নওশাবার মামলার কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ বহাল

ফেইসবুকে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে অভিনেত্রী কাজী নওশাবা আহমেদের বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের বিলুপ্ত ৫৭ ধারায় করা মামলার কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Dec 2019, 07:09 AM
Updated : 8 Dec 2019, 07:14 AM

হাই কোর্টের ছয় মাসের স্থগিতাদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনে রোববার কোনো আদেশ দেয়নি প্রধান বিচারপতির নেতৃত্ত্বাধীন পাঁচ বিচারকের আপিল বেঞ্চ।

ফলে হাই কোর্টের স্থগিতাদেশটিই বহাল আছে বলে জানিয়েছেন নওশাবার আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। 

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “হাই কোর্ট রুল জারির পাশপাশি মামলার কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছিলেন। এই আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করেছিল। আপিল বিভাগ সে আবেদনে সাড়া দেয়নি, নো অর্ডার দিয়েছে। তার মানে মামলার কার‌্যক্রম স্থগিত, হাই কোর্টের আদেশ বহাল আছে।”

এ আইনজীবীর ভাষ্য, ২০১৮ সালের ৫ অগাস্ট তথ্য প্রযুক্তি আইনে নওশাবার বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করা হয়। কিন্তু ওই বছর ৮ অক্টোবর তথ্য প্রযুক্তি আইন বিলুপ্ত করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন কার্যকর করা হয়।

নতুন আইনের ৬১ ধারা মতে, তথ্য প্রযুক্তি আইনের কোনো মামলা বিচারাধীন থাকলে তা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে চলমান থাকবে। কিন্তু এ মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হয় চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল। আর অভিযোগ আমলে নেওয়া হয় ৩ সেপ্টেম্বর। তাই এ মামলার কার্যক্রম অবৈধ।

এ কারণে মামলা বাতিল চেয়ে আবেদন করেন নওশাবা। সে আবেদনের শুনানি করে গত ২০ নভেম্বর বিচারপতি মো. রেজাউল হক ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর হাই কোর্ট বেঞ্চ রুল জারির পাশাপাশি মামলাটির কার্যক্রম  ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে।

কেন ওই মামলার কার্যক্রম বাতিল করা হবে না- রুলে তা জানতে চাওয়া হয়। চার সপ্তাহের মধ্যে সরকারকে তা জানাতে বলা হয়।

এই আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করে। গত ৩ ডিসেম্বর আবেদনটি চেম্বার আদালতে উঠলে চেম্বার বিচারক ৮ ডিসেম্বর আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ।

নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে গত বছর ৪ অগাস্ট রাতে রাজধানীর উত্তরা থেকে নওশাবাকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

ওই দিন আন্দোলনের মধ্যে ঢাকার জিগাতলায় সংঘর্ষ বাঁধলে ফেইসবুকে লাইভে এসে দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু এবং একজনের চোখ তুলে ফেলার ‘খবর’ দেন নওশাবা, যা পরে গুজব প্রমাণিত হয়।

নওশাবাকে গ্রেপ্তার করার পর তার বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলা করে র‌্যাব। ওই মামলায় দুই দফায় মোট ছয়দিন তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এর মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসাও দেওয়া হয়।

পরে গত বছর কোরবানির ঈদের আগে ২১ অগাস্ট জামিনে মুক্তি পান নওশাবা।