রাজধানীর কুর্মিটোলায় রাস্তার পাশে ধর্ষণের শিকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে বলে জানিয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
Published : 07 Jan 2020, 12:56 PM
আর তার সাহস ও বুদ্ধিমত্তার প্রশংসা করে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নাসিমা বেগম বলেছেন, “সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, সে আসমিকে দেখলে চিনতে পারবে।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ওই শিক্ষার্থীকে দেখতে মঙ্গলবার ঢাকা মেডিকেলের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে যান মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান।
ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তীও ওই শিক্ষার্থীকে দেখতে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে কথা বলেন।
রোববার সন্ধ্যায় বান্ধবীর বাসায় যাওয়ার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে শেওড়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলেন ওই তরুণী। কুর্মিটোলায় বাস থেকে নামার পরপরই তিনি আক্রান্ত হন। মুখ চেপে ধরে তাকে তুলে সড়কের পাশে নিয়ে ধর্ষণ করা হয় তিন ঘণ্টা ধরে। সেদিন গভীর রাতে তাকে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়।
মেয়েটির দেওয়া বর্ণনা থেকে পুলিশ ধারণা পেয়েছে, ধর্ষণকারী একজনই, তার বয়স ২৫-৩০ বছরের মত। মেয়েটির বাবা ক্যান্টনমেন্ট থানায় যে মামলা করেছেন, সেখানেও একজনকেই আসামি করা হয়েছে।
ওসিসিতে মেয়েটিকে দেখে আসার পর মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নাসিমা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা ওর সাথে কথা বললাম, দেখলাম যে এই মেয়েটি অত্যন্ত সাহসী, সে সাহসের পরিচয় দিয়েছে।… সে যেহেতু আসামির চেহারার একটি বর্ণনা দিতে পারছে, অবিলম্বে একটি স্কেচ এঁকে আসামি শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করার ব্যবস্থা যাতে করা হয় সেটা আমি বলেছি।”
নাসিমা বেগম বলেন, মেয়েটি দেরি না করে ঢাকা মেডিকেলে গিয়ে বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছে। আলামত নষ্ট হতে দেয়নি। এখন পরীক্ষা করে ডিএনএ মিলিয়ে প্রকৃত ধর্ষককে শনাক্ত করা কঠিন হওয়ার কথা নয়।
সাহস আর মনের জোরের কারণে মেয়েটির অবস্থার দ্রুত উন্নতি হচ্ছে বলে জানান মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান।
অপরাধীর কঠোর শাস্তি দাবি করে তিনি বলেন, “নারী কি এতই... যেখানে সেখানে এ ধরনের ধর্ষণের শিকার হবে।”
নাসিমা বেগম বলেন, ডিএনএ অধিদপ্তরের অধীনে জাতীয় সার্ভারে ডিএনএ নমুনা সংরক্ষিত থাকলে এ ধরনের অপরাধীকে ধরা অনেক সহজ হত। আলামত পরীক্ষা করে ডিএনএ মিলিয়েই ধর্ষণকারীকে চিহ্নিত করা যেত। তাতে এ ধরনের অপরাধও কমে যেত।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার রুমানা আক্তার সোমবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, তারা ঘটনাস্থল থেকে ছয়টি আলামত জব্দ করেছেন। সেগুলো পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। তবে ধর্ষণকারীকে এখনও শনাক্ত করা যায়নি।
গুলশান বিভাগের পুলিশের উপ-কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী মঙ্গলবার ঢাকা মেডিকেলে সাংবাদিকদের বলেন, “মামলাটিতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে প্রথম থেকেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। গুরুত্ব বিবেচনায় গতকাল ডিবি উত্তরের হাতে মামলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।”
এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ঘটনাস্থলের আশপাশের কয়েকটি সিসিটিভি ভিডিও পুলিশ সংগ্রহ করেছে। এখন সেগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা হচ্ছে।
“আমাদের সবার একটাই টার্গেট, যে করেই হোক এই অপরাধীকে চিহ্নিত করা।”
ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালের পরিচালক একেএম নাসির উদ্দিন বলেন, “ওই শিক্ষার্থীর সার্বিক অবস্থা উন্নতির দিকে। সাত সদস্যের মেডিকেল বোর্ড চাইলে দুই-তিন দিনের মধ্যে তাকে ছাড়পত্র দেওয়া যেতে পারে।”