ঢাবি ছাত্রীকে ‘তুলে নিয়ে ধর্ষণ’, ক্ষোভে উত্তাল ক্যাম্পাস

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে রাজধানীর কুর্মিটোলা এলাকায় রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Jan 2020, 04:30 AM
Updated : 6 Jan 2020, 05:48 PM

দ্বিতীয় বর্ষের ওই ছাত্রীকে রোববার রাত পৌনে ১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়।

ওই শিক্ষার্থীর বরাত দিয়ে ঢাকা মেডিকেল ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন, রোববার বিকালে ক্লাস শেষে বান্ধবীর বাসায় যাওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে করে কুর্মিটোলায় নামেন ওই তরুণী। উদ্দেশ্য ছিল রাতে বান্ধবীর বাসায় থেকে পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া।

“সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাস থেকে নামার পরপরই অজ্ঞাত পরিচয় কোনো লোক তার মুখ চেপে ধরে এবং পাশের একটি নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে তিনি চেতনা হারান।”

রাত ১০টার দিকে চেতনা ফিরলে ওই শিক্ষার্থী একটি অটোরিকশা নিয়ে বান্ধবীর বাসায় যান এবং তাকে পুরো ঘটনা বলেন। এরপর সহপাঠীরা তাকে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে এবং পরে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানীসহ কয়েকজন শিক্ষক রাতেই হাসপাতালে যান এবং ওই ছাত্রীর সঙ্গে কথা বলেন।

ক্যান্টনমেন্ট জোনের পুলিশের সহকারী কমিশনার জাকিয়া নুসরাত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলেছি, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”

এদিকে ধর্ষণের খবর ছড়িয়ে পড়লে রাতেই বিক্ষোভ শুরু হয় ক্যাম্পাসে। ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তির বিচার দাবিতে রাত আড়াইটার দিকে মিছিল বের করে ছাত্রলীগ।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের নেতৃত্বে কয়েকশ শিক্ষার্থীর ওই মিছিল ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে। পরে সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে প্রতিবাদ সমাবেশের ঘোষণা দেন ছাত্রলীগ নেতারা।

রাত সাড়ে ৩টায় বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের প্ল্যাটফর্ম সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতাকর্মীরা।

রাজু ভাস্কর্যের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশে ডাকসুর সমাজ সেবা সম্পাদক আখতার হোসেন বলেন, অতীতের বিভিন্ন সময়ে ধর্ষণের মতো ঘৃণ্য অপরাধে অভিযুক্তদের লঘু শাস্তির ফলে বর্তমানে দেশে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান বলেন, “আমাদের দেশে কোনো ঘটনার পরেই তথ্য-প্রমাণ গায়েব হওয়ার নজির রয়েছে। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ, এই ঘটনার তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহপূর্বক দোষীদের শাস্তির আওতায় আনা হোক।”

পরে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। সোমবার বেলা ১১টায় রাজু ভাস্কর্য থেকে বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি দিয়ে তাদের রাতের বিক্ষোভ শেষ হয়।

ধর্ষকদের বিচারের দাবিতে ছাত্রদলও সোমবার বেলা ১১টায় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ কর্মসূচি দিয়েছে।