শাহবাগে অবরোধ করে ইসি ঘেরাওয়ের কর্মসূচি

সরস্বতী পূজার দিনে ঢাকা সিটি ভোট না করার দাবিতে শাহবাগে সড়ক অবরোধ শেষে নির্বাচন কমিশন ঘেরাওয়ের কর্মসূচি দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Jan 2020, 12:24 PM
Updated : 14 Jan 2020, 01:43 PM

পূজার জন্য ভোট পেছানোর আবেদন আদালতে খারিজ হয়ে গেলে মঙ্গলবার বিকাল ৫টায় ক্যাম্পাস থেকে মিছিল নিয়ে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেয় ওই শিক্ষার্থীরা।

হাজার খানেক শিক্ষার্থীদের এই অবস্থানের কারণে ব্যস্ত সময়ে গুরুত্বপূর্ণ ওই মোড়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

বিক্ষোররত শিক্ষার্থীরা ‘৩০ তারিখের নির্বাচন, মানি না-মানবো না’, ‘আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাই নাই’, ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘পূজার দিনে নির্বাচন, মানি না-মানবো না’ স্লোগান তোলেন। তাদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল ছাত্র সংসদের নেতারাও ছিলেন।

সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে ইসি ঘেরাওয়ের কর্মসূচি দিয়ে বিক্ষোভকারীরা শাহবাগ ছাড়লে যান চলাচল পুনরায় শুরু হয়।

অবস্থান কর্মসূচির ইতি টেনে আন্দোলনকারীদের প্রধান সমন্বয়ক জগন্নাথ হল ছাত্র সংসদের ভিপি উৎপল বিশ্বাস বুধবার দুপুর ১২টার মধ্যে সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের জন্য ইসিকে সময় বেঁধে দেন।

তিনি বলেন, “যদি কাল আমাদের বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা না হয়, তাহলে আমরা নির্বাচন কমিশন ভবন ঘেরাও করব।”

এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া সংবিধানের পরিপন্থি দাবি করে এতে যুক্ত ইসির কর্মকর্তাদের পদত্যাগও দাবি করেন তিনি।

৩০ জানুয়ারি ভোটগ্রহণের দিন রেখে নির্বাচন কমিশন ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরপরই তার বিরেধিতা করেছিল পূজা উদযাপন পরিষদ ও হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদও ভোটের দিন পরিবর্তনের দাবি জানায়।

কিন্তু এসব আবেদনে ইসি সাড়া না দেওয়ায় এক আইনজীবী রিট আবেদন করেন হাই কোর্ট। মঙ্গলবার আদালত তা খারিজ করে দেওয়ায় ৩০ জানুয়ারিই ভোটগ্রহণের দিন থেকে যায়।

এতে ক্ষুব্ধ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নামে বিক্ষোভে। ক্যাম্পাস থেকে মিছিল নিয়ে শাহবাগে গিয়ে অবস্থান নেন তারা।

শাহবাগ মোড়জুড়ে বিক্ষোভকারীদের অবস্থানে বন্ধ হয়ে যায় গাড়ি চলাচল।

তখন উৎপল বিশ্বাস সাংবাদিকদের বলেন, “শাহবাগের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় সড়ক অবরোধ করে জনদুর্ভোগ তৈরি করা আমরাও চাই না। কিন্তু আজকে যখন হাই কোর্টও ৩০ তারিখ নিবাচনের রায় দিল, তখন আমরা এখানে না এসে পারলাম না। কারণ পূজা ও নির্বাচন একই দিনে হতে পারে না।”

জগন্নাথ হল ছাত্র সংসদের জিএস কাজল দাস বলেন, “আমরা মনে করি পূজার দিনে নির্বাচন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশনের একটি অসাংবিধানিক সিদ্ধান্ত। এই সিদ্ধান্তকে আমরা ধিক্কার জানাই।”

বিক্ষোররত শিক্ষার্থীদের একজন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আজকে হাই কোর্টে যে রায় এসেছে, তা সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে আমরা মেনে নিতে পারছি না।

“আমাদের দেশ অসাম্প্রদায়িক, এ রায় গেছে তার বিপক্ষে। ভবিষ্যতেও হয়ত দেখা যাবে, অন্যান্য ধর্মীয় উৎসবের দিনে নির্বাচন কমিশন এমন হঠকারী সিদ্ধান্ত নেবে। এটা আমরা মেনে নিতে পারব না। তাই আজকে আমরা প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”

আন্দোলন কত দিন চলবে- প্রশ্নে জগন্নাথ হলের ভিপি উৎপল বিকালে বলেছিলেন, “এটা আসলে বলা যাচ্ছে না। দাবি যতদিন পর্যন্ত মেনে না নেওয়া হয়, ততদিন পর্যন্ত চলবে।”