স্যার ফজলে হাসান আবেদের চিরপ্রস্থান
নিজস্ব প্রতিবেদক, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published: 20 Dec 2019 09:19 PM BdST Updated: 21 Dec 2019 02:55 AM BdST
-
২০১৬ সালের ১৭ মার্চ ঢাকার খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ‘আর্কিটেকচার নাউ/নেক্সট’ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ফজলে হাসান আবেদ।
-
২০১৮ সালের ৭ জুন অবিন্তা কবির ফাউন্ডেশন স্কুলের প্রথম বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে ফজলে হাসান আবেদ।
-
-
মাঠে কৃষকদের সঙ্গে ফজলে হাসান আবেদ।
-
ব্র্যাকের উদ্যোগে পরিচালিত স্কুলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ফজলে হাসান আবেদ।
বাংলাদেশের মানুষকে দারিদ্র্য থেকে মুক্ত করার চেষ্টায় নিরন্তর সংগ্রামের একটি জীবন পার করে চিরবিদায় নিলেন ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদ।
Related Stories
শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টায় রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।
যে কজন বাংলাদেশি তাদের কর্মগুণে বিশ্বজুড়ে পরিচিত, ফজলে হাসান আবেদ তাদের একজন। ১৯৭২ সালে তার হাত ধরে যাত্রা শুরু করা ব্র্যাক এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় এনজিও।
ফজলে হাসান আবেদের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শোক জানিয়েছেন।
গত ২৭ নভেম্বর ফজলে হাসান আবেদকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তার অসুস্থতা সম্পর্কে তখন কিছু জানাননি ব্র্যাক কর্মকর্তারা।

মাঠে কৃষকদের সঙ্গে ফজলে হাসান আবেদ
ফজলে হাসান আবেদের স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়ে এবং তিন নাতি-নাতনি রয়েছে।
ব্র্যাক কর্মকর্তারা জানান, সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য ফজলে হাসান আবেদের মরদেহ রোববার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামে রাখা হবে।
ফজলে হাসান আবেদ: মানুষের জন্য এক জীবন
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সেখানে জানাজা হবে। জানাজার পর ঢাকার বনানী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
১৯৩৬ সালে জন্মগ্রহণকারী ফজলে হাসান আবেদের উচ্চতর পড়াশোনা হয় লন্ডনে, হিসাব বিজ্ঞানে।

১৯৭২ সালে ফজলে হাসান আবেদের হাত ধরে যাত্রা শুরু করে ব্র্যাক, যেটি এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় এনজিও।
১৯৮০ সালে ম্যাগসেসে পুরস্কার পাওয়া ফজলে হাসান আবেদ জীবনে অসংখ্য সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন। তার মধ্যে রয়েছে বিশ্ব খাদ্য পুরস্কার, স্পেনিশ অর্ডার অব সিভিল মেরিট, অফিসার ইন দ্য অর্ডার অফ অরেঞ্জ-নাসাউ, লিউ টলস্টয় ইন্টারন্যাশনাল গোল্ড মেডেল ইত্যাদি।
২০১৪ ও ২০১৭ সালে ফরচুন ম্যাগাজিনের নির্বাচিত ৫০ বিশ্বনেতার মধ্যে ফজলে হাসান আবেদের নাম স্থান পেয়েছিল।
তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ব্র্যাক গ্লোবাল বোর্ডের চেয়ারপারসন আমিরা হক এক বিবৃতিতে বলেছেন, “ফজলে হাসান আবেদের আত্মনিবেদন, কর্মনিষ্ঠা এবং সুদৃঢ় নৈতিক অবস্থান তাকে ব্র্যাক পরিবারের সকলের কাছে শ্রদ্ধেয় ‘আবেদ ভাই’ করে তুলেছে। মানুষকে মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি ছিল তার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। এমনকি ব্র্যাকের পরিচিতি যখন বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত হয়েছে তখনও সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের উন্নয়নই তার অগ্রাধিকার ছিল।

ব্র্যাকের উদ্যোগে পরিচালিত স্কুলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ফজলে হাসান আবেদ
১৯৩৬ সালের ২৭ এপ্রিল তৎকালীন সিলেট জেলার হবিগঞ্জ মহকুমার বানিয়াচংয়ে জন্মগ্রহণ করেন ফজলে হাসান আবেদ।
১৯৫২ সালে পাবনা জেলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক এবং ১৯৫৪ সালে ঢাকা কলেজ থেকে আইএসসি পাস করেন তিনি। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিদ্যায় অনার্সে ভর্তি হন। কিন্তু সেখানে না পড়ে তিনি ইংল্যান্ডে চলে যান।
১৯৫৪ সালে আবেদ স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ে নেভাল আর্কিটেকচারে ভর্তি হন। কিন্তু দুই বছর লেখাপড়া করার পরে তিনি এ বিষয়ে পড়া বাদ দিয়ে লন্ডনে গিয়ে অ্যাকাউন্টিংয়ে ভর্তি হন। ১৯৬২ সালে ‘কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টিং’-এ প্রফেশনাল কোর্স শেষ করেন তিনি।

ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামে ২০১৮ সালের ২৫ অক্টোবর আড়ংয়ের ৪০ বছর পূর্তির উৎসব উদ্বোধনের পর বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন ফজলে হাসান আবেদ।
পাকিস্তান শেল অয়েল কোম্পানিতে সিনিয়র কর্পোরেট এক্সিকিউটিভ পদে কর্মরত থাকাকালে ১৯৭০ সালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় বদলে দেয় তার জীবন পথ। বন্ধু-পরিচিতদের নিয়ে দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ান তিনি।
ফজলে হাসান আবেদের মৃত্যু অপূরণীয় ক্ষতি: প্রধানমন্ত্রী
ফজলে হাসান আবেদের অবদান শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে মানুষ: রাষ্ট্রপতি
এরপর মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি চাকরি ছেড়ে চলে যান লন্ডনে, সেখানে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য জনমত গঠনে কাজ শুরু করেন। স্বাধীন হওয়ার পর দেশে ফিরে আসেন তিনি।
যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠন বিশেষ করে ভারতে আশ্রয় নেওয়া বিপুল সংখ্যক মানুষকে স্বাবলম্বী করার প্রয়াসে ১৯৭২ সালে ফজলে হাসান আবেদের হাত ধরে বাংলাদেশ রিহ্যাবিলিটেশন অ্যাসিসটেন্স কমিটি (ব্র্যাক) নামে ব্র্যাকের কাজ শুরু হয়।

চীনা বহুজাতিক কোম্পানি আলিবাবা গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান অ্যান্ট ফাইন্যান্সিয়ালের সঙ্গে বিকাশের চুক্তি উদযাপনে ২০১৮ সালের ২৬ এপ্রিল আয়োজিত অনুষ্ঠানে ফজলে হাসান আবেদ।
গণশিক্ষা থেকে শুরু করে দারিদ্র্য বিমোচন, ক্ষুদ্রঋণ বিতরণের মতো কাজের মধ্য দিয়ে বিস্তৃত হয় ব্র্যাকের কার্যক্রম। বিশ্বের সাড়ে তের কোটি মানুষ ব্র্যাকের সেবার আওতাভুক্ত। এ সংস্থার কাজ অন্তত ১৫ কোটি মানুষের দারিদ্র্য দূর করতে সহায়ক হয়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের তথ্য।

২০১৬ সালের ১৭ মার্চ ঢাকার খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ‘আর্কিটেকচার নাউ/নেক্সট’ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ফজলে হাসান আবেদ।
অনেকেই মনে করেন, ব্র্যাক প্রতিষ্ঠাতা ফজলে হোসেন আবেদের নোবেল পুরস্কার পাওয়া উচিৎ।
-
উল্টে যাওয়া কভার্ডভ্যান সরাতে ৬ ঘণ্টা, ব্যাপক যানজট
-
হাজারীবাগ বেড়িবাঁধ বস্তিতে আগুন, পুড়ল দেড়শ রিকশা
-
চাকরিতে ফেরাতে শরীফের আবেদন নাকচ করল দুদক
-
নর্থ সাউথের চার ট্রাস্টির আগাম জামিনের শুনানি ফের বৃহস্পতিবার
-
এশিয়াটিক সোসাইটির কোষাধ্যক্ষ হলেন অধ্যাপক মাহফুজ
-
কাতারের শ্রমমন্ত্রীর সঙ্গে ইমরানের বৈঠক
-
অবহেলায় শিশু মৃত্যুর অভিযোগ, তিন চিকিৎসক ও নার্স গ্রেপ্তার
-
রাজউকের নতুন চেয়ারম্যান আনিছুর
সর্বাধিক পঠিত
- বিদায়ের ইঙ্গিত দিলেন স্ত্রী, মুশফিক বললেন ‘এমন ভাবনা নেই’
- ‘বাংলাদেশে আসলে অভিজ্ঞতার দাম নেই’
- শেষ বেলার ২ উইকেটে এগিয়ে বাংলাদেশ
- ‘সালিশে ক্ষুব্ধ’: চেয়ারম্যানের ছেলেকে ‘হত্যার পর আত্মহত্যা’
- ডলারের তেজ খানিকটা কমল
- ফেনীতে গাড়ি তল্লাশি নিয়ে র্যাব-পুলিশের ‘হাতাহাতি’, আহত ৪
- নয় সচিব পদে রদবদল, পদোন্নতি
- শেষের নাটকীয়তায় হেরে কলকাতার বিদায়
- আমদানি নির্ভরতা কমাতে সরকারের ভাবনায় রাইস ব্র্যান ও সরিষার তেল
- চান্দিমাল-ডিকভেলার প্রতিরোধ