রোববার রাজধানীতে বাপেক্সের এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “বাপেক্সের কাছে সারা বাংলাদেশ দিয়ে রেখেছি, তারা তা হাতে নিয়ে বসে আছে। প্রতি বছরই পর্যালোচনা শুরু হলে তারা বলছে- স্যার প্রস্তুতি নিচ্ছি। কিন্তু কাজ আর আগাচ্ছে না।
“তারা সাপের মতো প্রাণীকেও চ্যালঞ্জ হিসাবে নিচ্ছে, এজন্যই তাদের কোনো কাজ আগাচ্ছে না। সাপের ভয়ে জরিপ চালাতে যাবেন না- এটা কোনো কথা হতে পারে?”
এর আগে বাপেক্সের ভূতাত্ত্বিক বিভাগের মহাব্যবস্থাপক আলমগীর হোসেন ‘জিওলজিক্যাল ফিল্ড সার্ভে ফর হাইড্রোকার্বন এক্সপ্লোরেশন: প্রগ্রেস অ্যান্ড চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক প্রতিবেদন উপস্থাপনা করেন।
সেখানে তিনি ভূতাত্ত্বিক জরিপের প্রতিবন্ধকতা হিসাবে পাহাড়ি জঙ্গল এলাকায়, সাপ-বিচ্ছু ও অন্যান্য হিংস্র বন্যপ্রাণীর কথা তুলে ধরেন।
নসরুল হামিদ বলেন, “এভাবে চলতে দেওয়া যায় না, পেট্রোবাংলারও একই অবস্থা। আপনাদের নড়াচড়া করতে চার/পাঁচ মাস সময় লাগে। কোথায় আছেন আপনারা? আপনাদের অ্যাসসমেন্ট শুরু হলে বিপদে পড়বেন। শেখ হাসিনার সরকার আপনাদের এসব কর্মকাণ্ডের দায় দায়িত্ব নেবে না।
“প্রয়োজনে আপনাদের কাজ রিভিজিট করব; হিউম্যান রিসোর্স রিভিজিট করব। আপনারা যদি নিজেদের কাজ ভুলে যান তাহলে আপনাদের দরকার কী?”
অনুষ্ঠানে জ্বালানি সচিব আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, “সার্ভেগুলো পর্যালোচনা করা দরকার। জিওলজিক্যাল সার্ভের অনেক ডেটা এখন স্যাটেলাইটে পাওয়া যায়, অন্যান্য সেকেন্ডারি সোর্সেও পাওয়া যায়। এই কাজ করতে গিয়ে ২০ বছর সময় পার করে দিলে চলবে কীভাবে?”
দেশি গ্যাস পেতে পরিত্যক্ত ও স্থগিত কূপগুলোকে নতুন করে কাজে লাগানো যায় কি না সেদিকে নজর দিতে বাপেক্সের কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
জ্বালানি সচিব বলেন, জরুরি ভিত্তিতে দেশীয় গ্যাস চাইলে পুরনো পরিত্যক্ত কূপগুলো নিয়ে ভাবতেই হবে। কারণ, এগুলোর অনেক কাজ প্রস্তুত হয়ে আছে। বাজার না থাকার কারণে এর অনেকগুলো বন্ধ করা হয়েছিল।
বাপেক্সের তথ্যমতে, সংস্থাটির ৩৪টি কূপ পরিত্যক্ত ও ১৮টি কূপ স্থগিত (সাসপেন্ডেড) অবস্থায় আছে।
এর মধ্যে কসবা-১, মোবারকপুর-১, শ্রিকাইল-১, রূপগঞ্জ-১, সুন্দলপুর-১, সালদানদী-১, মুলাদি-১, মুলাদি-২, সেমুতাং-এস-১, হালদা-১, সালদা নদী-২ কে পুনর্মূল্যায়নের চিন্তা করা হচ্ছে।
বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মীর আব্দুল হান্নান ও পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান রুহুল আমিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
তবে নিজেদের কাজের ধীরগতি নিয়ে মন্ত্রণালয়ের অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।