ঢাকায় নদীতীরে শতাধিক অননুমোদিত উপাসনালয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

ঢাকা, টঙ্গী ও নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের নিয়ন্ত্রণাধীন বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু, শীতলক্ষ্যা ও ধলেশ্বরী নদীর তীরে অননুমোদিতভাবে ১১৩টি ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Dec 2019, 01:47 PM
Updated : 10 Dec 2019, 01:47 PM

এর মধ্যে যেসব মসজিদ বা ধর্মীয় উপাসনালয় রয়েছে সেগুলো প্রতিস্থাপন করতে একটি কমিটি গঠন করা হবে জানিয়ে সবার সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।

মঙ্গলবার মতিঝিলের বিআইডব্লিউটিএ ভবনে সংশ্লিষ্ট ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি, ইমাম, আলেম ও পুরোহিতদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় প্রতিমন্ত্রী খালিদ এ কথা বলেন।

সভায় জানানো হয়, ঢাকা, টঙ্গী ও নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের তীরভূমিতে ৭৭টি মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা ও মাজার; পাঁচটি কবরস্থান ও মৃতের গোসলখানা, একটি ঈদগাহ, ১৪টি স্কুল ও কলেজ, ১৩টি মন্দির ও শ্মশানঘাট এবং অন্যান্য তিনটি স্থাপনা রয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ধর্মীয় উপাসনালয়গুলো প্রতিস্থাপনের জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয়, ইসলামিক ফাউন্ডেশন এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করে ওই কমিটি করা হবে।

“সরকার সারাদেশে ৫০০ মসজিদ কমপ্লেক্স নির্মাণ করছে। ৫০টি মসজিদ নির্মাণ করা অসম্ভব কোনো বিষয় নয়।  এ লক্ষ্যে একটি প্রকল্পও গ্রহণ করা যায়।”

শুধু ঢাকা নয়, দেশের সব নদী রক্ষা করার ওপর জোর দিয়ে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “যদি নদীগুলোকে রক্ষা করতে না পারি, তাহলে বাংলাদেশকে রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে। আপনাদের সাথে নিয়ে নদীরক্ষায় যুদ্ধ করতে চাই।”

সভায় উপস্থিত ইমাম ও পুরোহিতদের উদ্দেশে প্রতিমনত্রী বলেন, “নদী তীর রক্ষা, দখল ও দূষণরোধে অপসারণ কার্যক্রমের সময় আমরা ধর্মীয় পবিত্র জায়গাগুলোতে হাত দিতে পারতাম, কিন্তু করিনি। পবিত্র ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকে নামাজ আদায়ের জন্য এগুলো করা হয়েছে।

“বায়তুল মোকারম মসজিদের খতিবসহ মুফতি-মাওলানাদের সঙ্গে এসব বিষয়ে আগে বৈঠক হয়েছে। তারা বলেছেন, কোথায় মসজিদ নির্মাণ করা যাবে, আর কোথায় করা যাবে না, মুফতি মাওলানা সাহেবদের পরামর্শ নেওয়া হবে।”  

নদীগুলোর ‘মর্মান্তিক’ অবস্থা দেখলে যে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়বে মন্তব্য করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, নদীগুলোকে রক্ষা করতে, পরিবেশ দূষণমুক্ত করে নদীগুলোকে সুন্দর করতে ‘সামগ্রিক ঐক্য’ দরকার।

“আগামী দশ-বারো বছরের মধ্যে বুড়িগঙ্গার পানি স্বচ্ছ করতে চাই। বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীর তীরভূমিতে সীমানা পিলার, তীররক্ষা, ওয়াকওয়ে ও জেটিসহ আনুষঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণে প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে।”

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবদুস সামাদ, ইসলামী চিন্তাবিদ হাফেজ আবদুর রাজ্জাক এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নেতারাও সভায় বক্তব্য দেন।

অন্যদের মধ্যে বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান এম মাহবুব উল ইসলাম, নৌপুলিশের ডিআইজি আতিকুল ইসলাম, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক সভায় উপস্থিত ছিলেন।