রাজধানীর সেগুনবাগিচায় শুক্রবার দিনভর বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের বর্ধিত সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি জানান, আইনের কোন ধারা সংশোধন করা উচিত তা শনিবার তারা বসে ঠিক করবেন।
ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি শাজাহান বলেন, “আমরা এখনও ধারা নির্ধারণ করিনি। আমরা বলছি, আইনের কোন কোন ধারায় পরিবর্তন আনা উচিত সেটা আমরা কালকে বসে ঠিক করব।
“সড়ক পরিবহন সেক্টরের অন্যান্য যে সমস্যাগুলো রয়েছে, সেগুলো আমরা তুলে ধরব এবং সেগুলো নিয়ে দাবিনামা আমরা সরকারের কাছে পেশ করব।”
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ২৪ নভেম্বর সড়কে শৃঙ্খলার গঠিত টাস্কফোর্সের বৈঠকে বিষয়গুলো তুলে ধরা হবে বলে তিনি জানান।
নতুন সড়ক পরিবহন আইনের কয়েকটি ধারা নিয়ে আপত্তি জানিয়ে বুধবার থেকে ধর্মঘটের ডাক দেয় ট্রাক-কভার্ড ভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ নামে একটি সংগঠন।
অন্যদিকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না দিলেও গত রোববার সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী সড়ক পরিবহন আইন কার্যকরের ঘোষণা দেওয়ার পরদিন হঠাৎ করেই বাস চলাচল বন্ধ করে দেন বিভিন্ন জেলায় পরিবহন শ্রমিকরা। এর ফলে অন্তত ১০টি জেলার সঙ্গে রাজধানীসহ সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ কার্যত চার দিন বন্ধ থাকে।
এই অচলাবস্থা কাটাতে বুধবার রাতে ধানমণ্ডিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাড়িতে বৈঠক ডাকা হয়। তাতে ধর্মঘট আহ্বানকারী ট্রাক-কভার্ড ভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ১০ নেতার পাশাপাশি বাস মালিক সমিতির নেতা খন্দকার এনায়েত উল্লাহও ছিলেন।
ট্রাক ও কভার্ড ভ্যান চলাচলে ধর্মঘটের বিষয়ে শাজাহান খান বলেন, “কেউ কেউ ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করে। তেজগাঁওয়ের ট্রাক চালকদের ইউনিয়ন ফেডারেশনের আওতাভুক্ত নয়। তারা তাদের ইচ্ছেমতো চলে। তার সঙ্গে এসেছে ট্রান্সপোর্ট মালিক সমিতি।
“তারা এখানে যুক্ত হয়েছে তাদের স্বার্থে। শ্রমিকদের বড় স্বার্থ এটা না। সেখানে ছিল যেসব গাড়ি নিয়মের বাইরে তৈরি করা হয়েছে সেগুলো রক্ষা করতে হবে। সেটাই ছিল তাদের মূল দাবি।”
তবে ওই বৈঠকে ট্রাক-কভার্ড ভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের নেতা হিসেবে অংশ নেন তাজুল ইসলাম, যিনি ফেডারেশনের সদস্যভুক্ত আন্তঃজেলা ট্রাক চালক ইউনিয়নের সভাপতি। তাছাড়া জেলাগুলোতে বাস বন্ধ রাখা পরিবহন শ্রমিকরাও ফেডারেশনভুক্ত।
বর্ধিত সভায় সড়কে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর জন্য চালকের বিরুদ্ধে হত্যার আনার আগে ঘটনার তদন্ত কীভাবে হবে সেবিষয়ে আলোচনা হয়েছে শাজাহান খান জানান।
তিনি বলেন, “দুর্ঘটনার তদন্ত বুয়েটের এক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এআরআই) ও পুলিশের যৌথ উদ্যোগে করতে হবে। তাহলে কে দায়ী সেটা বেরিয়ে আসবে। মামলাগুলোকে বিচার বিশ্লেষণ করে চার্জশিট দিতে হবে। সেখানে পথচারী, যাত্রী, রাস্তা, ড্রাইভার নাকি মালিকের পুরানো গাড়ির কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে সেটা দেখতে হবে।”