জননাঙ্গ কর্তন: স্ত্রীসহ তিনজনের যাবজ্জীবন

খুলনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সাবেক এক শিক্ষার্থীর জননাঙ্গ শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করার ঘটনায় তার স্ত্রীসহ তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন ঢাকার একজন অতিরিক্ত  মহানগর দায়রা জজ।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Nov 2019, 07:34 PM
Updated : 14 Nov 2019, 07:34 PM
বৃহস্পতিবার ঢাকার পঞ্চম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. ইকবাল হোসেন এই রায় দেন।

এ মামলা পরিচালনাকারী রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ আলমগীর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এই তিজনকে দণ্ডবিধির ৩২৬ ও ৩৬৪ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়। এর মধ্যে ৩২৬ ধারায় প্রত্যেককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

আর ৩৬৪ ধারায় প্রত্যেককে ১০ বছর কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেন বিচারক।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- খুলনা জেলার খালিশপুর থানার মুজগুন্নি এলাকার মৃত মুনসুর মল্লিকের মেয়ে শিউলি বেগম, একই উপজেলার সুরনগর গ্রামের মৃত রফিক উদ্দিন মোল্লার ছেলে তুষার মোল্লা ওরফে তুষার এবং একই জেলার রূপসা থানার মেহেষগুণ গ্রামের দ্বীন ইসলাম ইজারাদারের ছেলে মেহেদি হাসান। পলাতক মেহেদি ছাড়া রায় ঘোষণার সময় বাকি দুজন এজলাসে উপস্থিত ছিলেন।

আদালত সাজা পরোয়ানা মূলে উপস্থিত দুই আসামিকে জেলাহাজতে পাঠান এবং পলাতক আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

রায়ের বিবরণে বলা হয়, খুলনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে পড়াশুনাকালে শিউলি বেগমের সঙ্গে পরিচয় হয় ভুক্তভোগী হাসিবুর রহিম হাসিবের। সেই সূত্র ধরে তাদের মধ্যে ১০ লাখ টাকা কাবিনে বিয়েও হয়। ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর বিয়ের পর স্ত্রী শিউলির মাধ্যমে হাসিবকে বাড়ি থেকে ডেকে কৌশলে অপহরণ করে নিয়ে যায় আসামিরা।

পরবর্তীতে ১৯ ডিসেম্বরের মধ্যে কোনো এক সময় অজ্ঞাত স্থানে হাসিবকে আসামি মেহেদি ও তুষার মাটিতে ফেলে দেয়। আর শিউলি তার জননাঙ্গ কেটে শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। এরপর তাকে হত্যার উদ্দেশে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করে তারা ফেলে রাখে। তার কাছ থেকে মটরসাইকেল ও নগদ অর্থ নিয়ে আসামিরা পালিয়ে যায়। অজ্ঞাত ব্যক্তিরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।

এই ঘটনায় হাসিবের বাবা ফজলুর রহমান ওরফে খোকন বাদী হয়ে ২০১৩ সালের ২৪ ডিসেম্বর উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় পরে পুলিশ অভিযোগপত্র দাখিল করে। ২০১৫ সালের ১১ নভেম্বর এই মামলায় চার্জ গঠনের মাধ্যমে বিচার কাজ শুরু হয়। চার বছর বিচার চলাকালে নয়জন সাক্ষীর মধ্যে সাতজন আদালতে সাক্ষ্য দেন।