নামসর্বস্ব ওষুধ কোম্পানিকে কেন্দ্র করে ব্যাঙের ছাতার মতো ক্লিনিক: প্রতিমন্ত্রী

তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান দাবি করেছেন, দেশে নামসর্বস্ব কিছু ওষুধ কোম্পানিকে কেন্দ্র করে ‘ব্যাঙের ছাতার’ মতো প্রাইভেট ক্লিনিক গড়ে উঠেছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Nov 2019, 02:37 PM
Updated : 13 Nov 2019, 02:37 PM

এগুলো বন্ধে সরকারকে সহায়তা করতে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষে ‘ডায়াবেটিসের ভয়াবহতা ও প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সাবেক স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ।

তিনি বলেন, “আমাদের দেশে এমন কিছু ফার্মাসিউটিক্যালস আছে নামসর্বস্ব, এদের ওষুধ মোটেও মানের ধারে-কাছে নাই। শুধু তাই না এসব ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানিকে ইস্যু করে কিছু প্রাইভেট ক্লিনিক যত্রতত্র ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে।”

এগুলোর উপর সরকারের নজরদারি থাকলেও সরকার ‘একা পেরে উঠছে না’ বলে সবার সহযোগিতা চান তিনি।

দেশে চিকিৎসা গ্রহণের অবকাঠামোগত ব্যবস্থা যথেষ্ট মনে করলেও সঠিক চিকিৎসা পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে পেশায় চিকিৎসক মুরাদ হাসানের মণে।

“দোকানে যে ওষুধ বেচে, সে জীবনেও কোনো পড়াশোনা করেনি। ওর কয়েক হাজার টাকা আছে হয়ত, দোকান খুলে বসেছে। ওর কাছে গিয়ে মানুষ বলছে- ডাক্তার সাব কী ওষুধ দিবেন দেন। সে জিজ্ঞাস করলো কত টাকা নিয়ে এসেছেন? ১০ টাকা? তারপর ওষুধ দেওয়া হলো, সেটা কোন কোম্পানির ওষুধ তাও বোঝে না।”

সরকার জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে স্বাস্থ্য বীমা নিয়ে সরকারের এগোতে চাইছে বলে জানান তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ।

“সরকার পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ এ তিনটি জেলায় শুরুও করেছিল। কিন্তু এই প্রজেক্ট ফেল মেরেছে। এই ফেল মারলে চলছে না। এটা শুরু করতে হবে।”

ডায়াবেটিস সম্পর্কে ডা. মুরাদ বলেন, “ডায়াবেটিস হওয়ার কারণে অন্যান্য অনেকে জটিল অসুখ হয়ে থাকে। কিডনি রোগ হয়, হার্টের সমস্যা, স্ট্রোক হয়ে থাকে এ কারণে। ডায়াবেটিস অন্যান্য রোগকে বৃদ্ধি করে। এই রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। এই জন্য নিয়মের মধ্যে জীবন-যাপন করতে হবে।”

পরিবেশ বাচাঁও আন্দোলন (পবা), ৭১ ফাউন্ডেশন ও ডক্টরস ফর হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট যৌথভাবে এ আলোচনা অনুষ্ঠান আয়োজন করে।

৭১ ফাউন্ডেশনের সভাপতি ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ ডা. খালেদ শওকত আলী বলেন, “বিশ্বে প্রতি আট সেকেন্ডে আটজন ডায়াবেটিস রোগী মারা যায়। এটা একটা মহামারী রোগ। এর বিরুদ্ধে সকলে মিলে যুদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।”

তিনি বলেন, “বাংলাদেশে প্রায় ৯০ লাখ মানুষ ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত। প্রতিটি ডায়াবেটিস রোগীর জন্য মাসে অন্তত দুই হাজার টাকার ওষুধ লাগে। সেই হিসেবে বছরে প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে ডায়াবেটিস রোগের চিকিৎসার পেছনে।”

ডায়াবেটিস রোগ নির্ণয় ও নিয়ন্ত্রণে এই বিষয়ে শিক্ষা নিয়ে সচেতন হওয়ার প্রতি জোর দিয়েছেন এই চিকিৎসক।

পবার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. লেলিন চৌধুরী ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রণে জাতীয়ভাবে একটা কর্মসূচি নিতে সরকারকে আহ্বান জানান।

পবার সভাপতি আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বারডেম হাসপাতালের চিকিৎসক মুহাম্মদ আবু সাঈদ, পবার সাধারণ সম্পাদক আবদুস সোবহান।