দুদকের কার্যালয়ে মামলা দায়েরের বৈধতা চ্যালেঞ্জ

থানার পরিবর্তে দুদক কার্যালয়ে এজাহার দায়ের এবং ওই এজাহারের ভিত্তিতে তদন্ত করার ক্ষমতা চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে আবেদন হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Nov 2019, 02:54 PM
Updated : 13 Nov 2019, 02:55 PM

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুবীর নন্দী দাস ও নওশীন নাওয়াল বুধবার এই রিট আবেদনটি করেন।

এতে দুর্নীতি দমন কমিশন বিধিমালা-২০০৭ (সংশোধনী ২০১৯) এর ১(২)(ঘঘ)(ছ), ৪, ৯ (ক), ১০ নম্বর বিধি ও ফরম-২খ কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, সে মর্মে রুল চাওয়া হয়েছে।

আবেদনে আইন, স্বরাষ্ট্র ও সংসদ সচিবালয়ের সচিব, দুদক চেয়ারম্যান, পুলিশের মহাপরিদর্শক ও দুদক সচিবকে বিবাদী করা হয়েছে।

সুবীর নন্দী দাস সাংবাদিকদের বলেন, দুদকের সংশোধিত বিধিমালার ওই বিধি সংবিধানের ৩১, ৬৫ (১) অনুচ্ছেদ এবং ফৌজদারি কার্যবিধির ১৫৪ ধারার পরিপন্থি।

তিনি বলেন, “ফৌজদারি কার্যবিধির ১৫৪ ধারা অনুযায়ী যে কোনো ব্যক্তির অভিযোগ থানা রেকর্ড করতে বাধ্য। কিন্তু দুদকের ওই বিধিমালার কারণে এখন আর থানা দুর্নীতির বিষয়ে অভিযোগ বা সরাসরি মামলা রেকর্ড করতে পারছে না। কোনো অভিযোগ শুধু সাধারণ (জিডি) হিসেবে গ্রহণ করতে পারে। পরে সে অভিযোগ(জিডি) থানা পাঠিয়ে দেয় দুদকে। সে জিডির ভিত্তিতে দুদক চাইলে অনুসন্ধান বা তদন্ত করে মামলা করে।”

দুদক নিজেই মামলা করার ক্ষমতা সংক্রান্ত বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন বিধিমালা-২০০৭ সংশোধন করে গত ২০ জুন গেজেট জারি করে।

এই বিধিমালার ৪ নম্বর বিধিতে বলা হয়েছে, “এই বিধিতে যাহা কিছুই থাকুক না কেন আইনের তফসিলে উল্লিখিত কোনো অপরাধ সংক্রান্ত বিষয়ে থানায় অভিযোগ দায়েরের ক্ষেত্রে কোনো বাধা থাকিবে না, তবে সংশ্লিষ্ট থানা উক্ত অভিযোগটি প্রাপ্তির পর উহা রেজিস্ট্রিারভূক্ত করিয়া অনধিক দুই কার্যদিবসের মধ্যে আইন অনুযায়ী তদন্তকার্য পরিচালনার জন্য উহা কমিশনবহির্ভূত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ক্ষেত্রে নিকটস্থ জেলা কার্যালয়ে এবং কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ক্ষেত্রে কমিশন বরাবরে প্রেরণ করিবে।”

আর ১০ নম্বর বিধিতে দুদককে তদন্ত করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গত ২০ জুনের পর থেকে দুদককে আর থানায় এজাহার দায়ের করতে হচ্ছে না। আইন এবং বিধি অনুসরণ করে নিজ কার্যালয়েই তা করা হচ্ছে।”

সুবীর দাস দাবি করেন, সংশোধিত এই বিধিমালার মাধ্যমে ফৌজদারি কার্যবিধিতে একজন নাগরিককে দেওয়া ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছে। সাধারণ মানুষের মামলা করার ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার হাই কোর্ট বেঞ্চে রিট আবেদনটি উপস্থাপন করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।