ঢাকা থেকে বাস যাবে দার্জিলিং-সিকিম

ঢাকার ভ্রমণপিপাসুদের সরাসরি বাসে করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য সিকিম ও দার্জিলিং যাওয়ার পথ খুলছে। এই পথে বিআরটিসির বাসের পরীক্ষামূলক যাত্রার জন্য আগামী বৃহস্পতিবার সম্ভাব্য দিনক্ষণ ঠিক হয়েছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Dec 2019, 12:52 PM
Updated : 13 Dec 2019, 11:53 AM

মঙ্গলবার বিআরটিসির চেয়ারম্যান এহসানে এলাহী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পরীক্ষামূলক বাস যাত্রার সবকিছু চূড়ান্ত। সবকিছু ঠিক থাকলে ১২ তারিখ যাত্রা শুরু করবেন তারা।

“আমাদের সব প্রস্তুতি নেওয়া আছে। আশা করছি ১২ তারিখ গিয়ে ১৬ তারিখ ফিরে আসব। তবে কোনো কারণে ১২ তারিখ যেতে না পারলে সময় কিছুটা পেছাবে।”

এই রুটে বিআরটিসির হয়ে বাস পরিচালনা করবে শ্যামলী এন আর পরিবহন।

বৃহস্পতিবার শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত দুটি বাস বিআরটিসির কমলাপুর ডিপো থেকে ছেড়ে যাবে বলে জানিয়েছেন শ্যামলী এন আর ট্রাভেলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শুভঙ্কর ঘোষ রাকেশ জানিয়েছেন।

“১২ তারিখে আমাদের ট্রায়াল রানের দিনক্ষণ ঠিক হয়েছে। আমরা এই রুটে ধারাবাহিকভাবে বাস চালাতে চাচ্ছি। এখানে দুটি রুট- একটি ঢাকা-শিলিগুড়ি-দার্জিলিং, আরেকটি ঢাকা-শিলিগুড়ি-গ্যাংটক (সিকিমের রাজধানী)। ট্রায়াল রানের জন্য আমরা বাংলাবান্ধা সীমান্ত হয়ে যাব। পরবর্তীতে বুড়িমারী বন্দর হয়ে আরেকটা রুটে বাস পরিচালনার চেষ্টা করব।”

তিনি জানান, ১২ ডিসেম্বর দু’টি বাস সিকিম ও দার্জিলিংয়ের পথে রওনা হয়ে পাঁচ দিনের সফর শেষে ১৬ ডিসেম্বর দেশে ফিরে আসবে।

বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর হয়ে সড়ক পথে ঢাকা থেকে গ্যাংটকের দূরত্ব প্রায় ৬৩৪ কিলোমিটার আর বুড়িমারী হয়ে দূরত্ব প্রায় ৫৯০ কিলোমিটার।

জানা গেছে, বাসগুলো বাংলাদেশের সীমানা পেরিয়ে ১২ ডিসেম্বর প্রথমে ভারতের শিলিগুড়ি পৌঁছাবে।

রাকেশ ঘোষ বলেন, “আমরা শিলিগুড়ি থেকে ছোট বাসে করে দার্জিলিং পর্যন্ত যাব। সেখানে এক রাত থেকে পরদিন আমরা শিলিগুড়ির পথে আসব। শিলিগুড়ি থেকে প্রায় ত্রিশ কিলোমিটার আগে তিস্তা ব্যারেজ এলাকায় আমাদের গাড়ি দুটি থাকবে। সেই গাড়ি দিয়ে আমরা সিকিমের রাজধানী গ্যাংটকে যাব।”

ঢাকা থেকে বাসে সিকিম পর্যন্ত যেতে ১৪ থেকে ১৬ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে। এর মধ্যে ঢাকা থেকে বাংলাবান্ধা পর্যন্ত যেতেই লাগবে ১২ ঘণ্টা।

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব চন্দন কুমার দে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ঢাকা থেকে গ্যাংটক পর্যন্ত বাস চালানোর বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত হয়েছে।

“বাংলাদেশে পর্যটন শিল্পের বিকাশ হচ্ছে। প্রচুর মানুষ এখন বেড়াতে যাচ্ছে। নিয়মিত বাস সেবা যদি চালু করা যায় তাহলে এটা সবার জন্যই ভালো হবে। এটা চালু করার আগে সেই পথে গাড়ি চলবে কিনা, চললে কতটুকু পর্যন্ত চলবে- তা দেখার জন্যই এ পরীক্ষামূলক যাত্রা।

“পরীক্ষামূলক যাত্রায় ইতিবাচক ফল এলে দুই দেশের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে যেটা দরকার সেটা করা হবে।”

পরীক্ষামূলক এই সফরে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, বিআরটিসির কর্মকর্তা, সরকারের কয়েকটি দপ্তরের প্রতিনিধি এবং ভারতের প্রতিনিধিরা থাকবেন, সব মিলিয়ে এই দলে প্রায় বিশজন সদস্য থাকবেন বলে জানান এহসানে এলাহী।

দীর্ঘদিন পর গত বছরের নভেম্বরে ভারতের অন্যতম আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্র লাদাখ ও সিকিমের দুয়ার বাংলাদেশি পর্যটকদের জন্য খুলে দেয় ভারত।

সে সময় ঢাকায় ভারতীয় হাই কমিশনের ওয়েবসাইটে নতুন একটি ফরম দেওয়া হয়, যা পূরণ করে লাদাখ বা সিকিম ভ্রমণের অনুমতি চাওয়া যাবে।

তিব্বত, ভুটান, নেপাল ও পশ্চিমবঙ্গ লাগোয়া ক্ষুদ্র ভারতীয় রাজ্য সিকিমে রয়েছে পৃথিবীর তৃতীয় সর্বোচ্চ পর্বত শৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘা।