মিয়ানমারের বিচারে সব সহায়তার ঘোষণা নেদারল্যান্ডস-কানাডার

আন্তর্জাতিক আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা মুসলিম সংখ্যালঘুদের গণহত্যার অভিযোগের ক্ষেত্রে গাম্বিয়াকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে নেদারল্যান্ডস ও কানাডা।

নিজস্ব প্রতিবেদক.বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Dec 2019, 07:25 PM
Updated : 9 Dec 2019, 07:25 PM

সোমবার দুই দেশের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা এবং বিচারহীনতা প্রতিরোধের স্বার্থে গাম্বিয়াকে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করছে কানাডা ও নেদারল্যান্ডস।

নেদারল্যান্ডেসেরই হেগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে (আইসিজে) মঙ্গলবার মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগের শুনানি শুরু হচ্ছে।

রাখাইন রাজ্যে জাতিগত নিধনের উদ্দেশে রোহিঙ্গাদের উপর গণহত্যা ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে মামলা করে আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া।

নেদারল্যান্ডস ও কানাডার বিবৃতিতে বলা হয়, ”গণহত্যা কনভেনশনের মাধ্যমে এর স্বাক্ষরদাতারা গণহত্যার অপরাধ প্রতিরোধ এবং দায়ীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ কারণে সমস্ত মানবতার জন্য উদ্বেগজনক ঘটনা হিসেবে আইসিজে-তে গাম্বিয়াকে সমর্থন দেওয়াকে বাধ্যবাধকতা হিসাবে মনে করছে কানাডা ও নেদারল্যান্ডস।”

২০১৭ সালের ২৫ অগাস্ট রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর বেশ কিছু স্থাপনায় বিদ্রোহীদের’ হামলার পর রোহিঙ্গাদের গ্রামে গ্রামে শুরু হয় সেনাবাহিনীর অভিযান। সেই সঙ্গে শুরু হয় বাংলাদেশ সীমান্তের দিকে রোহিঙ্গাদের ঢল। তাদের কথায় পাওয়া যায় নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ, জ্বালাও-পোড়াওয়ের ভয়াবহ বিবরণ।

জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন বলেছে, রাখাইনে যে ধরনের অপরাধ হয়েছে, আর যেভাবে তা ঘটানো হয়েছে, মাত্রা, ধরন এবং বিস্তৃতির দিক দিয়ে তা ‘গণহত্যার অভিপ্রায়কে’ অন্য কিছু হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টার সমতুল্য।

গত বছর ১৮ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে উপস্থাপন করা ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনে গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য মিয়ানমারের সেনাপ্রধান এবং জ্যেষ্ঠ পাঁচ জেনারেলকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) বা বিশেষ ট্রাইব্যুনাল করে বিচারের মুখোমুখি করার কথা বলা হয়।

মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলামদের ওপর মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগের বিষয়ে হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতও গতবছর প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছে।

এছাড়া জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল একটি আন্তর্জাতিক প্যানেল তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যাদের কাজ হবে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রমাণ সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করা এবং এসব অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের ভবিষ্যতে বিচারের মুখোমুখি করতে মামলার নথি প্রস্তুত করা।

এর মধ্যে ইসলামী দেশগুলোর জোট ওআইসি'র পক্ষে গাম্বিয়া ১১ নভেম্বর মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগ আইসিজে-তে মামলা করে। এর শুনানিতে গাম্বিয়াকে সহযোগিতা করছে বাংলাদেশ।

আদালতে মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি। পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হকের নেতৃত্বে ২০ সদস্যের প্রতিনিধিদল তথ্য উপাত্ত নিয়ে উপস্থিত থাকবেন আদালতে।