ভুল আসা‌মি গ্রেপ্তার, ক্ষমা চে‌য়ে অব্যাহ‌তি পে‌লেন এসআই

নামের মিল থাকায় ভুল ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের দায়ে আদাল‌তে হা‌জিরে হ‌য়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলেন কু‌মিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া থানার উপ-প‌রিদর্শক (এসআই) মামোনুর রশিদ।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Dec 2019, 12:28 PM
Updated : 4 Dec 2019, 12:28 PM

ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান বুধবার এই পুলিশ কর্মকর্তাকে সতর্ক ক‌রে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া থেকে অব্যাহ‌তি দিয়েছেন।  

গত ১১ ন‌ভেম্বর ভুল আসা‌মি মো. রাজন ভূঁইয়া‌কে জা‌মি‌ন ও মামলার দায় থে‌কে অব্যাহ‌তি দেন বিচারক। সে‌দিনই প‌রোয়ানা তা‌মিলকারী এসআই মামোনুর রশিদের বিরু‌দ্ধে পু‌লিশ আই‌ন অনুযায়ী কেন শা‌স্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হ‌বে না, সে মর্মে কারণ দর্শানোর আদেশ দেন তিনি।

ওই আদেশের প্রেক্ষিতে বুধবার আদালতে হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দাখিল করেন এসআই মামোনুর রশিদ। তার আবেদনে বলা হয়, “আমি বিজ্ঞ আদালতের পরোয়ানা মূলে উক্ত আসামিকে সরল বিশ্বাসে গ্রেপ্তার করে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করেছি। আসামিকে গ্রেপ্তারকালে নাম-ঠিকানা যাচাইয়ের জন্য জন্মসনদ বা ভোটার আইডি কার্ড দেখতে চাইলে আসামি বা তার আত্মীয়-স্বজন ভোটার আইডি বা জন্মসনদ উপস্থাপন করতে পারে নাই। পক্ষান্তরে গ্রাম পুলিশ ও ইউপি মেম্বার ধৃত ব্যক্তি হাবিবুল্লাহ রাজন হিসেবে শনাক্ত করে। আমি সরল বিশ্বাসে বিজ্ঞ আদালতের আদেশ পালন করেছি মাত্র।”

ওই আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবু আব্দুল্লাহ ভূঞা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, আদালত এসআই মামোনুর রশিদের কাছে ভুল আসামি গ্রেপ্তরের বিষয়ে জানতে চান। তিনি ভুলের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে আদালতের কাছে ক্ষমা চান। আদালত সতর্ক করে ওই এসআইকে দায় থেকে অব্যাহতি দেন।

একই দিন মামলার প্রকৃত আসা‌মি ছয় বছর পলাতক থাকা মো. হাবিবুল্লাহ রাজন আদাল‌তে আত্মসমর্পণ ক‌রে জা‌মিন চান। আদালত জা‌মিন আবেদন নাকচ ক‌রে তাকে কারাগা‌রে পাঠানোর আদেশ দেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১২ সালের ৯ মে ২৮টি নেশা জাতীয় ইনজেকশনসহ পুলিশের হাতে আটক হন হাবিবুল্লাহ রাজন। এ দিনই তার বিরুদ্ধে রাজধানীর বংশাল থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়। তার বাড়ি কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার গোপালনগরে। তার বাবার নাম মো. আব্দুল মান্নান। মাদক মামলায় গ্রেপ্তরের এক মাসের মধ্যে জামিন পান এই রাজন। এরপর মামলায় অভি‌যোগপত্র দেয় পু‌লিশ।

পরে আদালতে নিয়মিত হাজিরা না দেওয়ায় ২০১৩ সালের ৬ জুন রাজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। ওই পরোয়ানা যায় ব্রাহ্মণপাড়া থানায়। পরে পুলিশ ভুলে গোপালনগরের মৃত আব্দুল মান্নান ভূঁইয়ার ছেলে রাজন ভূঁইয়াকে গত ১৬ অক্টোবর গ্রেপ্তার করে। মূল আসামি রাজনের বয়স বর্তমানে ৩৩ বছর। আর জন্মসনদ অনুযায়ী নির্দোষ রাজনের বয়স ১৯ বছর।