‘ডাকাতিতে’ জঙ্গিরা

নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের (হুজি) ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ বলছে, একুশে অগাস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কারাবন্দি এক আসামির দিক-নির্দেশনায় সংগঠন শক্তিশালী করতে ডাকাতি করছিল তারা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Dec 2019, 04:24 PM
Updated : 27 Dec 2019, 04:24 PM

গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. বিল্লাল হোসেন (২৫), নূর আলম (২৮), মো. রফিকুল ইসলাম (২৯), আবুল মিয়া (৩৫), আব্দুর রহমান (৩০) ও আক্তার হোসেন (৩৪)।

বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর বাড্ডার সাঁতারকুল এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “একুশে অগাস্ট গ্রেনেড হামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি উজ্জ্বল কারাগারে থেকে এদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখত। এদের দিয়ে ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজ করাত এবং সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করত বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা জানিয়েছে।”

গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে ১০০ মিলি লিটার চেতনানাশক পদার্থ, একটি চাপাতি, তিনটি ছোরা, দুটি মুখোশ ও একটি খেলনা পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

পরে শুক্রবার মাওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়ামে সিটিটিসি ও ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের মধ্যে প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচ চলাকালে এই জঙ্গিদের বিষয়ে বিস্তারিত জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মো. মনিরুল ইসলাম।

তিনি বলেন, “এদের নেতা বিল্লাল হোসেন আরও সাতজনকে নিয়ে একটি গ্রুপ তৈরি করে। গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণ ও তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, এই গ্রুপটি মূলত ডাকাতির সঙ্গে জড়িত। তাদের সংগঠন পরিচালনা, সংগঠনকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে নতুন সদস্য সংগ্রহ ও ডাকাতিকে তারা পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে।

“তারা ক্লোরোফরম দিয়ে অজ্ঞান করে ডাকাতি করত। এই গ্রুপের উদ্দেশ্য হল- ডাকাতি করে লুণ্ঠিত অর্থ তাদের সংগঠন গোছানোর কাজে ব্যবহার করা। এই গ্রুপের মূল নেতা মো. উজ্জ্বল ওরফে রতন ২১ শে অগাস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে আটক রয়েছে। তার নির্দেশনায় মূলত এই গ্রুপটি তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছিল।”

মনিরুল বলেন, এর আগে হুজির ১২ জন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, তারাও ‘ডাকাতি ও ছিনতাইয়ে’ জড়িত ছিল।

ঢাকা মহানগর পুলিশের শীর্ষ পর্যায়ে এই কর্মকর্তা বলেন, “জঙ্গিদের সক্ষমতা বা অপারেশন ক্যাপাসিটি আমরা বহুলাংশে ধ্বংস করতে পেরেছি। নাশকতা ঘটাতে হরকাতুল জিহাদের তেমন কোনো সক্ষমতা নেই।

“তবে তাদের পরিকল্পনা রয়েছে সংগঠনকে নতুন করে সংগঠিত করে বিভিন্ন জায়গায় হামলার চেষ্টা করা। তারা যাতে এমন কিছু না করতে পারে বা নতুন করে সংগঠিত হতে না পারে সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।”

এই জঙ্গি নেটওয়ার্কে যারা যোগ দিতে চাইছে তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।

পরে বাড্ডা থানায় দায়ের করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এই হুজি সদস্যদের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে ঢাকার একটি আদালত। ঢাকার মহানগর হাকিম সত্যব্রত শিকদার শুক্রবার বিকেলে শুনানি শেষে রিমান্ডের আদেশ দেন।

তাদের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছিল গোয়েন্দা পুলিশ। অপরদিকে এক আসামির পক্ষে তার আইনজীবী রিমান্ড আবেদন বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। তবে অন্য আসামিদের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন না।

উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক প্রত্যেকের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।