কেরানীগঞ্জে দগ্ধ ১০ জন এখনও হাসপাতালে, ‘শঙ্কামুক্ত নয়’ কেউ

ঢাকার কেরানীগঞ্জে প্লাস্টিক সামগ্রী তৈরির কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের দশ দিন পরও হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন দশজন; তাদের কাউকেই শঙ্কামুক্ত বলতে পারছেন না চিকিৎসকরা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Dec 2019, 04:20 AM
Updated : 5 Jan 2020, 08:00 AM

তাদের মধ্যে দুজনকে শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে রাখা হয়েছে। বাকি আটজন আছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের এইচডিইউতে।

গত ১১ ডিসেম্বর বিকালে কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়া এলাকায় প্রাইম পেট অ্যান্ড প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এ পর্যন্ত মোট ২২ জনের প্রাণ গেছে।

ঢাকা কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়া এলাকায় বুধবার একটি প্লাস্টিক কারখানায় আগুন লাগে।

ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সেদিনই কারখানার ধ্বংসস্তূপ থেকে একজনের লাশ উদ্ধার করেন। বাকিরা পরে মারা যান হাসপাতালে।

বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক সামন্ত লাল সেন বলেন, “লাইফ সাপোর্টে থাকা দুজনের অবস্থা ভালো নয়। তাদের শরীরের ৫০ শতাংশের বেশি পুড়েছে। আর বাকি আটজনের অবস্থাও শঙ্কামুক্ত বলা যাবে না।”

শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন ২৫ বছর বয়সী সোহাগের স্ত্রী চম্পা বলেন, “অবস্থা আগের চেয়ে একটু ভালো। চলাফেরা করতে পারে, আমার সাথে কথা হয়। এইখানে চিকিৎসাও ভালো চলে।”

ওই কারখানার আরেক কর্মী ফিরোজ উদ্দীনও (৩৯) এ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার আত্মীয়রা জানান, কারখানায় কাজ চলার মধ্যে সেদিন গ্যাসের সিলিন্ডার পড়ে গিয়ে ভেঙে যায়, তারপরই আগুন ধরে যায়।

সোহাগ, ফিরোজদের সঙ্গে হাসপাতালের ইউনিটে ছিলেন ১৯ বছরের তরুণ সাহেজুল ইসলাম সাজু। শনিবার সকালে তার মৃত্যু হয়। 

কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়া এলাকায় বুধবার একটি প্লাস্টিক কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়।

সাজুর বাবা অটোরিকশাচালক নজরুল ইসলাম বলেন, “এ মাসের শেষেই ওর কারখানার চাকরি ছেড়ে দেওয়ার কথা ছিল। ফেব্রুয়ারিতে এসএসসি পরীক্ষা দিতে ফর্ম ফিলাপ করেছিল।”

ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন আটজনের মধ্যে আসলামের (২৯) শরীরের ২০ শতাংশ, সিরাজের (৫০) শরীরের ২১ শতাংশ, সাজিদের (২৯) শরীরের ১০ শতাংশ, জাকিরের (২৪) শরীরের ২৯ শতাংশ, সাখাওয়াতের (২৬) শরীরের ২২ শতাংশ, জিসানের (১৪) শরীরের ১৭ শতাংশ, বশিরের (১৯) শরীরের ২০ শতাংশ এবং লাল মিয়ার (৪২) শরীরের ২০ শতাংশ পুড়ে গেছে ।

কারখানার মালিক হাজী মো. নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। তবে দশ দিনেও পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।