সড়কের আইন এখন থেকে কার্যকর, হুঁশিয়ারি মন্ত্রীর

শাস্তির বিধান বাড়িয়ে প্রণীত নতুন সড়ক পরিবহন আইন এখন থেকে কার্যকর জানিয়ে সবাইকে সতর্ক করেছেন সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Nov 2019, 10:49 AM
Updated : 17 Nov 2019, 12:11 PM

তিনি বলেছেন, “আইনের বাস্তবায়ন দুই সপ্তাহ আমরা একটু শিথিল করেছিলাম। অনেকে হয়ত জানে না, কোন অপরাধ, কোন বিশৃঙ্খলার জন্য কী শাস্তিটা পেতে হবে। তার জন্য আমি দু সপ্তাহ সময় দিয়েছি। এখন আজকে থেকে আমাদের এই আইন কার্যকর হবে।”

রোববার ঢাকায় আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশে (এআইইউবি) সড়ক নিরাপত্তা আইন ও সড়ক পরিবহন আইন শীর্ষক এক আ‌লোচনা সভায় একথা ব‌লেন তিনি।

গত বছর ঢাকার সড়কে দুই কলেজশিক্ষার্থী বাসেরে নিচে পড়ে মারা যাওয়ার পর নজিরবিহীন আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে শাস্তির মাত্রা বাড়িয়ে প্রণীত নতুন সড়ক পরিবহন আইন চলতি মাসের প্রথম দিন থেকে কাগজে-কলমে কার্যকর হয়। তবে নতুন আইন সম্পর্কে সবাইকে সচেতন করতে দুই সপ্তাহ সময় নিয়েছিলেন মন্ত্রী।

তিনি রোববার বলেন, “রাস্তায় চলতে গেলে শৃঙ্খলা মানতে হবে। ছাত্র ছাত্রীদেরও দেখি, রাস্তা এপার থেকে ওপারে যাচ্ছে মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে। এগুলো মোকাবেলা করে আমাকে চলতে হচ্ছে।

“এখানে অনেক চ্যালেঞ্জ আছে, এই কাজটি অসম্ভবের মতো হয়ে গেছে। কিন্ত অসম্ভবকে আমি ভালবাসি। চ্যালেঞ্জকে ভালবাসতে হবে। সবাইকে বলবো আইন মেনে চলতে।”

নতুন আইন কার্যকরের ক্ষেত্রে যাদের দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি, সেই পুলিশ স্পষ্ট নির্দেশনা না পাওয়ার করা বলছে।

এ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, “মোবাইল কোর্টের ব্যপারে আইনমন্ত্রী গত বৃহস্পতিবার স্বাক্ষর করেছে, আশা করছি, আজকেই গেজেট হয়ে যাবে। এর পরে কার্যকর করতে আর অসুবিধা নেই।”

আগামী ২৪ নভেম্বর এক বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পুলিশকে আইনের প্রয়োগের বিষয়ে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দেবেন বলে জানান সড়ক পরিবহনমন্ত্রী।

আইনে শাস্তির মাত্রা বাড়লেও কার্যকরের ক্ষেত্রে ধাপে ধাপে শাস্তি বাড়ানোর পক্ষপাতি ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, “যারা রাস্তায় কোনো অপরাধ বা অপকর্ম করবে না, তাদের ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। আমরা ভয়টা দেখাব যাতে তারা শাস্তির ভয়টা পেয়ে আইন ভঙ্গ করতে নিরুৎসাহিত হয়।

“এখানে গায়ে পড়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে না। এখানে শাস্তির বিষয়ে প্রথমবারেই বড় জরিমানা হয়ে যাবে, তা না। এমনও হতে পারে অপরাধ কম হলে জরিমানাটা এক হাজার টাকা হবে। আবার এটা বারবার করলে সেখানে জরিমানাটা বাড়বে।”

বিষয়টি পুলিশকেও জানানো হবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, “২৪ তারিখে টাস্কফোর্সের মিটিংয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়, যাতে আইনের যথাযথ প্রয়োগ হয়, এখানে পুলিশ যেন কোনো এগ্রেসিভ মোড না নেয়।”

ভারতের সঙ্গে চুক্তির প্রসঙ্গ

ভারতের সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তি প্রকাশে বিএনপির দাবির  প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, “বিএনপি মহাসচিবকে জিজ্ঞেস করব, তারা যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন তারা বিদেশের কোন চুক্তি সংসদে উত্থাপন করেছেন অথবা সংসদে অনুমোদন নিয়েছে? পার্লামেন্ট কি বিএনপি আমলে কোনো চুক্তির অনুমোদন নিয়েছে?

“জোর গলায় বলতে পারি, বঙ্গবন্ধু শেখ হাসিনা দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দিয়ে কোনো চুক্তি করবেন না। আর চুক্তি যেটা হয়েছে, এটা পরিষ্কার দিবালোকের মতো। চুক্তির মধ্যে গোপনীয়তা বলতে কিছু নেই। চুক্তি কি গোপন করে রাখা যায়?”

বিএনপির সমালোচনার জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক কাদের বলেন, “তাদের তো অভিযোগই হচ্ছে- আওয়ামী লীগ মানে দেশ বিক্রি, গোলামির চুক্তি, বাংলাদেশ ভারতের হয়ে যাবে। এগুলো তারা বলেই আসছে।”

বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতাদের বৈঠক নিয়ে কাদের বলেন, “এটা নতুন কিছু না। বিএনপি আর জামায়েতে ইসলাম উপরে যাই বলুক, তলে তলে এদের গলায় গলায় খাতির। এরা একই বৃন্তে দুটি ফুল। একটিকে ছাড়া আরেকটি চলবে না। তারা জমজ ভাইয়ের মতোই আছে, কাজেই তাদের বিচ্ছিন্ন ভাবার কোনো কারণ নেই।”