ধর্ষক গ্রেপ্তারে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে: আইজিপি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে ধর্ষণে যে বা যারা জড়িত তাদের গ্রেপ্তারে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে বলে পুলিশের মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী জানিয়েছেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Jan 2020, 09:55 AM
Updated : 7 Jan 2020, 10:10 AM

এখন পুলিশের অগ্রাধিকারের তালিকায় এই বিষয়টি এক নম্বরে আছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

এই ঘটনাকে ‘অত্যন্ত মর্মান্তিক’ হিসেবে বর্ণনা করে জাবেদ পাটোয়ারী বলেছেন, পুলিশের সংশ্লিষ্ট সব বিভাগ ‘আন্তরিকভাবে’ চেষ্টা করছে, অপরাধী গ্রেপ্তার হবে বলে তিনি আশাবাদী।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রী শেওড়ায় বান্ধবীর বাসায় যাওয়ার পথে রোববার সন্ধ্যায় কুর্মিটোলায় বিমানবন্দর সড়কে নেমে ধর্ষিত হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস থেকে নামার পরপরই তিনি আক্রান্ত হন। মুখ চেপে ধরে তাকে তুলে সড়কের পাশে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়।

ওই দিন গভীর রাতে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়। মেয়েটির দেওয়া বর্ণনা থেকে পুলিশ ধারণা পেয়েছে, ধর্ষণকারী একজনই, তার বয়স ২৫-৩০ বছরের মতো।

শিক্ষার্থী ধর্ষণের প্রতিবাদে মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজু ভাস্কর্যের সামনে ধর্ষকের কুশপুতুল পোড়ায় শিক্ষার্থীরা। ছবি: মাহমুদ জামান অভি

মঙ্গলবার রাজারবাগ পুলিশ লাইনস মাঠে বিগত বছরে প্রশংসনীয় কাজের জন্য পুলিশ সদস্যদের ‘আইজিপি ব্যাজ’ দেওয়ার পর সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এ বিষয়ে কথা বলেন পুলিশ প্রধান।

তিনি বলেন, “যে ঘটনাটি ঘটেছে এটি মর্মান্তিক ও অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা ঘটনাটি শোনার পর থেকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছি, আমাদের ‘প্রায়োরিটির’ মধ্যে এটি এক নম্বর ‘প্রায়োরিটি’ হিসেবে গণ্য করছি।

“যাতে যে বা যারা এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে, সে সকল দুষ্কৃতিকারীকে আইনের আওতায় আনার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।”

অতীতে যেভাবে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের রহস্য উদঘাটিত হয়েছে সেভাবে এই ঘটনার কিনারা হবে বলে আশা প্রকাশ করেন জাবেদ পাটোয়ারী।

তিনি বলেন, “ঘটনাটি আমাদের নলেজে আসার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করার জন্য সবাইকে তাৎক্ষণিকভাবে পাঠানো হয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করেছে।

“সব টিম একযোগে কাজ করছি এবং আমরা খুবই আশাবাদী যে অন্যান্য ঘটনা অতীতে যা ঘটেছে এবং প্রত্যেকটি ঘটনা উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছি এবং এক্ষেত্রে সক্ষম হব।”

সহপাঠী ধর্ষিত হওয়ার প্রতিবাদে মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সোমবার তাদের এক কর্মসূচি থেকে ধর্ষককে ধরতে ৪৮ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে পুলিশের মহাপরিদর্শক বলেন, “তদন্ত করার জন্য সময় লাগে, একেকটি তদন্ত একেক সময় লাগে। কোনোটা তদন্ত করতে কয়েক মিনিট সময় লাগে, কোনোটা তদন্ত করতে এক ঘণ্টা সময় লাগে, কোনো ঘটনা একদিন সময় লাগে।

“তদন্ত তার নিজস্ব যে প্রক্রিয়া আছে, সে প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন হয়। সুতরাং দিন- ঘণ্টা সময় ধরে তদন্ত হয় না। আমরা শুধু এটুকু বলতে চাই, সবাই মিলে চেষ্টা করছি আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছি আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে এটি উদঘাটিত হবে।”

ওই ছাত্রীর পাশে মন্ত্রণালয়

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ওই ছাত্রীর নিরাপত্তা, চিকিৎসা ও আইনি সহায়তার বিষয়ে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে।

এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “এ ঘটনার সাথে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। সরকার যখন নারীর উন্নয়ন, ক্ষমতায়ন, সুরক্ষা ও কর্মসংস্থানের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে তখন এ ধরনের ঘটনা দুঃখজনক।”

মন্ত্রণালয় বলছে, নির্যাতিত ছাত্রী বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠিত ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে চিকিৎসাধীন আছে।

“তার নিরাপত্তা, চিকিৎসা ও আইনি সহায়তার বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতা এ মন্ত্রণালয় হতে দেওয়া হচ্ছে।”