সারওয়ার আলীর উপর হামলায় ‘জঙ্গিগোষ্ঠী ’

বাড়িতে ঢুকে নিজের ও পরিবারের সদস্যদের উপর হামলার ঘটনায় জঙ্গিগোষ্ঠী জড়িত থাকতে পারে বলে সন্দেহ করছেন মুক্তিযোদ্ধা জাদুঘরের ট্রাস্টি সারওয়ার আলী।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Jan 2020, 09:40 AM
Updated : 7 Jan 2020, 11:04 AM

এঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে একই সন্দেহের কথা জানিয়েছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটিও।

মঙ্গলবার বিকেলে সারওয়ার আলী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দুর্বৃত্তদের রেখে যাওয়া চাপাতি দেখে মনে হচ্ছে, তারা জঙ্গি হামলা চালানোর উদ্দেশ্যে এসেছিল। হত্যাচেষ্টাই তাদের উদ্দেশ্য ছিল।”

রোববার রাতে মুক্তিযোদ্ধা সারওয়ার আলীর উত্তরার বাড়িতে ঢুকে একদল লোক হামলা চালায়। তারা তৃতীয় তলায় গিয়ে তার মেয়ে সায়মা আলীর বাসায় ঢুকে তাকে ও তার স্বামীকে ছুরিকাঘাত করার চেষ্টা করে।

পরে বাড়ির চতুর্থ তলায় গিয়ে সারওয়ার আলী ও তার স্ত্রীকে হত্যার চেষ্টা করে। তাদের চিৎকারে ওই ভবনের দোতলার এক বাসিন্দা ও তার ছেলে এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে মোবাইল ফোন ও সাতটি চাপাতি উদ্ধার হয়েছে।

এঘটনায় সোমবার ওই বাড়ির দারোয়ান ও সাবেক গাড়িচালকসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনের বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় তিনি হত্যা চেষ্টার মামলা করেন। দারোয়ানকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।

হামলার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি।

কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুলের পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, ‘জঙ্গিবাদ-মৌলবাদ-সন্ত্রাসবিরোধী বলিষ্ঠ অবস্থানের কারণে সপরিবারে হত্যার উদ্দেশ্যে’ এই মুক্তিযোদ্ধার উপর হামলা হয়েছে।

‘কাপুরুষোচিত’ হামলার নিন্দা জানিয়ে হত্যার প্রচেষ্টাকারীদের গ্রেপ্তারের পাশাপাশি সারওয়ার আলী ও তার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন সংগঠনটির নেতারা।

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন- বিচারপতি মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী, ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, বিচারপতি সৈয়দ আমিরুল ইসলাম, বিচারপতি শামসুল হুদা, বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সাবেক সেনা কর্মকর্তা আবু ওসমান চৌধুরী, লেখক সাংবাদিক আবদুল গাফফার চৌধুরী, সাংবাদিক কামাল লোহানী, অধ্যাপক বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর, অধ্যাপক অনুপম সেন, কথাশিল্পী হাসান আজিজুল হক, শিল্পী হাশেম খান, শিল্পী রফিকুননবী, অধ্যাপিকা পান্না কায়সার, অধ্যাপিকা মাহফুজা খানম, বীরউত্তম সাহাবউদ্দিন আহমেদ, বীরউত্তম আকরাম আহমেদ, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির, অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, শহীদজায়া সালমা হক, অধ্যাপক আবুল বারক আলভী, সমাজকর্মী আরমা দত্ত, মেঘনা গুহঠাকুরতা,  অধ্যাপক মোহাম্মদ সেলিম, নুজহাত চৌধুরী শম্পা, শহীদসন্তান তৌহিদ রেজা নূর, শহীদসন্তান শমী কায়সার, শহীদসন্তান আসিফ মুনীর তন্ময়, শহীদসন্তান তানভীর হায়দার চৌধুরী শোভনসহ আরো অনেকে।

প্রগতিশীল সামাজিক-সাংস্কৃতিক আন্দোলনে সারওয়ার আলীর অবদানের কথা স্মরণ করে নেতারা বলেন, “সারওয়ার আলী মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে আমাদের সহযোদ্ধা এবং এদেশের প্রগতিশীল সামাজিক সাংস্কৃতিক আন্দোলনে তার অবদান অসামান্য।”