জঙ্গি দল আনসার আল ইসলামের ৬ সদস্য গ্রেপ্তার

ঢাকা, গাজীপুর ও সাতক্ষীরায় অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে র‌্যাব।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Nov 2019, 04:39 AM
Updated : 16 Nov 2019, 12:46 PM

শুক্রবার রাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে র‌্যাবের মিডিয়া উইংয়ের সহকারী পরিচালক মিজানুর রহমান জানান।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- শফিকুল ইসলাম ওরফে সাগর ওরফে সালমান মুক্তাদির (২১), ইলিয়াস হওলাদার ওরফে খাত্তাব (৩২), ইকরামুল ইসলাম ওরফে আমীর হামজা (২১), আমীর হোসাইন (২৬), শিপন মীর ওরফে আব্দুর রব (৩৩), মাওলানা ওয়ালিউল্লাহ ওরফে আব্দুর রহমান (২৫)।

পরে এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব- ৪ অধিনায়ক মোজাম্মেল হক বলেন, শুক্রবার রাত থেকে ভোর পর্যন্ত ঢাকার উত্তরা, গাজীপুর ও সাতক্ষীরায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

তিনি বলেন, এই জঙ্গিরা তাদের কর্মকাণ্ড, প্রশিক্ষণ ও করণীয় নিয়ে নিজেদের মধ্যে অনলাইনে যোগাযোগ করে আসছিল। তবে কোন নাশকতার পরিকল্পনা, প্রশিক্ষণ, গোপনীয় তথ্য সরবরাহ ও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে সরাসরি দেখা করে পরিকল্পনা গ্রহণ করে।

এবার একত্রিত হওয়ার পরিকল্পনার আগেই র‌্যাব তাদের গ্রেপ্তার করে ফেলে বলে জানান মোজাম্মেল।

তাদের কাছ থেকে মোবাইল ও ল্যাপটপ ছাড়াও আনসার আল ইসলামের বিভিন্ন ধরনের উগ্রবাদী বই, লিফলেট পাওয়া যায় বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

গ্রেপ্তার সালমান মুক্তাদির র‌্যাবকে জানিয়েছেন, তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে শেষ বর্ষে পড়ছেন। গ্রেপ্তার খাত্তাবের মাধ্যমে আনসার আল ইসলামে জড়িত পড়েন তিনি।

ইলিয়াস অনলাইনে ‘খাত্তাব’ নাম নিয়ে জঙ্গি সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন বলে র‌্যাব কর্মকর্তারা জানান। তারা বলেন, গাড়িচালক ইলিয়াস আগে হরকাতুল জিহাদে যুক্ত ছিল।

র‌্যাব কর্মকর্তা মোজাম্মেল বলেন, ইকরামুল ইসলামের সাংগঠনিক নাম ‘আমীর হামজা’। তিনি বর্তমানে একটি মোবাইল কোম্পানির টাওয়ারে জেনারেটর অপারেটর।

আমীর হোসাইন তার সংগঠনে ‘তাওহিদী জনতার আর্তনাদ’ নামে পরিচিত। এই নামে তার ফেইসবুক পেইজ আছে। এসব পাতার মাধ্যমে তিনি বিভিন্ন ধরনের নির্দেশনা ও উস্কানিমূলক স্ট্যাটাস দিয়ে আসছিলেন বলে জানায় র‌্যাব।

মোজাম্মেল বলেন, “সাতক্ষীরার একটি মাদ্রাসা থেকে হাফেজি সম্পন্ন করে আমীর হোসাইন। জসিমউদ্দিন রাহমানীর বিভিন্ন রকম জঙ্গিবাদি আলোচনা তাকে আকৃষ্ট করত।

“রাহমানী গ্রেপ্তার হওয়ার পর অনলাইনে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সাথে যুক্ত হওয়ার চেষ্টা করে আমীর। একপর্যায়ে ইলিয়াস ওরফে খাত্তাবের সাথে তার পরিচয় হয়। এরপরই সে সংগঠনের সক্রিয় সদস্য হয়ে উঠলে সাতক্ষীরা জেলার আনসারুল ইসলামের প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়।”

শিপন মীর প্রায় তিন বছর ধরে আনসার আল ইসলামে জড়িত বলে র‌্যাব জানিয়েছে।

ওয়ালিউল্লাহর সাংগঠনিক নাম আব্দুর রহমান। তিনি সূত্রাপুরের একটি মাদ্রাসা থেকে দাওরায়ে হাদিস পাস করে ২০১৮ সালে তাহফিজুল কুরআন- দারুল কুরআন ওয়াজ সুন্নাহ্ হাফিজিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষকতা শুরু করে। ২০১৬ সালে সূত্রাপুর মাদ্রাসায় থাকাকালে তিনি জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়েন বলে র‌্যাবের ভাষ্য।

র‌্যাব কর্মকর্তা মোজাম্মেল বলেন, “তাদের কাছ থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। সে ব্যাপারে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”