বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Dec 2019, 03:41 AM
Updated : 14 Dec 2019, 04:01 AM

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের শেষ ভাগে এদেশের দোসরদের সহযোগিতায় পাক হানাদার বাহিনী হত্যা করেছিল শিক্ষাবিদ, চিকিৎসক, সাংবাদিকসহ হাজারো বুদ্ধিজীবীকে। সেই থেকে ১৪ ডিসেম্বর দিনটিকে জাতি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে, পালন করে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে।

দিনটি উপলক্ষে শনিবার সকাল ৭টার আগে আগে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে উপস্থিত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ পৌঁছালে প্রধানমন্ত্রী যান শহীদ বেদীতে।

সকাল ৭টা ১ মিনিটে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন একাত্তরের শহীদ বুদ্ধিজীবীদের। পুষ্পস্তবক অর্পণের পর কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী।

এসময় বিউগলে বাজানো হয় করুণ সুর। সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল সামরিক কায়দায় সালাম জানায়। 

মিরপুরে বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শনিবার শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পরে আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে শহীদ বেদীতে আবারও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী, আব্দুর রাজ্জাক, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

রাষ্ট্রপতির ও প্রধানমন্ত্রী শ্রদ্ধা জানানোর পর শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।        

স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী শনিবার মিরপুর বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীও বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এরপর। পর্যায়ক্রমে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে শহীদ বেদীতে ফুল দেন। হুইল চেয়ারে আসা যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারাও শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিরেবদন পর্ব শেষে সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয় স্মৃতিসৌধ এলাকা। জাতীয় পাতাকা আর শ্রদ্ধার ফুল হাতে নানা বয়সের হাজারো মানুষ জড়ো হন শহীদ বেদীতে।

রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধের শহীদ বেদীও সকাল থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং সর্বস্তরের মানুষের ফুলে ফুলে ভরে উঠতে থাকে।

মিরপুরে বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শনিবার সকালে আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর পরিকল্পিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, চিকিৎসক, শিল্পী, লেখক, সাংবাদিকসহ বহু খ্যাতিমান বাঙালিকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে হত্যা করে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নিজেদের পরাজয় নিশ্চিত জেনেই পাকিস্তানি বাহিনী ওই নিধনযজ্ঞ চালায়; তাদের উদ্দেশ্য ছিল স্বাধীনতার পর যেন বাংলাদেশ যাতে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে- তা নিশ্চিত করা।

শরীরে নিষ্ঠুর নির্যাতনের চিহ্নসহ জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের লাশ পাওয়া যায় মিরপুর ও রায়েরবাজার এলাকায়। পরে তা বধ্যভূমি হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠে।

বুদ্ধিজীবী দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বেতার ও টেলিভিশনে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করা হচ্ছে। সব জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আয়োজন করা হয়েছে আলোচনা অনুষ্ঠানের। পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের কর্মসূচি।