একাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রথম বার্ষিকীকে ‘কালো দিবস’ হিসেবে পালনের অংশ হিসেবে সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সমাবেশের পর বেলা সাড়ে ১২টার দিকে কালো পতাকা মিছিল নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে রওনা হন জোটের নেতা-কর্মীরা।
এক পর্যায়ে মিছিল থেকে ইঁটপাটকেল ছুড়ে মারার অভিযোগ করে পুলিশ সদস্যরা বাম জোটের নেতা-কর্মীদের লাঠিপেটা করে রাস্তা থেকে সরিয়ে দেন। এসময় মৎস্য ভবন মোড় থেকে প্রেসক্লাবের দিকে যান চলাচল প্রায় ২০ মিনিট বন্ধ থাকে।
পুলিশের হামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ডেকেছে গণতান্ত্রিক বাম জোট।
“পরে আমাদের পাঁচ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এর মধ্যে গুরুতর আহত হয়েছেন দুজন। আমরা অনেক ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছি। পরে আমরা তাদের সরিয়ে দিয়েছি।”
রমনা থানার ওসি মনিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা চার পাঁচ জনকে পুলিশ হেফাজতে নিয়েছি। ভিডিও ফুটেজ দেখে আমরা ব্যবস্থা নেব।”
মিছিল থেকে যুব ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সহকারী সাধারণ সম্পাদক শরিফুল আনোয়ার সজ্জন ও ছাত্র ইউনিয়ন নেতা জুবায়ের আহম্মেদ সজল, ক্ষেতমজুর সমিতির কর্মী ওয়াহিদুজ্জামান ও বাসদের কর্মী তামিমকে পুলিশ আটক করেছে ক্বাফী রতন জানান।
নির্বাচনের বছরপূর্তির দিনটি ‘কালো দিবস’ হিসেবে পালনের ঘোষণা দিয়ে সোমবার জেলায় জেলায় কালো পতাকা মিছিলের কর্মসূচি করা হয় বাম জোটের পক্ষ থেকে।
সে অনুযায়ী সোমবার সকালে ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে মিলিত হন বাম জোটের নেতাকর্মীরা। সেখানে তারা স্লোগান ধরেন- ‘স্বৈরাচারের আস্তানা ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও'।সমাবেশ শেষে বাম জোটের নেতাদের কালো পতাকা মিছিল নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে রওনা হয়।
সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম, বাম গণতান্ত্রিক জোটের নতুন সমন্বয়ক আবদুল্লাহ আল ক্বাফী রতন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বজলুর রশিদ ফিরোজ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন নান্নু সমাবেশে অংশ নেন।
সমাবেশে সিপিবি সভাপতি বলেন, ‘ভুয়া নির্বাচনের’ মাধ্যমে যে সরকার ক্ষমতায় বসে আছে, তাকে ভুয়া সরকার ছাড়া আর কিছু বলে আখ্যা দেওয়া যায় না। ‘গণআন্দোলনের’ মুখে সরকারের পতন ঘটিয়ে বাম গণতান্ত্রিক জোটের ‘বিকল্প সরকার’ প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
সাইফুল হক বলেন, বিরোধী দলকে দমন করতে সরকার রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস লেলিয়ে দিয়েছে। গণতান্ত্রিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের মৃত্যু হয়েছে; নৈতিক পরাজয় হয়েছে। চরমপন্থী রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে এ দল।
বাসদ নেতা বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, ‘বিশ্ববেহায়া’ আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামানোই এখন প্রধান রাজনৈতিক কর্তব্য। ক্ষমতার মসনদ থেকে যত দ্রুত তাদের নামানো যাবে, ততই দেশের জন্য মঙ্গল।