গ্রাহকের ৫ কোটি টাকা মেরে প্রেমিকাকে সোয়া ২ কোটি দেন ব্যাংকার: দুদক

বেসরকারি মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের সাবেক এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রাহকের সোয়া পাঁচ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলা করেছে দুদক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Dec 2019, 07:00 PM
Updated : 10 Dec 2019, 07:00 PM

ব্যাংকটির সাবেক সহকারী ভাইস প্রেসিডেন্ট জাহিদ সারোয়ার বনানীর প্রিভিলেজ সেন্টারের ম্যানেজারের দায়িত্ব পালনকালে এই অর্থ আত্মসাৎ করেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

গ্রাহকের স্বাক্ষর জাল করে তার মোবাইল নম্বর পাল্টে হাতিয়ে নেওয়া অর্থের সোয়া দুই কোটি টাকা ‘প্রিয়তমার’ ব্যাংক একাউন্টে পাঠান এবং পরে তিনি ওই নারীকে বিয়ে করেন বলে দুদকের দাবি।

এসব অভিযোগে জাহিদ সারোয়ারের সাথে তার নতুন স্ত্রী ফারহানা হাবিবকে আসামি করে মামলা হয়েছে বলে দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য জানিয়েছেন।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মঙ্গলবার কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. শফিউল্লাহ্ বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন।

মামলায় বলা হয়, ২০১৬ সালের ২৬ এপ্রিল রামপুরার বাসিন্দা ফেরদৌসী জামান মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের বনানী শাখায় যৌথ নামে একটি প্রিভিলেজ ব্যাংক হিসাব খোলেন। এরপর এতে একই বছরের ২ মে থেকে ৮ মে পর্যন্ত সময়ে তিনটি ভাউচারের মাধ্যমে সাড়ে ছয় কোটি টাকা জমা করা হয়।

পরে একই বছরের ৬ অক্টোবর ফেরদৌসী জামানের একক নামে ব্যাংকটির একই শাখায় আরেকটি সঞ্চয়ী হিসাব খোলা হয়। নতুন হিসাব নম্বরে সেই সাড়ে ছয় কোটি টাকা স্থানান্তর করা হয়। এই দুই প্রিভিলেজ একাউন্ট তৎকালীন এ প্রিভিলেজ সেন্টারের ম্যানেজার জাহিদ সারোয়ারের তত্ত্বাবধানে খোলা হয়। তিনিই এই দুই একাউন্টের রিলেশনিশপ ম্যানেজারের দায়িত্বে ছিলেন।

একাউন্টের লেনদেনের তথ্য পাওয়ার জন্য গ্রাহক একটি মোবাইল নম্বর দিয়ে এসএমএস সার্ভিসও চালু করেন। ২০১৬ সালের ৩০ অক্টোবর এসএমএস সার্ভিসের মোবাইল নম্বর পরিবর্তনের জন্য ফেরদৌসী জামানের ‘স্বাক্ষরে’ একটি আবেদন জমা পড়ে, এটি ব্যাংক কর্মকর্তা জাহিদ সারোয়ার স্বাক্ষর ও সিল দিয়ে গ্রহণ করেন।

পরে সেই স্বাক্ষর হস্তলিপি বিশারদ দিয়ে পরীক্ষা করা হয় জানিয়ে এজাহারে বলা হয়, এ স্বাক্ষর ফেরদৌসী জামানের নয়। গ্রামীণ ফোন থেকে পাওয়া তথ্য মতে পরিবর্তিত মোবাইল নম্বরটি জাহিদ সারোয়ারের নামে নিবন্ধন করা।

এরপর ২০১৮ সালের ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে ফেরদৌসী জামানের স্বাক্ষর জাল করে চারটি চেক বই সংগ্রহ করে চেকের পাতায় স্বাক্ষর জাল করে চার কোটি ৯৭ লাখ ৮০ হাজার টাকা আসামি জাহিদ সারোয়ার আত্মসাৎ করেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।

এজাহারে বলা হয়, আত্মসাৎ হওয়া টাকার মধ্যে অপর আসামি ফারহানা হাবিবের মালিকানাধীন আশা ক্রিয়েশনের (প্রতিষ্ঠান) নামে ব্র্যাংক ব্যাংকের বসুন্ধরা শাখার ব্যাংক হিসাবে দুই কোটি ২৪ লাখ টাকা জমা করা হয়। এই টাকাসহ ফারহানা আমেরিকায় চলে যান।

এ ঘটনায় আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ ও ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এবং ২০১২ সালের অর্থ পাচার আইনের ৪(২) ও (৩) অভিযোগ আনা হয়েছে।