্রহণের বিষয়টিও ছিল।

“একজন প্রবীণ নেতা ড. কামাল হোসেন বলেছেন, পূজার দিনে সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করে সরকার বড় অন্যায় করেছে। আমি বলতে চাই, তারিখ কিন্তু আমরা নির্ধারণ করি নাই।

“নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, এ বিষয়টির এখতিয়ার তাদেরই। কবে শিডিউল, কবে তারিখ- এটা নির্বাচন কমিশনই দেখবে। এখানে সরকারের কিছু নেই। কাজেই সরকার এখানে অন্যায় করেছে- এ কথার যৌক্তিকতা খুঁজে পাওয়া যায় না।”

ভোটের তারিখ নিয়ে নির্বাচন কমিশনকে দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়ে সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, “পূজার কারণে আজকে যে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, যে সমস্যার উদ্ভব হয়েছে… হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দ্বিতীয় ধর্মীয় উৎসব এই দিন। আমরা মনে করি তাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে নির্বাচন কমিশন সম্মানজনক, গ্রহণযোগ্য, যৌক্তিক, বাস্তবসম্মত একটা সমাধান খুঁজে নেবে, এটাই আমরা আশা করি।”

সরকারি ক্যালেন্ডারে পূজার ছুটির তারিখ ধরেই ৩০ জানুয়ারি ভোটের তারিখ ঠিক করার যে তথ্য নির্বাচন কমিশন দিচ্ছে, সে বিষয়েও ওবায়দুল কাদেরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সাংবাদিকরা।

উত্তরে তিনি বলেন, “নির্বাচন সংক্রান্ত যে কোনো বিষয়ের দায়-দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। এখানে অন্য কারও ওপরে দায়-দায়িত্ব চাপানোর কোনো যৌক্তিকতা নেই।”

নির্বাচনের ২২০০ কেন্দ্রের মধ্যে ৫৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরস্বতী পূজা আয়োজনের রেওয়াজ থাকার কথা তুলে ধরে কাদের বলেন, “৫৪ কেন? চারটি হলেও ধর্মের প্রতি সন্মান শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা উচিৎ এবং আমরা সেটা করি।

“আমার মনে হয় তাদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের বসা উচিৎ। ধর্মের প্রতি সন্মান প্রদর্শন করে যুক্তিতর্কের মাধ্যমে বিষয়টির সন্মানজনক যৌক্তিক সমাধান তারা খুঁজে নেবেন, এটি আমরা আশা করছি।”

কাউন্সিলর পদে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যারা প্রার্থী হয়েছেন, তাদের ‘বসিয়ে দেওয়ার’ প্রক্রিয়া চলছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “নির্ধারিত সময়ে যারা প্রত্যাহার করেননি, আমাদের শৃঙ্খলা কমিটি তাদের প্রত্যাহার করানোর জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।”

অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বি এম মোজাম্মেল, মির্জা আজম, সফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সাখাওয়াত হোসেন শফিক, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সুবহান গোলাপ, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, আইন বিষয়ক সম্পাদক নজিবউল্লাহ হীরু, কৃষি ও সমবায় সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, ত্রাণ ও সমাজ কল্যান সম্পাদক সুজত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আবদুস সবুর, শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক সামসুন্নাহার চাঁপা, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কেন্দ্রীয় সদস্য শাহাবউদ্দিন ফরাজী এ সময় উপস্থিত ছিলেন।